
ভেষজ উদ্ভিদ এলোভেরার পাতা না তুললে তা জমিতে পচে নষ্ট হয় এবং গাছটিকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই গাছ বাঁচাতে কোটি টাকার এলোভেরা পাতা তুলে ফেলে দিয়েছেন চাষীরা। মাসাধিকাল লকডাউনে ক্রেতা না থাকায় এভাবেই দেশের ঔষধি গ্রাম হিসেবে পরিচিত নাটোরের লক্ষীপুর-খোলাবাড়িয়া ইউনিয়নে উৎ’পাদিত ৮ কোটি টাকার এলোভারা নষ্ট হয়েছে। উৎপাদনের ভরা এ মৌসুমে জমিতে চাষী ও শ্রমিকদের চিরাচরিত কর্মচাঞ্চল্য নেই। এতে প্রায় সাড়ে চার হাজার চাষী, ব্যবসায়ী, হকার ও শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন।
জানা যায়, ঔষধি গ্রাম খ্যাত নাটোর সদর উপজেলার লক্ষীপুর খোলাবাড়িয়ার ইউনিয়নের ১৬ গ্রাম জুড়ে চাষ হয় অ্যালোভেরা, শিমুল মূল, অর্জুন, বাসকপাতা, কালোমেঘ, লজ্জাবতী, অশ্বগন্ধাসহ ২২ প্রজাতির ভেষজ উদ্ভিদ। শুধু এলোভেরা চাষ হয় এক হাজার ৫০ একর জমিতে চাষ হয়।

এলোভেরা চাষী শাহ আলম বলেন, লকডাউনের কারনে কোনা বেচা সম্পূর্ণ বন্ধ। জমিতে আগাছা জন্মে এলোভেরা পাতা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জমি পরিচর্যাও করতে পারছিনা। অধিকাংশ চাষী তাদের জমিতে লাগানো অ্যালোভেরা গাছের পাতা কেটে ফেলে দিচ্ছেন।
অপর চাষী কামাল হোসেন বলেন, এই ঔষধী গ্রাম থেকে আগে প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ টন এলোভেরা দেশের বিভিন্ন স্থানের ক্রেতারা কিনে নিয়ে যেত। লকডাউনের পর থেকে এলাকায় কোন বেচা কেনা নেই। ফলে জমিতেই থেকে যাচ্ছে এলোভেরার পাতা। জমি ঠিক রাখতে পাতাগুলো ভেঙ্গে নদীতে ফেলে দেয়া হচ্ছে।

চাষী শাহ আলম রনি জানান, গত ২২শে মার্চ থেকে এ পর্যন্ত তার ৭ লক্ষাধিক টাকা লোকসান হয়েছে।
চাষী হাবিবুর রহমান বলেন, লকডাউনের জন্য দশ বিঘা জমিতে চাষকৃত এলোভেরা সেগুলো বিক্রি করতে পারছি না। গাছ বাঁচাতে শ্রমিক দিয়ে পাতা কেটে জমির পাশের নদীতে ফেলে দিচ্ছি। লকডাউনের এক মাসে যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হবেনা।
প্রতিদিন সকালে ভেষজ চাষীরা জমি থেকে এসব গাছগাছড়া সংগ্রহ করে সমিতির মাধ্যমে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যেতেন। পাশাপাশি সেগুলো বিক্রি হতো স্থানীয় হাট-বাজারে।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ বলেন, ঔষধি গ্রামের চাষীদের লোকসান সম্পর্কে অবগত হয়েছি। চাষীরা চাইলে তাদের ফসল বাজারজাতকরণে সহায়তা করা হবে। তবে এই মুহূর্তে আর্থিক প্রণোদনা প্রদানের সুযোগ নেই।



