নাটোরে গুলিকরে কলেজ ছাত্র হত্যার বিচার দাবী

নাটোর অফিসঃ দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত কলেজ ছাত্র আল আমিন হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহে পাবনা থেকে এক যুবককে আটক করেছে বড়াইগ্রাম থানার পুলিশ। শনিবার সকালে তাকে আটক করা হয়। তদন্ত ও অন্য আসামীদের ধরার স্বার্থে আটক যুবকের নাম-পরিচয় জানাতে অস্বীকৃত জানায় পুলিশ।

এদিকে আল-আমিনের হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে খলিসাডাঙ্গা কলেজের শিক্ষক-কর্মচারী ও তার সহপাঠীরা। শনিবার সকালে কলেজ চত্বরে মিছিল পরবর্তী সমাবেশে কলেজের অধ্যক্ষ ফরিদুজ্জামান স্বপন, প্রভাষক কাওসার হোসেন ও আব্দুল জাব্বার, সহপাঠী আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

অপরদিকে আল আমিনের অকাল মৃত্যু মেনে নিতে পারছেননা এলাকার কেউ। সব বয়সের মানুষ আল আমিনের বাড়িতে ছুটে যাচ্ছেন ছেলে হারানো বাবা-মাকে সান্তনা জানাতে। কিন্তু একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় কলেজ ছাত্র আল-আমিনের বাবা-মাকে শান্তনা দিতে গিয়ে নিজেরাই চোখের পানি ধরে রাখতে পারছেননা। তারাও কেঁদে চোখের পানিতে বুক ভাসিয়ে দেন।

একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে প্রায় কেঁদে কেঁদে প্রায় বাকরুদ্ধ আল আমিনের বাবা শাহাদৎ হোসেন  ও  মা মর্জিনা বেগম। আল আমিনের বাবা দিন মজুর শাহাদৎ হোসেন স্বপ্ন দেখতেন তাদের একমাত্র ছেলে সংসারে সুখ এনে দেবে। উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হবে। তখন গ্রামে মাথা উঁচু করে বেড়াতে পারবেন। আল আমিন তাকে প্রায়ই বলতো, বাবা আর ক’টা বছর কষ্ট কর, তোমার স্বপ্ন পুরণ করবই। তোমাকে আর অন্যের জমি বা বাড়িতে কাজ করতে হবেনা। বুক ফুলিয়ে বলতে পারবে তোমার ছেলেও উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত এবং সরকারী চাকরীজীবি। ছোলের ইচ্ছা ছিল সেনাবাহিনীতে সৈনিক হিসেবে চাকরী করবে। কিন্তু সে স্বপ্ন অধরায় থেকে গেল।

শাহাদত হোসেন বলেন, ‘আমার ছেলের সাথে কারো  শত্রুতা ছিলো না। কত স্বপ্ন নিয়ে তাকে লেখাপড়া করাচ্ছিলাম। খুনিরা আমার ছেলেকে গুলি করেনি, আমার স্বপ্নটাকে গুলি করে গুড়িয়ে দিয়েছে।’

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নীলুফা ইয়াসমিন ডালু বলেন, আল আমিনের অকাল মৃত্যু মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে। এলাকায় এ ধরণের ঘটনা মেনে নিতে পারছি না। এই ঘটনার পর থেকেই এলাকাজুড়ে বিরাজ করছে আতঙ্ক।’ তিনি দোষীদের আটক ও বিচারের দাবী জানান।

বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) দিলীপ কুমার দাস বলেন, এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের সনাক্ত করার কাজ প্রায় শেষ করে এনেছেন। হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়েছে। তবে তদন্ত ও অপর আসামীদের ধরার স্বার্থে তার নাম পরিচয় প্রকাশ করা যাচ্ছে না। আশা করি, খুব দ্রুতই এ হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন হবে।

উল্লেখ্য, শুক্রবার বিকালে উপজেলার মকিমপুর গ্রামে কলেজ ছাত্র আল-আমিনকে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে হত্যা করে তিন দুর্বৃত্তরা। এ সময় তার একটি মোটর সাইকেল ছিনতাই করে নেয় তারা।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *