
নাটোরে সড়ক দূর্ঘটনায় ১৫ যাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যুর তিন দিন পরও সড়ক দাঁপাচ্ছে থ্রি- হুইলার। দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দেয়া এ সড়ক দূর্ঘটনার তদন্তে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত তদন্ত দল জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সংলগ্ন নাটোর সার্কিট হাউজে অবস্থানকলেই অদূরে নাটোর-বগুড়া মহাসড়কে বহাল তবিয়তে চলতে দেখা গেছে সিএনজি, অটোরিক্সা, ভ্যান ও লেগুনা।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই নাটোর-বগুড়া, নাটোর-ঢাকা ও নাটোর-রাজশাহী মহাসড়ক ঘুরে দেখা গেছে, দায়িত্বরত পুলিশের সামনেই চলাচল করছে ভ্যান, লেগুনা, ভুটভুটি, ইজিবাইক, রিক্সা ও সিএনজি। শহরের ভেতরে রিক্সা ও ইজিবাইক চলাচলে বাধা নিষেধ না থাকলেও মহাসড়কে স্বাচ্ছন্দ্যেই সেগুলো চলাচল করছে।
বেলা সাড়ে ১১টায় শহরের মাদ্রাসামোড় থেকে অনান্য দিনের মতোই বগুড়ার উদ্দ্যেশ্যে ছেড়ে গেছে একাধিক সিএনজি, ইজিবাইক এবং লেগুনা। রুটটির শুরু থেকেই থ্রি হুইলার চলাচলে কোন বাঁধা দেয়া হয়নি। তবে পথিমধ্যে সিংড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে কাগজপত্র যাচাইয়ের নামে চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। মাঝপথে চেকিংয়ের নামে চলাচল বন্ধে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ যাত্রীরা।

অপরদিকে, নাটোর ঢাকা মহাসড়কেও দেখা গেছে একই চিত্র। শহরের হরিশপুর বাইপাস থেকে কেন্দ্রিয় বাস টার্মিনাল পর্যন্ত তিন চাকার যান রিক্সা ও ইজিবাইক স্বাভাবিকভাবে চলার কথা থাকলেও দেখা গেছে ভুটভুটি, সিএনজি ও ইজিবাইক চলাচল করতে। মঙ্গলবার দুপুরে ওই সড়কে চলাচলের সময় পুলিশ লাইনের সামনে অস্থায়ী চেকপোস্টে চেকিংয়ের তেমন কার্যক্রম দেখা যায়নি। বরং পুলিশের সামনেই কোনরকম বাধা ছাড়া চলেছে এসব তিন চাকার যান। শহরের দত্তপাড়া এলাকায় বাসের সাথে পাল্লা দিয়ে সিএনজি চলাচল করতে দেখা গেছে।
নাটোর-রাজশাহী মহাসড়কে অনান্য দিনের মতো থ্রি-হুইলার চলতে দেখা গেলেও সংখ্যায় সেগুলো কমেছে। রাজশাহীর পুঠিয়া থানা পুলিশ তিন চাকার যানগুলো আটক করে পানিতে ফেলার কারণে কমেছে সিএনজি ও লেগুনা চলাচল। তবে অটোরিক্সার চলাচল বন্ধ হয়নি। শহরের বনবেলঘরিয়া পশ্চিম বাইপাস থেকে হরিশপুর বাইপাস পর্যন্ত চলাচলে ইজিবাইক দেখা গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হরিশপুর এলাকায় দায়িত্বরত এক ট্রাফিক কন্সটেবল জানান, মহাসড়কে থ্রি-হুইলার রোধে উপরের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। এটি বাস্তবায়নে জিরো টলারেন্স নীতি মানা হচ্ছে। তবুও মানুষের আইন না মানার মানসিকতায় এসব কঠোর পদক্ষেপের সুফল দৃশ্যমান হচ্ছে না। অবৈধ যানবাহনের বিপরীতে ট্রাফিকের জনবল কম বলে আইন অমান্যকারীদের সবসময় শাস্তির আওতায় আনা যাচ্ছে না। তবে পুলিশের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।
পরিবহন শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তিনচাকার যানগুলোর প্রায় প্রতিটিরই ফিটনেস ও লাইসেন্স সনদ থাকলেও নেই রুট পারমিট। রুট পারমিটের জন্য সেগুলো চলাচল করতে দিচ্ছে না পুলিশ।

নাটোর জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক মিঠুন আলী বলেন, ‘ হুটহাট যান চলাচল বন্ধ করা ঠিক না। মানুষের দূর্ভোগের কথাও ভাবা দরকার। বরং ছোট যানগুলো চলাচলের জন্য আলাদা লেন করা দরকার।’
জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাগর ইসলাম বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেও রাস্তায় তিন চাকার যান চলাচল বন্ধ করতে পারিনি। বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে অবৈধ যান চলাচলের অনুমতি দেয়া মানেই মানুষের জীবন চালকদের হাতে তুলে দেয়া। মহাসড়কে এসব যান বন্ধে আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে যে কোন সহযোগিতা করতে প্রস্তত আছি।




