
আমরা নামায রোজা করতাম জেনে সোমালিয়া দস্যুরা আমাদের ওপর নির্যাতন বা অত্যাচার কম করেছে। আমাদের জিম্মি করার পর দস্যুরা আমাদের ওপর অনেক অত্যাচার করতো। তবে যখন দেখেছে আমরা নিয়মিত নামায পড়ছি এবং রোজা রাখছি তখন তাদের মন নরম হয়। এরপর থেকে তারা নরম সুরে আমাদের সাথে কথা বলে এবং অত্যাচারের মাত্রা কমিয়ে দেয়। কখনও ভাবিনি আমরা জীবিত বাড়ি ফিরে আসব। ভেজা কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন সোমালিয়া জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত হওয়া সাধারণ নাবিক (ওএস) নাটোরের বাগাতিপাড়ার জয় মাহমুদ।
বুধবার সকালে জয় মাহমুদ তার গ্রামের বাড়ি নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার সালাইনগর ফিরে দক্ষিণপাড়া গ্রামে ফিরে আসে। জয় মাহমুদের ফিরে আসার খবর ছড়িয়ে পড়লে আত্মীয় সজন ও প্রতিবেশিরা তাকে এক নজর দেখার জন্য তার বাড়িতে ভিড় করে। জয় মাহমুদকে কাছে পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে ওঠেন সজন সহ প্রতিবেশীরা। তার ফিরে আসায় অনেকেই আনন্দ প্রকাশ করেন।

এদিকে জয় মাহমুদ স্বুস্থ্য ভাবে বাড়ি ফিরে আসাতে জয়ের সহপাঠিরা আনন্দ প্রকাশ করে।
জয়ের মা আরিফা বেগম বলেন, আমার বুকের ধন আমার বুকে ফিরে এসছে এটাই বড় আনন্দ। এর চেয়ে আনন্দের আর কিছু হতে পারে না। আল্লাহ য়ে আমার বুকের মানিককে ফিরে দিছে এই জন্য তার দরবারে লাখ লাখ শুকরিয়া জানায়। এবার আমদের কাছে ঈদ ছিলনা। বুকের ধন জয় জীবিতি ফিরে আসার অপেক্ষায় দিন কেটেছে। সে জীবিত বাড়ি ফিরে আসায় আমাদের এখন ঈদের দিন মনে হচ্ছে।

জয়ের বৃদ্ধ দাদি জানান, আমার নাতি বাড়ি ফিরে আসছে তাই মনে শান্তি পাচ্ছি। কত যে কান্দিচি তা বলে বুঝানো যাবেনা। আল্লঅহ পাক আমার নাতিকে দীর্ঘ জীবন দান করুর এটাই আমার চাওয়া।
উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে ভারত মহাসাগর থেকে জিম্মি হন বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর ২৩ জন নাবিক। এর মধ্যে জয় মাহমুদ একজন। ৩২ দিন জিম্মি থাকার পর মুক্তিপণ নিয়ে ১৪ এপ্রিল জাহাজটি ছেড়ে দেয় তারা। এরপর আরব আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরে পণ্য খালাস করে জাহাজটি। এরপর অন্য বন্দর থেকে নতুন পণ্য বোঝাই করে। সেখান থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার পর গত শনিবার জাহাজটি বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করে।



