
দেশে করোনা মহামারীর শুরু থেকে
নিজ পৌরসভার মানুষদের ঘরে রাখতে নিজে দিন-রাত এক করে খেটে চলেছেন নাটোরের সিংড়া পৌরসভার মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস। রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করতে তাকে দেখা গেছে করোনা সংকটের আগেও। ২০১৭ সালের অকালবন্যায় বুক সমান পানি অতিক্রম করে পৌরবাসীর কাছে পৌছে দিয়েছেন খাদ্য সহায়তা। আর করোনা সংকটের শুরু থেকে সিংড়াবাসীকে ঘরে রাখতে হাতজোড় করা থেকে শুরু করে পা চেপেও ধরতে দেখা গেছে তাকে। এরই মাঝে চলনবিলে বোরো ধান পাকা শুরু হলে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে একবেলা করে কাস্তে হাতে ধানও কাটছেন এই মেয়র। বৈশ্বিক এই দুর্যোগে নাটোর জেলার একজন মানবিক জনপ্রতিনিধি হিসেবে এভাবেই আত্নপ্রকাশ ঘটেছে মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌসের।
সম্প্রতি এই পৌর জনপ্রতিনিধি কিভাবে দিনযাপন করেন তা লক্ষ্য করেছে জাগোনাটোর।

গত ২৯ এপ্রিল নাটোরের সিংড়া উপজেলায় প্রথম ৫ জন করোনা পজেটিভ রোগী ধরা পড়ে। পরের দিন লকডাউন ঘোষনা করে উপজেলা প্রশাসন। লকডাউনের পর দোকানপাট বন্ধ হয়ে পড়ে। সীমিত হয়ে পড়ে মানুষের জীবনযাত্রা। পৌর এলাকায় খাদ্যের অভাব যেনো কোনো ঘরে না থাকে সে লক্ষে মেয়র ফেরদৌস চালু করেন হটলাইন। মধ্যবিত্ত পরিবার, যারা খাবার চাইতে পারে না, তাদের খাবার পৌছে দেয় হটলাইন সার্ভিস। দিনে যেসব কল আসে রাতে তাদের কাছে পৌছে দেয়া হচ্ছে খাদ্য সামগ্রী। এশা ও তারাবি নামাজ শেষে স্বেচ্ছাসেবক টিম নিয়ে মেয়র বাড়ি বাড়ি পৌছে দেন খাদ্য সামগ্রী। লকডাউনের পর চলো পরিবহনের মাধ্যমে পৌর এলাকার ১২১টি পরিবারকে মেয়র নিজে গিয়ে খাবার পৌছে দেন।

মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস জাগোনাটোরকে বলেন, ‘যেদিন থেকে মানুষকে সচেতন করার কাজে মাঠে নেমেছি, সেদিন থেকে নিজ ঘরে প্রবেশ করিনি। বাড়ির নীচতলায় একটি কক্ষে কোয়ারেন্টিনে থাকার মতো করে বাস করছি। স্ত্রীকে বলেছি ঘরের দরজার কাছে খাবার রেখে দিতে। তার রেখে যাওয়া খাবার খেয়ে প্লেট-গ্লাস আবারও দরজার কাছে রেখে দিই। প্রতিদিন এক-দুবার নিচে থেকেই স্ত্রী-সন্তানদের দেখি। স্ত্রী-সন্তানদের সুস্থ ও নিরাপদে রাখার জন্য তাদের কাছে আসতে দেই না।’




