মিনি কক্সবাজার খ্যাত হালতিবিলে ভ্রমণ পিপাসুদের উপচে পড়া ভির

নাটোর অফিস ॥
ঈদুল আযহার দিন থেকেই নাটোরের মিনি কক্সবাজার খ্যাত হালতি বিলের পাটুল ঘাটে বিনোদন পিপাসুদের ভির উপচে পড়ছে। ঈদুল আজহার ছুটিতে আসা দুরদুরান্ত থেকে নারী-পুরুষসহ বিভিন্ন বয়সী হাজার হাজার মানুষ নির্মল আনন্দের জন্য ছুটে আসছেন এখানে। বিলের ডুবন্ত সড়কে হেঁটে বেড়ানোসহ বিলের পানিতে সাঁতার কাটা ও নৌকা ভ্রমন করে সময় কাটান তারা। তবে অধিকাংশ মানুষ স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা করছেননা। আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশও মানছেন না তারা।
বাংলাদেশের বৃহত্তম বিলের মধ্যে অন্যতম নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার হালতি বিল যা বর্তমানের ‘মিনি কক্সবাজার’ নামে পরিচিত। নাটোর শহর থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দুরত্বের এই বিল বর্ষা মৌসুমে সমুদ্রের আকার ধারন করে। বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ে তীরে। এসময় বিলের ভিতরের গ্রামগুলো দেখতে দ্বিপ গ্রামের মত মনে হয়। বর্ষায় সড়কগুলো পানিতে তলিয়ে তাকলেও শুস্ক মৌসুমে সড়কগুলো দিয়ে সবধরনের যানবাহন চলাচল করে। এই ডুবন্ত সড়ক দেখতেই দেশী বিদেশী পর্যটকরা এই পাটুল এলাকায় আসেন। এখানে এসে নৈসর্গিক সৌন্দর্যের আকর্ষনে আকৃষ্ট হন দর্শনার্থীরা। নির্মাল আনন্দ উপভোগ করতে স্থানীয়রাও প্রায় প্রতিদিন আসেন এই মিনি কক্সবাজার এলাকায়। মহামারি করোনার কারনে গত দুই বছর ধরে দর্শনার্থীদের আগমণ কমতে থাকে। কিন্তু এবার ঈদুল আযহার ছুটিতে আসা ভ্রমন পিপাসুদের অনেকেই এখানে আসতে শুরু করেছেন ঈদের দিন থেকে । স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশ থাকলেও তা উপেক্ষিত হচ্ছে। দীর্ঘদিন পর এখানে ঘুরতে আসা শিশু কিশোররা বেশ আনন্দ উপভোগ করেন। দর্শনার্থীদের কেউ কেউ দাবী করেন সব কিছুই আল্লাহপাকের হাতে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হলেও তারা লকডাউন বা স্বাস্থ্যবিধি মানতে চাননা। এখানে ঘুরতে এসে নৌকা ভ্রমনের সময় দুর্ঘটনার শিকারে পড়েন কেউ কেউ। তারা নৌকা চালকদের অদক্ষতাকে দায়ী করা সহ লাইফ জ্যাকেট না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এছাড়া লকডাউনের অজুহাত তুলে ভ্রমন ভাড়া বেশী নেওয়ার অভিযোগ করেন কেউ কেউ। তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়গুলো দেখার আবেদন জানিয়েছেন।
এদিকে বছরের ৬ মাস হালতি বিল পানিতে পরিপুর্ন থাকার কারনে স্থানীয় বিভিন্ন পেশার মানুষ,নৌকা চালিয়ে এবং দোকান বসিয়ে উপার্যন করে। করোনা ভাইরাসের কারনে অনেকেই পুজি হারিয়েছেন। এবার ঈদুল আযহার দিন থেকে কয়েক হাজার মানুষের পদচারনায় আবারো ভাল আয়ের প্রত্যাশায় নৌকা সহ পণ্যের পসরা বসিয়েছেন। তবে লকডাউনের ঘোষনায় এবছরও কর্মহীন থাকার শংকা তাদের।
নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন,গত দু’দিন পাটুল ঘাটে মানুষের উপচে পড়া ভির থাকলেও শুক্রবার থেকে আইন শৃংখলা বাহিনী কঠোর অবস্থান নেওয়া তা কমে এসেছে। ভ্রমন পিপাসুদের পথেই আটকে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। শুক্রবার সকাল থেকে তিনি নিজে এলাকায় অবস্থান করছিলেন। এলাকার মানুষদের স্বাস্থ্য্যবিধি মেনে চলার আহ্বান সহ কঠোর লকডাউনের বিধি সম্পর্কে সচেতন করা হয়। তবে যারা নৌকা চালিয়ে জীবিকা অর্জন করছেন তাদের নৌকা চলাচল বন্ধ করা যায়নি। হালতি বিলে চলাচলকারী প্রতিটি নৌকায় ইতিপুর্বে একটি করে লাইভ জ্যাকেট দেয়া আছে বলে জানান তিনি।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *