ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন রুদ্ধ করতেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয় – প্রতিমন্ত্রী পলক

নাটোর অফিস ॥
নাটোরের সিংড়ায় বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের উপজেলা শাখার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলা পরিষদ হলরুমে অনুষ্ঠিত ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন সভায় প্রধান অতিথিা বক্তৃতায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের ভাষণে সকল ধর্মের মানুষের অংশগ্রহনে দেশগড়ার দিক নির্দেশনা দিয়েছিলেন এবং সংবিধানের মূলনীতির মধ্যে ধর্মনিরপেক্ষতা সংযোজন করেন। অথচ স্বাধীনতা বিরোধীরা ৭৫ এর ১৫ আগষ্ট প্রগতিশীল ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র গঠনের বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে রুদ্ধ করতেই তাঁকে হত্যা করেছিল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীরা তাদের নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সে সময়ের ক্ষমতাসীন সরকারগুলো বারবার ধর্মীয় উস্কানী দিয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। ধর্মনিরপেক্ষতার মূলনীতিকে বিকৃত করে অপপ্রচার চালিয়েছে। অথচ বঙ্গবন্ধু সব সময় বলেছেন, ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। ২০০৯ সালে বঙ্গবন্ধুর কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠনের পর সংবিধানের মূলনীতি ধর্মনিরপেক্ষতাকে গুরুত্ব প্রদান করে বৈষম্যমুক্ত দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করেন। সকল ধর্মের মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বর্তমানে দেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। দেশের মানুষের মাথাপিছু জাতীয় আয় ৫০০ ডলার থেকে বেড়ে দুইহাজার ডলার ছাড়িয়েছে। করোনাকালে অনেক উন্নত দেশের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়লেও প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য ও দূরদর্শী নেতৃত্বে করোনা পরিস্থিতি সফলতার সাথে মোকাবেলা করা সম্ভব হয়েছে। সময়মত টিকা আমদানীর ফলে দেশে ইতোমধ্যে ৪০ লাখ মানুষ করোনার টিকা গ্রহন করতে পেরেছেন। উন্নয়নের পথ পরিক্রমায় আমরা উন্নয়নশীল দেশের মাইলফলক স্পর্শ করেছি। ২০৩১ সালে বাংলাদেশ হবে উন্নত মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে হবে উন্নত দেশ। এসময় দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় হবে অন্তত সাড়ে বারোহাজার ডলার। তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ভাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আজন্ম লালিত স্বপ্নের সোনার বাংলার আধুনিক রূপায়ন ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গঠনের পদক্ষেপ গ্রহন করেন। এর সুফল হিসেবে বর্তমানে ১৭ কোটি মানুষের হাতে মোবাইল ফোন রয়েছে, ১১ কোটি মানুষের ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে। করোনাকালে দেশের শিক্ষার্থীরা অনলাইনে পড়াশুনা করছে, ই-ফাইল কার্যক্রম চালুর ফলে সকল অফিসে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ চলেছে। ভার্চুয়াল আদালতে বিচারিক কাজ চলেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের কার্যক্রম দেশের মানুষের জীবনকে সহজ ও সুন্দর করছে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিংড়া পৌর মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের জেলা কমিটির সভাপতি চিত্তরঞ্জন দাস, সাধারণ সম্পাদক খগেন্দ্র নাথ রায়, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওহিদুর রহমান শেখ, পুজা উদযাপন কমিটির সভাপতি গোপাল বিহারী দাস, সাধারণ সম্পাদক চাঁদ মোহন হালদার প্রমূখ।
সম্মেলনে অধ্যাপক শীতল কুমার সভাপতি এবং অ্যাডভোকেট মানসী ভট্টাচার্জকে সাধারণ সম্পাদক, পংকজ কুমারকে ১ নং যুগ্ম সম্পাদক ও রবিন কুন্ডুকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। পরে রুপ কুমারকে সভাপতি ও স্বপন কুমারকে সাধারণ সম্পাদক করে ছাত্র ঐক্য পরিষদ গঠন করা হয়।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *