নাটোরে কলেজ অধ্যক্ষের পক্ষে স্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন,এলাকাবাসীর মানববন্ধন

নাটোর অফিস ॥
নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার মাধনগর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের অধ্যক্ষ নয়ন চন্দ্র প্রামানিককে নির্দোষ দাবী করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার স্ত্রী ও সহকর্মী কলেজ শিক্ষক বীথিকা সরকার। শুক্রবার সকাল ১১টায় নাটোর শহরের একটি রেস্তোরায় অধ্যক্ষ নয়ন চন্দ্র প্রামানিককের উপস্থিতিতে এই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য সহ সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন বীথিকা সরকার। অপরদিকে একই সময়ে অধ্যক্ষ নয়ন চন্দ্র প্রামানিকের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে অধ্যক্ষকে চাকুরী থেকে বহিস্কারের দাবীতে নলডাঙ্গা উপজেলার মাধনগর রেল স্টেশন সংলগ্ন কলেজের সামনে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। মাধনগর ইউনিয়নবাসীর ব্যানারে এই মানববন্ধন করা হয়েছে। এর আগে অধ্যক্ষ নয়ন চন্দ্র প্রামানিককে শিক্ষক নিয়োগের নামে প্রতারণার মামলায় পুলিশ  তাকে গ্রেফতার করে। ওই মামলায় একদিন কারাভোগ করার পর জামিনে ছাড়া পান অধ্যক্ষ নয়ন চন্দ্র প্রামানিক।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অধ্যক্ষের স্ত্রী বিথীকা সরকার বলেন, জাল ও ভূয়া সনদ থেকে বাঁচতে প্রভাষক মোজ্জাম্মেল হক হয়রানিমূলক ও ভিত্তিহীন এবং কলেজের সুনাম নষ্ট করতে মাধনগর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের অধ্যক্ষ নয়ন চন্দ্র প্রামাণিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছেন। তিনি বলেন, গত ১৩ নভেম্বর ২০১১ সালে কলেজের পদে সরকার এমপিও ভূক্তির জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু প্রভাষক মোজ্জাম্মেল হক তাঁর কাগজপত্র পারিবারিক সমস্যার কথা বলে দাখিল করে না। পরবর্তীতে তিনি গত ৩ সেপ্টেম্বর তাঁর কাগজপত্র ও সনদ দাখিল করেন। কিন্তু তাঁর সেই কাগজপত্র এবং নিবন্ধন সনদ এনটিআরসিএ জাল ও ভুয়া প্রেরণ করেন। পরে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে তাঁর বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করার নির্দেশ দেন। সেই কারণে প্রভাষক মোজ্জাম্মেল হক নিজেকে বাঁচানোর জন্য অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে হয়রানি ও মানহানির এবং কলেজের সুনাম নষ্টর করতে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলা দায়ের করেন।   বীথিকা সরকার দাবী করেন, তার স্বামীর বিরুদ্ধে ২০ লাখ নিয়ে প্রতারনার অভিযোগে মামলা দায়েরকারী নাটোর সদরের সাধুপাড়ার আয়েজ উদ্দীনের ছেলে মোজ্জাম্মেল হক কলেজে প্রভাষক পদে চাকুরী দেয়ার জন্য কোন টাকা দেননি। ওই শিক্ষকের একটি সনদ জাল থাকায় অধ্যক্ষ তার বেতন করতে পারেননি বলে তিনি দাবী করেন।মিথ্যা মামলা করে তার স্বামী অধ্যক্ষ নয়ন চন্দ্র প্রামানিককে হয়রানিসহ তার মান ক্ষুন্ন করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত ৯ নভেম্বর নাটোর আমলি আদালতে অধ্যক্ষ নয়ন চন্দ্র প্রামাণিকের বিরুদ্ধে প্রতারণা করে ২০ লাখ টাকা আত্মসাতের একটি মামলা দায়ের করেন প্রভাষক মোজ্জাম্মেল হক। পরে সোমবার রাতে অধ্যক্ষ নয়ন চন্দ্র প্রামাণিককে তাঁর নিজ বাসা থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পরে দিন বিকেলে অধ্যক্ষকে নাটোরের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রওশন আলমের আদালতে হাজির করা হলে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। একদিন কারাভোগ করার পর জামিনে ছাড়া পান অধ্যক্ষ নয়ন চন্দ্র প্রামানিক।
এদিকে শুক্রবার একই সময়ে কলেজের সামনে মাধনগর রেলষ্টেশন এলাকায় অধ্যক্ষ নয়ন চন্দ্রকে চাকুরী থেকে বহিস্কারের দাবীতে মাধনগর ইউনিয়নবাসীর ব্যানারে মানববন্ধন করা হয়েছে। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, মাধনগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম সঞ্চয়, ইউপি সদস্য মোস্তাফিজুর রহমানর, মাধনগর ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন মৃধা, যুগ্ম সম্পাদক সাইদুর রহমান টুকু, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শামীম হোসেন ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ আপন প্রমুখ। বক্তারা বলেন, অধ্যক্ষ নয়ন চন্দ্র কলেজে নিয়োগসহ নানা দূর্নীতি করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন। শহরের তেবাড়িয়ায় বহুতল ভবণ নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন। তাকে দ্রুত অধ্যক্ষের পদ থেকে অপসারনের জন্য মানববন্ধনে দাবী জানানো হয়।
অপরদিকে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরকারী প্রভাষক মোজাম্মেল হক দাবী করেছেন, তিনি অধ্যক্ষকে দুইবারে নগদ ২০ লাখ টাকা প্রদান করেছেন। তিনি বলেন, তার কোন সনদ জাল নয়, বীথিকা সরকার একই সাথে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা এবং এই কলেজে চাকুরী করছিলেন, এই বিষয়সহ অধ্যক্ষের দূনীতি নিয়ে তিনি মুখ খুললে তারা উভয়ে মিলে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *