লালপুরের যুবলীগ নেতা খায়রুল হত্যা মামলায় ১৩ জামায়াত-শিবির কর্মীর যাবজ্জীবন

নাটোর অিফস॥
নাটোর লালপুরের চাঞ্চল্যকর যুবলীগ নেতা খায়রুল বাশার হত্যা মামলায় জামায়াত-শিবিরের ১৩ নেতাকর্মীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেককে জরিমানা করা হয়েছে ২০ হাজার টাকা। অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড। একই মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অপর ৫৪ জন আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
l
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুর পৌনে ১টার দিকে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মো. মহিদুজ্জামান লালপুরের খায়রুল বাশার হত্যা মামলার এ রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, লালপুর উপজেলার পুকুরপাড়া চিলান গ্রামের সেকেন্দারের ছেলে করিম, বানু সরদারের ছেলে মতি সরদার, পুকুরপাড়া চিলান গ্রামের কুদ্দুস প্রাং এর ছেলে সানা প্রাং, কদিমচিলান গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে আবুল কালাম আজাদ প্রিন্স, পুকুরপাড়া চিলান গ্রামের তৈয়ব সরদারের ছেলে মকলেছ সরদার, মকলেছ সরদারের ছেলে মহসিন সরদার, সেকেন্দারের ছেলে খলিল, রুস্তম আলীর ছেলে রানা, ফরজের ছেলে আনিসুর, লুৎফর প্রাংয়ের ছেলে রাজ্জাক, শাহজাহানের ছেলে জার্জিস, কদিমচিলান গ্রামের আন্দারুর ছেলে কালাম, মাজদারের ছেলে মিজানুর রহমান ।দন্ডপ্রাপ্ত সকলেই জামায়াত-শিবিরকর্মী এবং তারা সবাই বর্তমানে পলাতক।
তাদের সবার বিরুদ্ধে আনিত পেনাল কোডের (দণ্ডবিধির) ১৮৬০ এর ১৪৯ ও ৩০২ ধারার অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। এর দায়ে তাদেরকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তাই রায়ে এই ১৩ আসামিকেই যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা দেওয়া হয়েছে। অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ১৩ জন আসামিই পলাতক রয়েছেন। তাই তাদের নামে সাজামূলে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যু করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া দণ্ডিত আসামিদের কেউ এই মামলার সংশ্রবে হাজতবাস করে থাকলে তা মূল সাজা থেকে বাদ যাবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। আর দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের জামিনদারদের কাছ থেকে জামানতের অর্থ আদায়ের জন্য ফৌজদাইর কার্যবিধির ৫১৪ ধারার কার্যক্রম শুরু করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে মামলার ঘোষিত রায়ে।
রায় ঘোষণার পর রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট এন্তাজুল হক বাবু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ২০১৩ সালে দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর রায়ের পর নাটোরের লালপুর উপেজলার কদিমচিলান গ্রামের যুবলীগ নেতা খায়রুলকে কুপিয়ে হত্যা করে জামায়াত-শিবির কর্মীরা। দীর্ঘ ১০ বছর পর সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে আজ মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক।
রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট এন্তাজুল হক বাবু সাংবািদকেদর বলেন, এই মামলার মোট আসামি ছিলেন ৬৭ জন। এর মধ্যে তিনজন মারা যাওয়ায় তারা এমনিতেই খালাস। বাকি ছিলেন ৬৪ জন। এর মধ্যে ১৩ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তাই খালাসের মোট সংখ্যা ৫৪ জন।
২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জামায়াত নেতা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর স্থানীয় জামায়াত-শিবির কর্মীরা নাটোরের লালপুর উপজেলার কদমচিলান ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খায়রুল বাশারের বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় ওই এলাকার কয়েকটি বাড়ি ও পুলিশের গাড়িতে ভাংচুর,অগ্নিসংযোগ ও অস্ত্র লুট করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *