নাটোর-১ আসনের বর্তমান ও সাবেক এমপিসহ মনোনয়ন প্রত্যাশী সবাই দুর্নীতির সাথে জড়িত

নাটোর অফিস ॥
নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার লোকমানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এস এম হুমায়ন কবির আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা পোষন করেছেন। এজন্য তিনি আওয়ামীলীগের মনোনয়ন চাইবেন। সোমবার নাটোরের একটি রেস্তোরায় সাংবাদিকদের সাথে মতবিমিয়কালে তিনি তার ইচ্ছার কথা বলেন। এসময় তিনি বলেন, এই আসনে যারা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী তারা সবাই দুর্নীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যের সাথে জড়িত। কেউ কেউ আবার নেশাগ্রস্থ। তিনি বলেন, বর্তমান এমপি শহিদুল ইসলাম বকুলের পিতা মুক্তিযুদ্ধের সময় মুসলিম লীগ করতেন। পরে তিনিই বাগাতিপাড়া উপজেলার বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। মুসলিম লীগ দেশ স্বাধীন হোক এটাই চায়নি। তার ছেলে শহিদুল ইসলাম বকুল এখন আওয়ামীলীগের এমপি। তিনি সাবেক ও বর্তমান এমপিসহ উপজেলা চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে দুর্ণীতির অভিযোগ করে বলেন,তারা ক্ষমতায় যাওয়ার পর তাদের আসনগুলি অপবিত্র করেছেন। নিয়োগ বানিজ্য সহ নানা অনিয়মের মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। এদের কেউ নিয়োগ বানিজ্য করেছেন, কেউ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার নামে মোটা অংকের টাকা ঘুষ নিয়েছেন। ২৯ লাখ টাকায় কলেজের প্রিন্সিপাল বানিয়েছেন। এদের সজনরা মাছ চাষের জন্য পুকুরের চারপাশে বিদ্যুত লাইন দিয়ে মানুষ হত্যা করছে। সাবেক ও বর্তমান এমপি সাহেবরা তাদের চেয়ার কুলষিত করেছেন অপকর্ম করে। তাদের কাছাকাছি অপকর্ম করে সম্পদ গড়ে তুলছেন উপজেলা চেয়ারম্যানরা। এরা চাকরি দেয়ার নামে অসহায় মানুষদের কাছে থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। টাকা প্রদানকারীদের কপালে চাকরি জোটেনি। সাবেক ও বর্তমান এমপি এবং উপজেলা চেয়ারম্যানদের মধ্যে কেউ কেউ রাজশাহী পোষ্ট অফিসে লাখ লাখ টাকা জমা রেখেছেন। কয়েক কোটি টাকার বাড়ি রয়েছে রাজশাহীতে। মুলত এই নির্বাচনী এলাকায় এখন আওয়ামীলীগের প্রকৃত অভিভাবক নেই। অভিভাবক শুন্য হয়ে পড়েছে এই নির্বাচনী এলাকা।
তিনি আরো বলেন,তার (হুমায়ন কবির) পিতা এস.এম বদর উদ্দিন একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, তার তিন ভাইও মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তার পিতা এলাকায় অনেক স্কুল কলেজ মসজিদ মাদরাসা ও হাট বাজার প্রতিষ্ঠা করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তাদের বাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিল। তার ভাই হাবিব ভাই জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের বিভিন্ন দায়িত্বে ছিলেন। বিএনপির দ্বারাও তাদের পরিবার নির্যাতিত। তার পরিবার ছিল আওয়ামীলীগ ও মুক্তিযুদ্ধের পরিবার। ১৯৯৬ সালে ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলাম। আমার বড় ভাই ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ছিলেন। আমার আরেক ভাই হাবিব জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। ওই ভাই মৃত্যুর আগ পর্যন্ত জেলা আওয়ামীলীগের কৃষি সম্পাদক ছিলেন। ১৯৯১ সালে বিএনপি নেতা পটলের নির্যাতনের শিকার হয় আমার পরিবার। জেল জুলুম সহ আমানবিক নির্যাতনের শিকার হতে হয় আমাদের। আওয়ামলীগের নেতৃত্ব করা যোগ্যতা থাকলেও আমদের পরিবারের কাউকেও সদস্য করা হয়না। প্রকৃত আওয়ামীলীগ কর্মীদের দুরে সরিয়ে দিয়ে নেশাখোর,বিএনপি,হাইব্রিডসহ দুর্নীতিবাজদের নিয়ে আওয়ামীলীগের কমিটি গঠন করা হয়েছ্।ে এখন প্রকৃত আওয়ামীলীগ কর্মী সমর্থকরা দুরে সরে গেছেন।
বাগাতিপাড়ার লোকমানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হুমায়ন কবির আরো বলেন, তার ভাই ১৯৯৬ সালে লোকমানপুর রেল-লাইন এর ওপর জনতার মুক্ত মঞ্চ তৈরি করেন এবং এক মাস ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখেন। তাদের পরিবার আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে সাথে ছিল। সুসময়ে তাদের কোন সুযোগ দেয়া হয়নি। তাই বর্তমান এমপি বকুল ও সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদকে আর মনোনয়ণ না দিয়ে তাকে মনোনয়ন দেয়ার জন্য তিনি দাবী জানান। তিনি বাগাতিপাড়ার উন্নয়নে কাজ করতে চান বলেই আগামী নির্বাচনে এমপি প্রার্থী হতে চান। আওয়ামীলীগ আমাকে মনোনয়ন দিলে আমি বিজয়ী হব শতভাগ। বিজয়ী হলে রাস্তা ঘাটের উন্নয়নের পাশাপাশি লোকমানপুর ও মালঞ্চি স্টেশনে আন্তনগর ট্রেন থামানোর ব্যবস্থা করবেন। মালঞ্চী,লোকমানপুর ও আব্দুলপুরের মাঝে একটি বাইপাস রেল স্টেশন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *