
অর্থাভাবে হামেদ আলীর বড়মেয়ে রুখসানার পড়ালেখা বন্ধ হয়ে গেলে সে গার্মেন্টস এ চলে যায় জীবিকার জন্য। সেখানে কর্মরত অবস্থায় এসএসসি পাশ করে। এখন সে শক্তি ফাউন্ডেশন নামের একটি বেসরকারী সংস্থার মাঠ কর্মী হিসেবে চাকুরির পাশাপাশি পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে নিজ খরচে। আর মেজ মেয়ে সুরমা কে নাটোর দিঘাপতিয়া শিশু সদনে পাঠান মা রেনুকা। সেখান থেকে সে এসএসসি পাশ করে। এখন সে দিঘাপতিয়া এমকে কলেজে এইচএসসির ১ম বর্ষে পড়ালেখা করছে। বাড়ি থেকে প্রতিদিন যেতে খরচ ৭০ টাকা। এ টাকা দেয়ার মত সামর্থ্য নাই। তাই কলেজে যাওয়া প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে তারও। আর ছোট মেয়ে মালা বিলদহর উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রেণির ছাত্রী।
দুই মেয়ের পড়ালেখার সব খরচ বহন করতে হয় মুক্তিযোদ্ধা স্ত্রী রেনুকাকে। সে অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালান। নুন আনতে পান্তা ফুরায় এমন অবস্থায় দিনাতিপাত করছেন তারা। তার পরিবার পায় না কোন সরকারী ভাতা। স্বামী মারা যাবার বিধবা ভাতা ও জোটেনি।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা মজিবর রহমান বলেন, ‘আমরা ভারতে ৮ জন প্রশিক্ষণে ছিলাম, এর মধ্য হামেদ আলীও ছিলো। তার সাথেই আমি যুদ্ধে অংশ নিই। সে একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা।
কলম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মঈনুল হক চুনু বলেন, ‘আমি তাকে চিনি, সে কার্ড রাষ্ট্রীয় স্বীকৃিত পাবার যোগ্য। বেঁচে থাকতে সে কিছুই পায়নি। পথে বসতে যাওয়া তার পরিবারের একটু ভালো থাকার জন্য যেন একটি ভাতা পাবার কার্ডের তাকে দেয়া যায়, সে ব্যবস্থা করবো।’
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল ওদুদ দুদু জানান, গত ১৮ ফ্রেবুয়ারী ২০১৭ সালে সিংড়ায় মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাচাই হয়। সে মোতাবেক ৪৪ জনের চুড়ান্ত নাম তালিকাভুক্ত হয়েছে। সেখানে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে হামেদের নাম রয়েছে। তাদের নাম মন্ত্রনালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। আশাকরি দ্রুত তাদের নাম গেজেটভুক্ত হবে এবং এই অসহায় পরিবারগুলো ভাতাভোগীর তালিকার আওতায় আসবে।



