চাঁদা না দেয়ায় কবরস্থানে দাফন হয়নি গৃহবধুর লাশ

নাটোর অফিস ॥
নাটোরের বড়াইগ্রামের লক্ষীপুর গ্রামে কবরস্থানের সদস্য চাঁদা দিতে না পারায় সামাজিক কবরস্থানে জেসমিন বেগম (৩২) নামে এক গৃহবধুর লাশ দাফন করতে দেয়া হয়নি। কবর খননের পরও কবর স্থানে দাফন করতে না দেয়ায় বাড়ির ভিটার এক পাশে মেয়ের লাশ দাফন করেন লোকমান হোসেন। ওই গৃহবধু গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেন। মৃত জেসমিন বেগম উপজেলার গোয়ালফা গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী সমজান আলীর স্ত্রী। লক্ষীপুর গ্রামের বাপের বাড়িতেই আত্মহত্যা করেন জেসমিন বেগম। এদিকে কমিটির চাহিদা অনুযায়ী চাঁদা দিতে না পারায় সামাজিক কবরস্থানে দাফন করতে না দেয়ায় এলাকাবাসীদের মাঝে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এলাকাবাসী ও মৃতের পারিবারিক সুত্রে জানাযায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে পারিবারিক কলহের কারনে জেসমিন গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেন। শুক্রবার তার লাশ দাফনের জন্য স্থানীয় কবরস্থানে কমিটির অনুমতি নিয়ে কবর খনন করা হয়। জুম্মা নামাজের পর জানাজা নামাজের স্থান ও সময় নির্ধারন করা হয়। কিন্তু খনন কাজ শেষ হলে কবরস্থান কমিটির লোকজন ইতিপূর্বে সদস্য না হওয়ায় জেসমিনের বাবার কাছে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। সেই টাকা দিতে না পারায় সামাজিক গোরস্থানে খনন করা কবরে দাফন করতে বাধা দেন তারা। এসময় দেন দরবার করেও শেষ পযন্ত কবর দেয়া যায়নি ওই কবরস্থানে। ফলে বাধ্য হয়ে বাড়ির পাশের ভিটায় নতুন করে কবর খুড়ে জেসমিনের মৃতদেহ দাফন করা হয়।
নিহত জেসমিনের চাচা আব্দুর রাজ্জাক জানান, আমার ভাই কবরস্থানের সদস্য হননি। কিন্তু আমি ইে কবরস্থানের একজন সদস্য। আমি কমিটির চাহিদামত চাঁদা দেয়ার জন্য কয়েকদিন সময় চেয়ে সভাপতিসহ অন্যদের কাছে লাশ দাফনের অনুমতি দিতে অনুরোধ করি। কিন্তু তারা আমাদের কোনো কথা শোনেননি।
কবরস্থান পরিচালনা কমিটির সভাপতি জালাল উদ্দিন বলেন, ‘কবরস্থানে লাশ দাফন করতে না দেয়ার পেছনে কিছু কারণ রয়েছে। নিহতের বাবা আমাদের গোরস্থানের সদস্য না। তারপরে নিহতের বাবা আগের যেই গোরস্থানের সদস্য ছিলেন সেখানেও বিষ খেয়ে মারা যাওয়ার কারণে দাফন করতে দেয়নি। আমাদের গোরস্থানে খবর খননের আগে কাউকে জানায়নি তারা। পরবর্তীতে আমাদের গোরস্থানের সকল সদস্য বাদী হলে আমি একটা সমাধান দেই যে, নির্ধারিত সদস্য চাঁদা দিয়ে গোরস্থানের সদস্য হতে। নিহতের বাবা গোরস্থানের সদস্য না হয়ে পরবর্তীতে তাদের বাড়ির পাশে তার মেয়ের লাশ দাফন করেছেন।
বড়াইগ্রাম থানার ওসি শফিউল আযম খান জানান, এবিষয়ে পুলিশকে জানাননি কেউ। বিষয়টি জানতে এলাকায় পুলিশ পাঠানো হচ্ছে। তদন্ত করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *