নাটোরের ওয়ালিয়া-লালপুর সড়কে পদে পদে ভোগান্তি

আশিকুর রহমান টুটুল, লালপুর
দীর্ঘদীন সংস্কার না করায় এমনিতেই চলাচল অনুোপযোগী নাটোরের লালপুর উপজেলার ওয়ালিয়া-লালপুর সড়কটির ১৫ কিলোমিটার রাস্তা। তার উপর কয়েকদিনের বর্ষণে সড়কজুড়ে অসংখ্য খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। প্রয়োজনের তাগিদে খানাখন্দের ভরা এই সড়কে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছে শতশত যানবাহন।

জানা যায়, উপজেলার একমাত্র শিল্পকারখানা নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস, লালপুর উপজেলা পরিষদ, লালপুর থানা, লালপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, লালপুর ফায়ার সার্ভিস, গোপালপুর পৌরসভা, লালপুর যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও লালপুর স্টেডিয়ামে যাওয়ার একমাত্র পথ এই সড়কটি। প্রতিদিন সরকারী-বেসরকারী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার প্রায় লক্ষাধিক মানুষ এই সড়কটি দিয়ে চলাচল করে থাকে। দীর্ঘদিন সড়কটি সংস্কার না করায় সড়কের বড় বড় গর্তগুলোতে সম্প্রতি বৃষ্টির পানি জমে দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। সাময়িক ভোগাস্তি লাঘবে সড়ক ও জনপথ বিভাগের গাড়ী এসে কিছু ভাঙ্গা স্থানে ইট-বালি ও খোয়া ফেলে যায়। পরেরবার বৃষ্টি হলে আবার তা উঠে যায়।

সম্প্রতি সড়কের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখা যায়, স্থানীয় ভুঁইয়াপাড়া ব্রিজের সামনে সৃষ্টি হোয়া একটি বড় গর্তে আটকা পড়েছে একটি মালবাহি ট্রাক। এতে কয়েক ঘন্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিলো। ফলে প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে দীর্ঘ জানজটের সৃষ্টি হয়। এছাড়াও ওয়ালিয়া-লালপুর সড়কটির ওয়ালিয়া থেকে গোপালপুর পর্যন্ত ৭ কিলোমিটারের মধ্যে শতাধিক বড়-বড় খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। এ পথেও যানবাহনগুলোকে হেলে-দুলে চলতে দেখা গেছে। একই চিত্র গোপালপুর রেলগেট থেকে লালপুর ত্রীমহনি মোড় পর্যস্ত। এছাড়াও সড়কটির দিয়াড়ারপাড়া, চকনাজিরপুর, ভূঁইয়াপাড়াসহ মোট ৫টি স্থানে এক কিলোমিটার পাকা সড়কের উপরে ইটের হ্যারিংবন্ড তৈরী করা আছে।

ট্রাক চালক আহমদ আলী, দুলাল ঘোষ ও জালাল উদ্দিন জানান, তারা একযুগেরও বেশি সময় ধরে এ পথে পণ্য আনা-নেওয়া করেন। তবে কখনো রাস্তাটির পরিপূর্ণ সংস্কার তাদের চোখে পড়েনি। এখন বৃষ্টি হলেই গর্তগুলিতে পানি জমে থাকে। বোঝা যায় না কোথায় গর্ত আছে, ফলে গাড়ির চাকা গর্তে আটকে যায়।

আটোরিক্সা চালক আমজাদ হোসেন বলেন, নতুন পুরাতন নেই, এই রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলালেই নষ্ট হয়ে যায়।

পথচারী আজিজুল ও সানোয়ার বলেন, ‘শুধু প্রয়োজনের তাগিদে বাধ্য হয়ে এ রাস্তায় চলাচল করি। সরকার যায়, সরকার আসে রাস্তার চেহারা বদলায় না। সবচেয়ে বেশি কষ্ট প্রসূতী ও অসুস্থ রোগীদের এই পথে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া।

ওয়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান মাস্টার বলেন, ওয়ালিয়াবাসীর প্রানের দাবি এখন সড়কটির সংস্কার। কৃষিপ্রদান এই এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতকরণে সরকারের কাছে দাবী জানাচ্ছি।

এ ব্যাপারে নাটোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এ, এইচ,এম, জাবেদ হোসেন তালুকদার বলেন, সকল রাস্তাই মেইনটেনেন্সের কাজ চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় ওয়ালিয়া-লালপুর ১৫ কিলোমিটার সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। বর্ষা মৌসুম পার হলেই ভোগান্তি কমে যাবে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *