নাটোরে ছাত্রলীগে পাল্টাপাল্টি কমিটি, উত্তেজনা

নাটোর অফিসঃ গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করে পাল্টা কমিটি করেছে জেলা ছাত্রলীগ। এ ঘটনায় দুই কমিটির সদস্যদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

রোববার(১৫ই সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরে কান্দিভিটুয়া এলাকায় জেলা আওয়ামী লীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রাকিবুল হাসান জেমস ও সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম মাসুম তাদের পাশ কাটিয়ে অবৈধভাবে কমিটি গঠনের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুলকে দায়ী করেন।

তারা অভিযোগ করেন স্থানীয় এমপির ব্যক্তিগত উদ্যোগে জেলা ছাত্রলীগ ও উপজেলা আওয়ামী লীগকে পাশ কাটিয়ে অছাত্র, মাদকসেবী ও অসামাজিক কাজে লিপ্ত ছেলেদের দিয়ে উপজেলা কমিটি গঠন করা হয়েছিল। যা সম্পূর্ণভাবে অসাংগঠনিক ও অবৈধ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম মাসুম জানান, পূর্বঘোষণা অনুযায়ী গতকাল শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর)  বাগাতিপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারিত ছিল। ওইদিন সম্মেলনের ব্যাপারে আপত্তি তোলেন উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার আলী। এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগ ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পরামর্শে পরবর্তীতে সমন্বয় করে সম্মেলন ও কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শুক্রবার(১৩ সেপ্টেম্বর) জেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ১৪ তারিখের ওই সম্মেলন স্থগিত করা হয়। কিন্তু সেই স্থগিতাদেশ না মেনে এবং জেলা ছাত্রলীগকে অবহিত না করে শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া)আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল তড়িঘড়ি করে সম্মেলন মাধ্যমে আতিক হাসান বিদ্যুৎকে সভাপতি ও শহিদুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করেন যা সম্পূর্ণভাবে অসাংগঠনিক ও অবৈধ।

সংবাদ সম্মেলন শেষে আগামী এক বছরের জন্য বাগাতিপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটির সভাপতি নাজমুল হাসান নাহিদ, সহ-সভাপতি ফজলে রাব্বি, সাধারণ সম্পাদক শিহাব মাহমুদ সোহেল ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লালন বাদশা সোহাগ।

সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম মাসুম বলেন, ছাত্রলীগ চলে নিজস্ব গঠনতন্ত্রে। কারও চাপিয়ে দেয়া নেতৃত্বে ছাত্রলীগ চলবে না। জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দের অনুপস্থিতি ও অননুমোদনের পর কোন কমিটিই বৈধ নয়। তাই সংগঠনের ত্যাগী কর্মিদের দ্বারাই প্রকৃত কমিটি করা হয়েছে।

এদিকে জেলা ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে কমিটি গঠনের অভিযোগ তুলেছেন সাংসদ বকুল সমর্থক ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ। তবে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রাকিবুল হাসান জেমস এই অভিযোগকে মিথ্যাচার ও সুনাম ক্ষুন্ন করতেই প্রচার করা হচ্ছে বলে দাবী করে বলেন, পুর্বের ওই কমিটি গঠনের বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল ছাড়া কারও সাথে তাদের কোন কথা হয়নি। ছাত্রলীগের কোন পদপ্রার্থীর সাথেও নয়, ফলে টাকা চাওয়ার দাবী একে বারেই মিথ্যা।

অপরদিকে গঠনতন্ত্র বহির্ভূত কমিটি গঠনে সহায়তা করার অভিযোগের বিষয় জানতে স্থানীয় সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুলের সাথে সেলফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

জেলা আওয়ামীলীগ দপ্তর সম্পাদক দীলিপ কুমার দাস বলেন, এলাকার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে সাংসদ শহিদুল ইসলাম বকুল কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে সুপারিশ করতে পারেন। যোগ্য নেতৃত্ব এবং ভাল আচরনের কাউকে কমিটিতে অর্ন্তভুক্ত করার জন্য তিনি সুপারিশ করতেই পারেন। তবে ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করতে পারেননা।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *