নাটোর অফিস।।
নাটোরের লালপুর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে শিলাবৃষ্টিতে পাট, বোরো ধান, তিল, আমসহ ৪৬৪ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে পাটের বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১ মে) বিকেলে উপজেলার লালপুর, বিলমাড়িয়া ও দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নে হঠাৎ ৮ থেকে ১০ মিনিট বৃষ্টির সঙ্গে ব্যাপক শিলা বর্ষণ হয়।
শুক্রবার সকালে বিলমাড়িয়া ও দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নে বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে পাট, ধান, তিল ও শবজি ক্ষেত। কাঁচা-পাকা অবস্থায় থাকা বোরো ধান জমিতে পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। শিলাবৃষ্টিতে এসব ফসলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাটের ডগা ভেঙে গেছে। অনেক জমিতে ধানের শীষ ভেঙে পড়েছে। কৃষকের চোখেমুখে চরম হতাশা দেখা গেছে; যাদের অনেকেই এনজিও থেকে ঋণ করে এবং জমি লিজ নিয়ে চাষাবাদ করেছেন।
লালপুর উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য বলছে, গতকালের শিলাবৃষ্টিতে উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে উঠতি ৫৪ হেক্টর জমির বোরো ধান, ১৩৭ হেক্টর পাট, ৭৮ হেক্টর তিল, ১১ হেক্টর মুগ, ৩২ হেক্টর শাক সবজি, ২ হেক্টর পেঁপে ও ১৫০ হেক্টর জমির আমের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রাথমিক ভাবে নিরুপন করা হয়েছে।
উপজেলা পাইঁকপাড়া গ্রামের ধান চাষী আরজেদ আলী চোখেমুখে হতাশা নিয়ে বলেন, বৃষ্টির সঙ্গে ৮ থেকে ১০ মিনিট শিলা পড়ে। বৃষ্টি থামলে ক্ষেতে গিয়ে দেখি ধানের শীষের ৮০ ভাগ ধান ঝড়ে মাটিতে পড়ে গেছে। এতে আমার অনেক ক্ষতি হয়েছে। আমি ঋণ নিয়ে ধানের আবাদ করেছি। কি ভাবে ঋণ পরিশোধ করবো তাই ভেবে পাচ্ছি না।
একই এলাকার পাট চাষী সাইদুল ইসলাম বলেন, শিলাবৃষ্টির পরে জমিতে গিয়ে দেখি পাটের বেশি অংশের মাথা ভেঙে নুইয়ে পড়েছে। সমিতি থেকে মোট অংকের টাকা ঋণ নিয়ে মানুসের জমি লিজ নিয়ে এই পাট চাষ করেছিলাম এখন কি করে ঋণ শোধ করবো বুঝতে পারছি না।
ধান চাষী তাহিদুর রহমান বলেন, শিলাবৃষ্টিতে জমির পাট ও তিল বেশির ভাগ নষ্ট হয়ে গেছে। জমির ফসলের চিন্তায় রাতে ঘুমাতে পারছি না। এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে পাট চাষ করেছেন তিনি। আর্থিক ভাবে অনেক লোকসান গুনতে হবে তাকে।
লালপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রীতম কুমার হোড় বলেন, শিলাবৃষ্টিতে লালপুরের তিনটি ইউনিয়নের পাট, তিল, বোর ধান ও আমসহ ৪৬৪ হেক্টর জমির ফসল আক্রান্ত হয়েছে। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের নিয়ে পাট ও ধান ক্ষেত পরিদর্শন করেছেন। যে সমস্ত কৃষকের উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাদের একটি প্রাথমিক তালিকা করা হচ্ছে পরবর্তীতে কোনরকম সরকারি সহায়তা আসলে তাদেরকে সহায়তার আওতায় আনা যাবে বলেও জানান তিনি।