
নাটোর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের একটি বিশ্বস্ত সূত্র মারফত জানা গেছে, ২০১৬ সালের শুরু থেকে ২০১৭ সালের শেষ পর্যন্ত নাটোরে বিভিন্ন সময়ে নতুন যে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে ৩২০ টি সংযোগ, যার কোন রেকর্ড বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কাছে নেই। সংযোগ প্রতি বিদ্যুৎ বিভাগের নির্ধারিত ফি ৮৫০ টাকা হলেও মাথাপিছু তোলা হয়েছে ৫০০০ টাকা। ৮৫০ টাকা হারে ৩২০ নতুন সংযোগ ফি বাবদ সরকারী প্রাপ্য ২ লাখ ৭২ হাজার টাকাও জমা হয়নি সরকারী খাতে। উপরন্ত ৩২০ গ্রাহকের নিকট থেকে তোলা হয়েছে ১৬ লাখ টাকা।
বৈধ সংযোগ অবৈধভাবে দিয়ে পুরো ১৬ লাখ টাকাই লোপাট করেছেন বলে অভিযোগ নাটোর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের জুনিয়র অফিস সহকারী রাশেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এ অভিযোগে তিনি সাময়িক বরখাস্ত এখন। তবে পুরো প্রক্রিয়াতে তার সাথে জড়িত ছিলেন বোর্ডের আরও কয়েক কর্মকর্তা-কর্মচারী যাদের মধ্যে অন্যতম সাবেক সিবিএ সভাপতি মৃধা মোজাম্মেল হক। জানা গেছে, এ কাজে ব্যবহার করা হয়েছে বর্তমান সহকারী প্রকৌশলী তারেক রহমান শুভ্র, উপ-সহকারী প্রকৌশলী সুব্রত ঘোষ, রাজীব আহম্মেদ ও সাবেক সিবিএ নেতা রবিউল ইসলামের নাম।

এ অনিয়মের বিষয়ে চলতি মাসের ১লা সেপ্টেম্বর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবহিত করেন সদ্যসাবেক আবাসিক প্রকৌশলী এস এম মাসুদ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ৯ সেপ্টেম্বর ৪ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। জেলা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম মহিউদ্দিনকে আহ্বায়ক করে অপর তিন সদস্য হলেন সহকারী প্রকৌশলী এস এম আব্দুল মতিন, সহকারী পরিচালক (হিসাব) ইব্রাহীম খলিল এবং উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাসুম রেজা। পুরো বিষয়টি তদন্ত করতে কয়েক দফা সময় বৃদ্ধির আবেদনও করেছে তদন্ত কমিটি। সর্বশেষ, চলতি মাসের ৩০ তারিখের মধ্যেই এই প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জাগোনাটোর টোয়োন্টিফোর ডটকমকে নিশ্চিত করেছে একটি সূত্র।
এর আগে ১৬ লাখ টাকা লোপাটের ব্যাপারে এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করে প্রাথমিকভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত রাশেদুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। আজ মঙ্গলবার সকালে অনিয়ম তদন্তে গঠিত কমিটি বৈঠক করেছে। ওই বৈঠকে অভিযুক্ত রাশেদুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে কমিটি।
অনিয়ম ও আত্নসাতের ঘটনায় সাবেক সিবিএ সভাপতি মৃধা মোজাম্মেল হক জাগো নাটোরকে বলেন, ‘ আমি এ ঘটনার সাথে জড়িত নই, দায়ী রাশেদুল। তাকে সাময়িক বহিষ্কারও করা হয়েছে। সে নিজেই লিখিতভাবে জানিয়েছে যে, পুরো প্রক্রিয়ার সে একাই জড়িত।’

জেলা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম মহিউদ্দীন জাগোনাটোর টোয়োন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘ যা শুনেছেন, তা কিছুটা সত্য; সব নয়।’
পুরো প্রক্রিয়ায় বিদ্যুত বিভাগের অনান্য কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে কি না- জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ’তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তের জন্য আমরা কিছুটা গোপনীয়তা রক্ষা করছি। তদন্ত কমিটির কাছে দোষী প্রমানিত হলে কোম্পানী সার্ভিস রুলস অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।



