মৃত ভেবে স্ত্রীকে রাস্তায় ফেলে পালায় স্বামী,পরে মৃত্যু

নাটোর অফিস॥
নাটোরের গুরুদাসপুরে এক গৃহবধূকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত ভেবে রাস্তায় ফেলে পালানোর অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। বুধবার রাতে উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের বিলহরিবাড়ী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে স্বজনরা হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা গেছেন গৃহবধূ সুমি খাতুন (২০)।নিহত গৃহবধূ সিংড়া উপজেলার নুরপুর গ্রামের মো. শফিক প্রাংয়ের মেয়ে। এ ঘটনায় আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগে ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গৃহবধূর শাশুড়ি শাহিদা বেগমকে (৪৬) গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
গৃহবধূর বাবা শফিক জানান, এক বছর আগে বিলহরিবাড়ী গ্রামের আবু সাঈদের সঙ্গে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছিলেন। এরপর থেকেই যৌতুকের জন্য শারীরিক-মানসিক নির্যাতন করত স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন। ১৫ দিন আগে জমিতে পানি সেচ দেওয়াকে কেন্দ্র করে সুমিকে মারধর করে গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে মরে যেতে বলেন শাশুড়ি শাহিদা। এমন নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বুধবার বিকেলে তাঁর মেয়ে সুমি কীটনাশক জাতীয় গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে বলে তার বাবার অভিযোগ। পরে তাঁর স্বামী আবু সাঈদ, শ্বশুর বদি সরকার ও শাশুড়িসহ পরিবারের লোকজন তাঁকে তড়িঘড়ি করে হাসপাতালে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেন। তারা বাড়ি থেকে হাসপাতালে যাওয়ার পথে সাবগাড়ী এলাকায় সুমির মৃত্যু হয়েছে ভেবে তাঁকে ফেলে পালিয়ে যায়।
ঘণ্টাখানেক পর স্থানীয়রা বিষয়টি বুঝতে পেরে স্বজনদের খবর দিলে তারা সুমিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁর অবস্থা গুরুতর দেখে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। পরে অ্যাম্বুলেন্সযোগে রাজশাহী নেওয়ার পথে বানেশ্বর এলাকায় সুমি মারা যান বলে জানান তাঁর বাবা।
গুরুদাসপুর থানার ওসি মো. উজ্জ্বল হোসেন বলেন, আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলার পর গৃহবধূ সুমির শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে বৃহস্পতিবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *