নাটোর-১ আসনঃ আ’লীগে ঐক্য ও জনগণের ভরসার কান্ডারী এমপি কালাম।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্ততির অংশ হিসেবে সারাদেশে তৃণমূল পর্যায়ে দলকে সুসংগঠিত ও নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করতে ‘উঠান বৈঠক’ নামের গণজমায়েতের নির্দেশনা দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ অনুযায়ী সরকারের উন্নয়ন ও সফলতার বার্তা প্রতিটি ঘরে পৌছে দিতে
দুই শতাধিক উঠান বৈঠক করে রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন লালপুর ও বাগাতিপাড়া নিয়ে গঠিত নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট আবুল কালাম।

কেন্দ্রীয় নির্দেশনা থাকলেও গত ৮ মাসে নাটোরের ৪ টি সংসদীয় আসনের মধ্যে নাটোর-১ আসনে সাংসদ আবুল কালাম ছাড়া বাকী ৩ সাংসদকে উঠান বৈঠকের আয়োজন করতে দেখা যায়নি খুব একটা। তবে নাটোর-২ (সদর ও নলডাঙ্গা) ও নাটের-৪(গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম) আসনের বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা সম্প্রতি উঠান বৈঠকের আয়োজন করে সরকারের সাফল্যের বার্তা পৌছে দিয়ে নিজেদের প্রার্থীতা জানান দিচ্ছেন।

অনুষ্ঠিত উঠান বৈঠকের বদৌলতে সাংসদ আবুল কালামের সাথে দুই উপজেলার সাধারণ মানুষদের সংযোগ ঘটিয়েছে দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা। নিজেদের উঠানে সাংসদকে পেয়ে দল ও নিজেদের অভাব, অভিযোগ ও বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে সেগুলোর যৌক্তিক সমাধান ও বিভিন্ন দাবী-দাওয়া আদায় করে নিয়েছেন তারা। ফলে সাংসদের সাথে দুরুত্ব কমেছে তাদের। এতে করে নির্বাচনের আগেই ভোটারদের দৌড়গোড়ায় যাবার একটি সুযোগ পেয়েছেন সাংসদও।

লালপুর ও বাগাতিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, দুই উপজেলার ইউনিয়ন, ওয়ার্ড, পাড়া-মহল্লায় পদলকে সুসংগঠিত করতে গত নভেম্বর থেকে দুইশতাধিক উঠান বৈঠকে যোগ দেন সাংসদ আবুল কালাম। এর মধ্যে কোন কোন এলাকায় একাধিক বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে। সরকারের মেয়াদের শেষ সময় বিশেষ করে আগামী দুই মাসে এবার নৌকার পক্ষে ভোট চাইতে দুইটি উপজেলার প্রতিটি ঘরে ঘরে যাবেন তিনি। দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের নিয়ে ভোটের আগে আরো কিছু কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

এদিকে অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে নাটোর-১ আসনে সংগঠিত ও শক্তিশালী আওয়ামী লীগ। কারণ হিসেবে স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন সাংসদের সাথে নেতাকর্মীদের অব্যাহত যোগাযোগ। উঠান বৈঠকসহ বিভিন্ন গণজমায়েতে সাংসদের জনসম্পৃক্ততা দূরে সরে থাকা কর্মীদের কাছে টেনেছে নিঃসন্দেহে।

চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে নিজ নির্বাচনী এলাকায় সাংসদ আবুল কালামের রাজনৈতিক কর্মকান্ড বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ ইউনেস্কোর ওয়াল্ড মেমরি রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত হবার পর থেকেই সাংসদ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে আনন্দ মিছিল, শোভাযাত্রা, আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মী উদ্দীপক কর্মসূচী পালন করেন। সেসব কর্মসূচীতে হাজার হাজার মানুষের অংশগ্রহণ ছিলো চোখে পড়ার মতো। এখনও কেন্দ্রঘোষিত কোন কর্মসূচী থাকলে সেটি পালনের জন্য কর্মীদের সম্পৃক্ত করার সুযোগ হাতছাড়া করছেন না সাংসদ।

অপর উপজেলা নাটোরের বাগাতিপাড়ায় শতভাগ বিদ্যুতায়নের ব্যবস্থার মাধ্যমে তৃণমূল মানুষের জীবনঘনিষ্ঠ চাহিদাটি পূরণ করেছেন সাংসদ কালাম। সেইসাথে যোগাযোগ ব্যবস্থারও অভূতপূর্ব উন্নয়ন ঘটেছে উপজেলাতে। তবে পিছিয়ে পড়া উপজেলাবাসী সাংসদের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে খুশি হলেও দলের গুটিকয়েক নেতা সাংসদ বিরোধিতায় এখনও লিপ্ত রয়েছেন। তবে তাদের প্রকাশ্য তৎপরতা এখন কমে গেছে।

বাগাতিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্রী সুকুমার মুখার্জী তিনকড়ি ঠাকুর বলেন, ‘ একটি এলাকায় দলকে সংগঠিত করার আগে সাধারণ জনগণের জীবনঘনিষ্ঠ সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হয়। বিগত সময়ে জাতীয় পার্টি ও বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকলেও রাস্তাঘাট ও বিদ্যুৎ সমস্যার সুরাহা হয়নি। বর্তমান সাংসদ মানুষের এসব জীবনঘনিষ্ঠ সমস্যার সমাধানে উদয়স্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। এমনিতেই শতভাগ বিদ্যুৎ আসেনি, রাস্তাঘাট হয়নি।
জনগণের এসব চাহিদা পূরণ হলে মানুষ সাংসদ কালামকেই বেছে নেবে, কালামের সমালোচনাকারীদের নয়। সাংসদ ভুল করলে তার বিচার করবে জনগণ আর সাংসদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে মূলত দলের ক্ষতি যারা করে চলেছেন, তাদের বিচার করবে দল।’

লালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আফতাব হোসেন ঝুলফু বলেন, ‘ লালপুরের মাটি এখন আওয়ামী লীগের ঘাটি। লালপুরবাসী বর্তমান সাংসদ আবুল কালামের থেকে যা পেয়েছে, অন্য কোন সাংসদ অতীতে তা দিতে পারেনি। একটি উপজেলায় আওয়ামী লীগ কতটা ঐক্যবদ্ধ, তা দেখার জন্য হলেও যে কারো লালপুরে আসা উচিত। শুধু দলকে শক্তিশালী করাই নয়, লালপুর নিয়ে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনাও করেছেন সাংসদ। কৃষিপ্রধান এ অঞ্চলে ইকোনমিক জোন প্রতিষ্ঠার কৃতিত্ব সাংসদের। জোনটি স্থাপিত হলে বেকার সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে এখানকার দারিদ্র বিমোচনে তা অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। সেই সাথে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলে শিল্প পার্ক প্রতিষ্ঠিত হলেন চিনি শিল্পের সাড়ে জড়িত হাজারো কৃষক-শ্রমিক-কর্মচারীর ভাগ্য বদলে যাবে।’

এ ব্যাপারে সংসদ সদস্য এডভোকেট আবুল কালাম বলেন, ‘ লালপুর-বাগাতিপাড়ার মানুষের আরো পাওনা আছে রাষ্ট্রের কাছে। আমি সেই পাওনা আদায়েই কাজ করছি। যে মাটি শহীদ মমতাজ উদ্দীনের রক্তে ভিজে আছে, সে মাটিতে তার খুনী বিএনপি-জামাতের অস্তিত্ব এখন বিলীনপ্রায়। সে মাটিই আজ জাতির জনকের প্রতিষ্ঠিত দলের শক্ত ঘাঁটি। মানুষ চেয়ে আছে বর্তমান সরকারের দিকে। এই মানুষের জন্যই কাজ করে যাচ্ছি এবং আগামী দিনেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুযোগ দিলে কাজ করে যেতে চাই।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *