শ্যালক রুবেলকে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিলেন প্রতিমন্ত্রী পলক

নাটোর অফিস ॥
নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী লুৎফুল হাবিব রুবেলকে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের নিদের্শ দিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। লুৎফুল হাবিব রুবেল প্রতিমন্ত্রী পলকের শ্যালক ও সিংড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক। তার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীকে অপহরন করে মারধরের অভিযোগ ওঠায় লুৎফুল হাবীবকে শোকজ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এছাড়া এবিষয়ে নাটোর সদর থানায় একটি মামলাও হয়েছ্।ে রুবেলকে প্রার্থীতা প্রত্যাহারে প্রতিমন্ত্রী পলকের নির্দেশ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিংড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও সিংড়া পৌর মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস। প্রতিমন্ত্রী পলক আজ শুক্রবার রাজশাহী থেকে লুৎফুল হাবিব রুবেলকে টেলিফোন করে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। এসময় উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ওহিদুর রহমান ও আমি সহ উপজেলা আওয়ামীলীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। জান্নাতুল ফেরদৌস আরো জানান, আজ শুক্রবার রাতের মধ্যে প্রতিমন্ত্রী পলকের নির্দেশ সহ একটি কারন দশানোর নোটিশ লুৎফুল হাবিব রুবেলকে পাঠানো হবে। এছাড়া কাল শনিবার উপজেলা আওয়ামীলীগের বর্ধিত সভার পর রুবেলকে প্রতিমন্ত্রী পলকের প্রার্থীতা প্রত্যাহারের নির্দেশ সংক্রান্ত লিখিতভাবে নোটিশ রুবেলকে দেয়া হবে। রুবেল দলীয় নির্দেশ অমান্য করে নির্বাচন করলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রয়োজন হলে তাকে দল থেকে বহিস্কার করা হবে। প্রতিমন্ত্রী পলক নির্দেশ দিয়েছেন ,যে তার আত্মীয় পরিচয় দিয়ে কাজে লাগাবে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা সহ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিদের্শ মোতাবেক কোন মন্ত্রী এমপির আত্মীয় সজন কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে না পারার গুরুত্ব দিয়ে প্রতিমন্ত্রী পলক এই নির্দেশ দিয়েছেন লুৎফুল হাবিব রুবেলকে।
এদিকে শুক্রবার বিকেল ৪টায় উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌসের পাঠানো কারন দশার্নোর নোটিশ এই প্রতিবেদকের হাতে আসে। রুবলেকে পাঠানে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ওহিদুর রহমান ও সাধারন সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌসের স্বাক্ষরিত পাঠানো কারন দশানোর নোটিশের জবাব তিন দিনের মধ্যে দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। কারন দাশানোর ওই নোটিশে বলা হয়েছে ১৫ এপ্রিল জেলা নির্বাচন অফিসের সামনে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বি চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন পাশার মনোনয়ন পত্র জমাদানে বাধাদান ,মারপিট,অপহরণের ঘটনা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হয় এবং উক্ত ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামী সুমনের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দ্বীতে আপনার সম্প্রক্ততা পাওয়া যায়। যা দলীয় আচরনবিধি পরিপন্থির সামিল। এমতাবস্থায় কেন আপনার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা তিন দিনের মধ্যে লিখিতভাবে জানানোর নির্দেশ দেয়া হয়।
অপরদিকে আজ শুক্রবার সকালে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক রাজশাহীতে চিকিৎসাধীন দেলোয়ার হোসেনকে দেখতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। তিনি অসুস্থ দেলোয়ার হোসেন এবং হাসপাতালে উপস্থিত দেলোয়ারের সজনদের সাথে কথা বলেন। এ ছাড়া তিনি দায়িত্বরত চিকিৎসকের কাছে তার শরীরের খোঁজখবর নেন। এসময় প্রতিমন্ত্রী ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন-ঘটনার জন্য তিনি লজ্জিত এবং ক্ষমা প্রার্থী। যারা তার নাম ভাঙ্গিয়ে ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার অপচেষ্টা করবে তাদের কপালে দুঃখ আছে। কে আমার ভাই, কে আমার শ্বশুর কিংবা শ্যালক এটা কোনো বিবেচনার বিষয় নয়। এটা নিয়ে আমি বিব্রত, লজ্জিত, দুঃখিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী। এ ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের সুষ্ঠু বিচার হবে। কেউ ছাড়া পাবে না বলে জানান
তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীর্ন দোলোয়ার হোসেন পাশার চিকিৎসার খোজ খবর নেন। পরে তিনি আকাশপথে ঢাকায় ফিরে যান। এর আগে প্রতিমন্ত্রী হাসপাতালের নিচতলার করিডরে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন।
বিষয়টি জানতে লুৎফুল হাবিব রুবলের সাথে তার মোবাইল ফোনে রিং দিলেও তিনি রিসিভ না করায় তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, গত সোমবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিলের শেষ দিনে বিকেল ৪টার দিকে নাটোর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের ভেতর থেকে কয়েকজন যুবক প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে মারপিট করতে করতে একটি কালো মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। প্রায় এক ঘন্টা পর মুমুর্ষ অবস্থায় সিংড়ার সাঁঐল গ্রামে দেলোয়রকে তার গ্রামের বাড়ির সামনে ফেলে রেখে আসে। দেলোয়ার হোসেন বর্তমানে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ওই ঘটনায় একটি মামলা করেছেন দেলোয়ারে মেজ ভাই মজিবুর রহমান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *