আমাদের ক্ষমতা আছে আমরা চুরি করেছি

নাটোর অফিস॥
নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ট্যাব বিতরণে অনিয়মের প্রতিবাদ করায় প্রতিবাদকারীর ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে সহকারী শিক্ষক মোঃ আকরামুল ইসলাম বলেছেন,‘আমাদের চুরি করার ক্ষমতা আছে চুরি করেছি, আমাদের ছেলে মেয়েদের ট্যাব দিয়েছি,তাতে আপনার কি?’ এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও মুহুর্তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। শুক্রবার সকাল আনুমানিক ১০টার সময় এ ঘটনা ঘটে নাজিরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ নিন্দা জানিয়েছেন। আকরামুল ইসলাম গোপিনাথপুর গ্রামের মৃত সোহরাব হোসেনের ছেলে। তিনি ওই বিদ্যালয়ে ২০০৪ সাল থেকে সহকারী শিক্ষক (বাণিজ্য বিভাগ) এর দায়িত্বে আছেন। প্রতিবাদকারী ব্যক্তি মকুল হোসেনের বাড়ি একই এলাকার নাজিরপুর নতুন পাড়ায়।
অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে হুমকির শিকার হওয়া ব্যক্তি মোঃ মকুল হোসেন জানান,‘ বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) উপজেলাব্যাপী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার সরুপ মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে ট্যাব বিতরণ করা হয়। খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারলাম নাজিরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীরা কেউ ট্যাব পায়নি। ট্যাব পেয়েছে প্রধান শিক্ষকের ভাতিজী ও ভাগ্নি, সহকারী শিক্ষক মোঃ সুলতান হোসেনের মেয়ে, সহকারী শিক্ষক মোঃ আকরাম হোসেনের ছেলে, সহকারী শিক্ষক সাইদুল ইসলামের মেয়ে, বিদায়ী একজন শিক্ষার্থীসহ আরো একজন সহকারী শিক্ষকের ছেলে । বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের ছেলে-মেয়ে হওয়ার সুবাদে তারা ট্যাব পেয়েছে। মুলত প্রকৃত মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে ট্যাব কেন দেওয়া হলোনা এই বিষয়ে বিদ্যালয়ে গিয়ে জানতে চাইলে সহকারী শিক্ষক আকরামুল ইসলাম আমার ওপর উত্তেজীত হয়ে পরে। একপর্যায় তিনি বলেন,আমাদের ক্ষমতা আছে তাই আমরা চুরি করেছি, আমাদের ছেলেমেয়েদের দিয়েছি। তাতে আপনার সমস্যা কি। এছাড়াও সে আমার ওপর বার বার আক্রমণ করার চেষ্টা করে। মনে হচ্ছিলো আমি কোন কথা বললেই আমাকে ধরে মারবে। আমি সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষের কাছে এই শিক্ষকের বিচার দাবি জানাচ্ছি।’
শিক্ষক আকরামুল ইসলাম জানান,‘ উত্তেজিত হয়ে ভূলবশত বলে ফেলছি। তাছাড়াও ওই ব্যক্তি মকুল হোসেনের সাথে আমার ব্যক্তিগত দ্বন্দ থাকার কারনে কথার প্রসঙ্গে কথাটি বের হয়ে গেছে। এটা আমার ভূল হয়েছে।’
প্রধান শিক্ষক মোঃ ফরিদ মন্ডল বলেন,‘একটু ভূল ভ্রান্তির কারনে এই সমস্যা হয়েছে। ট্যাব যাদেরকে দেওয়া হয়েছিলো তাদের কাছ থেকে ফেরৎ নিয়ে প্রকৃত মেধাবী শিক্ষার্থীদের হাতে ট্যাব তুলে দেওয়া হয়েছে। সহকারী শিক্ষকের উত্তেজীত বিষয়ে আমার জানা নেই।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ সেলিম আকতার মোবাইল ফোনে বলেন,‘ইতিমধ্যেই ওই বিদ্যালয়ের অভিযোগটি আমলে নেওয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সহকারী শিক্ষক যে কথা বলেছে সেটা তিনি বলতে পারেননা। অভিভাবক অভিযোগ দিলে ক্ষতিয়ে দেখা হবে বিষয়টি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *