নাটোরে ফোণীর প্রভাবে সবজি-মাছ-মাংসের আকাল, মুরগীর দাম বৃদ্ধি

নাটোর অফিস॥ ঘূর্ণিঝড় ফোণীর প্রভাব পড়েছে নাটোরের বাজারগুলোতে। সকাল থেকে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ার কারণে বাজারে আসেনি শাক-সবজি। ফলে ক্রেতাদের চাপ বেড়েছে মুরগীর বাজারে। ব্রয়লারসহ বিভিন্ন মুরগীর দাম কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। খাসির মাংসের দাম কমলেও অপরিবর্তিত রয়েছে গরুর মাংসের দাম। বৈরী আবহাওয়ায় সকালে বাজারগুলেতে সবজি আনেননি বিক্রেতারা। তবে দুপুরের দিকে সবজি সরবরাহ একটু বাড়লেও ছিলনা ক্রেতা।

শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শহরের সর্ববৃহৎ নীচাবাজার কাঁচাবাজার, স্টেশনবাজার, মাদ্রাসামোড় বাজার, হরিশপুরসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

থেমে থেমে বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় অনান্য দিনের তুলনায় বাজারগুলোতে কম ছিলো ক্রেতাদের উপস্থিতি। তবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাড়তে থাকে ক্রেতার সংখ্যা। দিনের শুরুতে বাজারগুলোতে সবজি ও মাছের সরবরাহ একেবারেই ছিল না। সকালের দিকে যারা বাজারে আসেন তাদের অনেকেই সবজি ও মাছ কিনতে না পেরে মুরগী ও মাংস কিনে ফিরে যান। এসময় চাপ বাড়ে মুরগীর বাজারে। ফলে প্রতিকেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বাড়ে ব্রয়লারসহ দেশি ও পাকিস্তানী মুরগীর দাম। গত দুইদিনের তুলনায় ১২০ টাকা কেজির ব্রয়লার মুরগী বাজারভেদে বিক্রি হয়েছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। দেশি মুরগী বিক্রি হয়েছে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা কেজিতে। এছাড়া অনান্য জাতের মুরগী কেজিপ্রতি ২৪০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি করা হয়।

শহরের নীচাবাজার কাঁচাবাজার ও স্টেশন বাজার এলাকার হাতে গোনা দু-একটি দোকানে জবাই করা হয় গরু ও খাসির মাংস। গরুর মাংস কেজিপ্রতি ৫০০ টাকা অপরিবর্তিত থাকলেও খাসির মাংস বিক্রি হয়েছে স্বাভাবিকের তুলনায় অন্তত ৫০টাকা কম দামে। শনিবার দুপুরে নীচাবাজার কাঁচাবাজারে ৭০০ টাকা কেজির খাসির মাংস বিক্রি হয়েছে ৬৫০ টাকা দরে।

নীচাবাজার ও স্টেশনবাজারে শনিবার দুপুর পর্যন্ত আসেনি কোন মাছ। আগের দিন বরফ দিয়ে সংরক্ষণ করা কাতল ও ইলিশ ছাড়া দেখা মেলেনি অন্য কোন মাছের। দুপুরে বিক্রির জন্য এসব মাছ আনা হলেও এসময় ছিলনা কোন ক্রেতা। একই অবস্থা অন্য বাজারগুলোতেও।

নীচাবাজারের মুরগী বিক্রেতা জয়নাল হোসেন জানান, বাজারে মাছ না আসায় ক্রেতারা মুরগী কিনেছে বেশি। চাপ বেশি পড়াই দাম বেড়েছে।

গরুর মাংস বিক্রেতা সেলিম উদ্দীন জানান, তিনি শনিবার সকালে একটি গরু জবাই করে এনেছেন যা দ্রুত শেষ হয়। তবে দাম বাড়েনি বা কমেনি।

খাসির মাংসের বিক্রেতা আহসান আলী জানান, বাজারে মুরগী ও গরুর মাংসের উপর চাপ পড়ায় খাসির মাংস দাম কমিয়েও বিক্রি করা যাচ্ছে না।

সবজি বিক্রেতা সলিম উদ্দীন জানান, কম দামে সবজি বিক্রি করেও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না।

দেওয়ান কাউয়ুম নামে এক ক্রেতা দুপুরে বাজারে আসেন। তিনি জানান, বাজারে মাছ কিনতে এসে না পেয়ে ডিম কিনে ফিরছেন তিনি।

নীচাবাজার কাঁচাবাজার পরিচালনা কমিটির সদস্য আবুল হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কারনে বাজারের ক্রেতা ছিলো না। যারাও এসেছেন, তারা শাকসবজি না পেয়ে ফিরে গেছেন। যেসব পণ্য বিক্রি হয়েছে সেগুলোও নির্দিষ্ট দামের চেয়ে কম দামে বিক্রি হয়েছে পণ্য। আবহাওয়া পরিস্থিতির উন্নতি হলে বাজারও স্বাভাবিক হবে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *