নাটোরে সহপাঠী হত্যায় তিন কিশোরের বিভিন্ন মেয়াদে আটকাদেশ 

নাটোরঃ নাটোরে চাঞ্চল্যকর মাদ্রাসা ছাত্র তানভির হোসেন (১১) হত্যার ঘটনায় তার সহপাঠী তিন কিশোর হুমাইদ (১২) বায়োজিদ (১৩) ও নাইমকে (১৩) বিভিন্ন মেয়াদে আটকাদেশ দিয়েছে নাটোর শিশু আদালতের বিচারক। বিচারক মোঃ মাইনুল হক সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে  বুধবার এক আদেশে অভিযুক্ত কিশোর হুমায়ন ও বায়োজিদকে ৩০২ ধারায় ১০ বছর, ৩৮৭ ধারায় ৫ বছর  ও ৩০১ ধারায় ৩ বছর এবং অপর কিশোর নাইমকে ৩৮৭ ধারায় ৫ বছর ও ৩০১ ধারায় ৩ বছরের আটকাদেশ দিয়েছেন।

অভিযুক্তরা ভারতীয় টিভির সিরিয়াল ‘ক্রাইম পেট্রলের’ আদলে তাদের সহপাঠি শহরের আলাইপুরস্থ আশরাফুল উলুম মাদ্রাসার ছাত্র ও উত্তর বড়গাছা এলাকার সাইফুল ইসলাম তুষারের ছেলে তানভির হোসেনকে অপহরণ করে মাদ্রাসার পাশের একটি সেফটিক ট্যাংকে ফেলে হত্যা করে।

আদালত সুত্রে জানা যায়,২০১৫ সালের ২৫ আগষ্ট শহরের আলাইপুর এলাকায় আশরাফুল উলুম হফেজিয়া মাদ্রাসা ছাত্র তানভীর হোসেনকে ভারতীয় সিরিয়ালের আদলে অপহরণ করে মাদ্রাসার পাশের একটি সেফটিক ট্যাংকে ফেলে হত্যা করে সহপাঠি হুমায়েদ, বাইজিদ ও নাইম। ওই কিশোর অভিযুক্তরা ভারতীয় টিভি সিরিয়াল দেখে উৎসাহিত হয়ে মুক্তিপণের টাকা আদায়ের উদ্যেশ্যে তানভিরকে অপহরণ করে। তারা তানভিরের পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবী করে। কিন্তু মুক্তিপণ আদায়ের আগেই তানভিরকে হত্যা করে মাদ্রাসার পাশে একটি পরিত্যক্ত বাড়ির সেফটিক ট্যাংকের মধ্যে ফেলে রাখে। এব্যাপারে তানভিরের বাবা সদর থানায় একটি মামলা এবং র‌্যাবকে অবহিত করেন। র্যাব সদস্যরা তানভিরের ওই তিন সহপাঠিকে আটক করে জ্ঞিাসাবাদ করলে তারা র‌্যাবের কাছে সব স্বীকার করে। পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মাদ্রাসার পাশে ওই সেফটিক ট্যাংক থেকে তানভিরের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।

এই মামলার তৎকালীন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই  সুকুমার ঘোষ তদন্ত শেষে একই বছরের ২৫ অক্টোবর আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানী ও ১৪ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে শিশু আদালতের বিচারক বুধবার দুপুরে এই আদেশ দিয়েছেন।

শিশু আদালতের পিপি শাজাহান কবির রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অভিযুক্তরা একই সাথে সাজা ভোগ করবে। অভিযুক্তদের মধ্যে বায়োজিদ ও নাইমের বয়স ১৮ বছর পুর্ণ হওয়ায় তাদের জেলা কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *