বাবার চিকিৎসা করতে গিয়ে প্রাণ গেল ছেলে-মেয়েসহ ৪ জনের

নাটোর অফিস॥
বাবা ক্যান্সারে আক্রান্ত প্রায় এক বছর। সপ্তায় ২দিন ক্যামো দেয়ার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে হয়। অবরোধের কারনে অটোরিক্সা ভারা করে বাবা, বোন ও ভাতিজাকে নিয়ে যাচ্ছিলেন লাবু হোসেন। শনিবার বিকেল ৩টার দিকে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বেলপুকুর এলাকায় রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কে একটি ট্রাক সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাকটি একটি দোকানে ঢুকে যায়। এতে নিহত হয় লাবু হোসেন (৪০) তারা বাবা ইউনুস আলী (৮০) বোন পাবভিন খাতুন (৩৫) ও তার ভাতিজি শারমিন খাতুন (১৬)। নিহতেরা নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চর-কান্তপুর পশ্চিম পাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
নিহত শারমিনের মামাত ভাই জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শারমিন খাতুন লেখা পড়ায় ভাল ছিল। সে এসএসসিতে জিপিএ ৫ মেয়ে রাজশাহীর শাহ-মুখদুম কলেজে ভর্তি হয়েছিল। বড় হয়ে বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন ছিল তার।
আবু সাইদ বলেন, আমরা তিন ভাই ও তিন বোন। বাবা আমাদের কষ্ট করে বড় করেছেন। আমার মেয়ে লেখাপড়া শিখে চাকুরি করার কথা বলত সবসময়। বাবা ভাই বোন মেয়েকে এভাবে হারাতে হবে বুঝতে পারি নাই। তিনি আরো বলেন, আমার ভাই লাবু হোসেন সাত বছরের একটি ছেলে ও দুই বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। তাদের এখন কি হবে।
এদিকে সড়ক দুর্ঘটনায় নাটোরে গুরুদাসপুরে একই পরিবারের নিহত ৪ জনের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। শান্তনা দিতে গিয়ে প্রতিবেশীরাও শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়ছেন। একই সাথে একই পরিবারের ৪ জনের মৃত্যুকে মেনে নিতে পারছেন না কেউ। গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এলাকাবাসী ও নিহতদের সজনরা জানায়, ছেলে লাবু হোসেন ক্যান্সারে আক্রান্ত তার বাবা ইউনুস আলীর ক্যোমো দেয়ার জন্য বোন ও ভাতিজাকে নিয়ে রাজশাহী যাচ্ছিলেন । অবরোধর আতংকের কারনে সিএনজি চালিত অটোরিক্সা ভারা করে যাচ্ছিলেন তারা। আজ শনিবার বিকেল ৩টার দিকে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বেলপুকুর এলাকায় রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কে একটি ট্রাক তাদের বহনকারী সিএনজিচালিত ওই অটোরিকশাকে ধাক্কা দিয়ে ট্রাকটি একটি দোকানে ঢুকে যায়। এতে নিহত হয় লাবু হোসেন ,তারা বাবা ইউনুস আলী , বোন পাবভিন খাতুন ও তার ভাতিজি শারমিন খাতুন। এছাড়া ওই অটোরিক্সার চালক মোখলেসুরও মারা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *