নাটোরে ঈদের শেষ হাটেও নেই পশু বিক্রি

নাটোর অফিস॥
উত্তরাঞ্চলের অন্যতম কোরবানীর পশুর হাট নাটোরের তেবাড়িয়া হাটে পশু আমদানী ও বিক্রি দুটোই কম। ঈদের আগে সাপ্তাহিক শেষ হাটেও হয়নি কাঙ্খিত কেনাবেঁচা। করোনা পরিস্থিতির কারণে বাজারে ক্রেতাসমাগম কম। এতে শেষ হাটে এসেও লাভ-লোকসানের হিসেব মেলাতে পারছেন না ইজারাদার ও ব্যবসায়ীরা।

আজ রোববার(২৬ শে জুলাই) ঈদ-উল-আযহার আগে শেষ হাটটি বসেছে।

দুপুরের পর হাটে গিয়ে দেখা যায়, নাটোর-রাজশাহী মহাসড়কের দুই পাশে বসেছে গরুর ও খাসির হাট। ঈদের শেষ হাটে গত সপ্তাহের চেয়ে ক্রেতা সমাগম কিছুটা বাড়লেও নেই কেনাবেঁচা। গরুর চেয়ে খাসীর হাটে ক্রেতাদের ভীড় বেশি লক্ষ্য করা গেছে। ৮ থেকে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে অধিকাংশ খাসী বিক্রি হতে দেখা গেছে। হাটে মাঝারি খাসির চাহিদা বেশি। যেসব ব্যবসায়ীরা বড় খাসী এনেছেন সেসব খাসীর বিক্রি তুলনামূলক কম।

অপরদিকে, আজকের হাটেও বড় সাইজের গরুগুলো বেশি এনেছেন ব্যাপারীরা। তবে বিক্রি প্রায় নেই বললেই চলে। বড় গরুগুলোর দাম এক থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত চাইলেও হাতেগোনা কিছু ক্রেতা ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা দাম কম বলছেন। মাঝারি সাইজের গরুগুলোর দাম ৬০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা চাইলেও ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা কম বলছেন ক্রেতারা।

পাবনার ঈশ্বরদী থেকে তিনটি গরু তেবাড়িয়া হাটে এনে একটিও বিক্রি করতে পারেননি খামারী বলাই ঘোষ। তিনি বলেন, ‘কোরবানীর সময় বিক্রির জন্য ৫টি গরু মোটাতাজা করেছিলাম। দুইটি নিজ এলাকায় বিক্রি করেছি। বাকী তিনটি গরু নিয়ে বিভিন্ন হাটে যাচ্ছি। খামারে পালন করায় দাম এক লাখ ৩০ হাজার টাকা চাইলেও কোনো ক্রেতা এখনও লাখের উপর উঠছেন না।’

সিংড়ার কৈগ্রামের গরু ব্যবসায়ী জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘ছয় মাস আগে ৫৫ হাজার টাকায় গরু কিনে মোটাতাজা করেছিলাম। এখন এক লাখ টাকা দাম চাচ্ছি। কিন্ত ৬০ হাজারের বেশি দাম ওঠেনি এখনও। এই দামে গরু বেঁচলে লাভ তো দুরের কথা খরচই উঠবে না।’

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার কয়ামাজমপুর গ্রামের গরু বিক্রেতা আব্দুস সামাদ বলেন, ‘গত পরশু শুক্রবার স্থানীয় তাহেরপুর হাটে ৪টি গরু তুলে ৮০ হাজার টাকা করে দাম চেয়েছিলাম। একটা গরু বিক্রি করেছি ৭০ হাজার টাকায়। তিনটা গরু এই হাটে এনেছি। দাম না পেলে কাল সোমবার আবারও তাহেরপুর হাটেই তুলতে হবে গরু। এবার লোকসান প্রায় নিশ্চিত।’

খাসী বিক্রেতা শাহীন আলী বলেন, ‘এবার খাসির চাহিদা বেশি। খাসি বিক্রিও বেশ ভালো। সরবরাহ বেশি থাকায় দাম বাড়েনি।’

হাটের ইজারাদার মোস্তারুল ইসলাম বলেন, ‘শেষ হাটেও কোরবানীর পশু বিক্রি আশাব্যাঞ্জক নয়। বড় গরু বেশি এলেও চাহিদা নেই। মানুষ খাসী বেশি কিনছে। হাট ইজারা নিয়ে আমরা বিপাকে পড়েছি। লোকসান কাটাতে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত হাট চালু রাখার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।

বিকেলে হাট পরিদর্শনে এসে জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ বলেন,’করোনা ও বন্যা পরিস্থিতির কারণে হাটে পশু সরবরাহ কম। অনলাইনে হাট চালু হওয়ায় অনেককেই পশু কিনতে হাটে আসতে হচ্ছে না। আমরা হাটে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে প্রতিপালনের নির্দেশনে দিয়েছি।’

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *