
ঢেউটিনগুলি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিশ্রুত বিশেষ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত ‘জমি আছে ঘর নেই’ প্রকল্পের সুবিধাভোগিদের মাঝে বিতরণের জন্য বরাদ্দ ছিলো।
সরকারীভাবে মজুদ না করে ব্যক্তি জিম্মায় টিন রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এলাকাবাসী। তাদের দাবী, আত্নসাতের উদ্দেশ্যই শহরের ঘিঞ্জি এলাকা নবীনগরকে বেছে নিয়ে টিনগুলো মজুদ করা হয়।
বিষয়টি জানার পর সদর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তার নেতৃত্বে ওই বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ।
ঘটনাস্থলে গিয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দাবীর সত্যতা পায়নি সহকারী ভূমি কর্মকর্তা।
সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দাবী, চালানের সাথে প্রাপ্ত টিনের পরিমাণে সামঞ্জস্য না থাকায় জনৈক জামসেদ আলীর বাড়িতে টিনগুলো গণনা করার জন্য রাখা হয়েছিল।
অপরদিকে, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা জানান, চালানে উল্লিখিত পরিমাণেই টিন পাওয়া গেছে। তিনি আরো জানান, শুক্রবার রাতেই ঢেউটিনগুলি সরকারী জিম্মায় নিয়ে বিভিন্ন ইউপিতে বিতরণ করা হচ্ছে।
ঢেউটিন গ্রহন থেকে সরবরাহ পর্যন্ত জড়িত বিভিন্ন ব্যক্তির বরাত দিয়ে ট্রাক চালক ফারুক হোসেন জানান, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের আবুল খায়ের স্ট্রিপ প্রসেসিং লিমিটেড থেকে ক্রয় করা এক হাজার ৯৪৭ বান্ডিল ঢেউটিন ঢাকা মেট্রো-ড ১৪৫৯৮৮ নম্বরের ট্রাকের মাধ্যমে নাটোরে আসে শুক্রবার দুপুরে। টিনবাহী ট্রাকটির গন্তব্য ছিলো কাফুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ। তবে নাটোরের কাছাকাছি আসার পর উপজেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা তাকে কাফুরিয়ার পরিবর্তে হরিশপুরে ট্রাক থামানোর নির্দেশ দেন। শুক্রবার দুপুরে হরিশপুর পৌছুলে উপজেলা পরিষদের এক অফিস সহায়ক ট্রাকটিকে শহরের নবীনগরের জামসেদ আলী নামের এক ব্যক্তির বাড়ির সামনে থামাতে বলেন। নির্দেশনা অনুযায়ী ওই বাড়ির সামনে ট্রাক নিয়ে আসেন চালক। জুম্মার নামাজ চলাকালীন সবার অলক্ষ্যে টিনগুলি জামসেদের বাড়ির একটি ঘর ও বারান্দায় মজুদ করা হয়।
খবরটি দ্রুত জানাজানি হলে সরকারী ঢেউটিন সরকারের হেফাজতে না রেখে কিভাবে একজন ব্যক্তির বাড়িতে মজুদ করা যায়, এ নিয়ে এলাকার মানুষদের মধ্যে সমালোচনা শুরু হয়।
সন্ধ্যার পর সেলিম রেজা নামের সদর উপজেলার এক কর্মচারী বিষয়টি জানার জন্য ওই বাড়িতে যান। স্থানীয়রা তার কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। এতে আরো বিক্ষুদ্ধ হয়ে পড়েন তারা। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে সদর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন।
এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার বানুর সাথে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, ‘বিতরণের সুবিধার্থে টিনগুলি এক ব্যক্তির বাড়িতে রাখা হয়েছিলো। তবে সেগুলো গণনার সময় সরবরাহ চালানে উল্লেখিত পরিমানের চেয়ে কম পাওয়ার অভিযোগ উঠে। এ ব্যাপারে অন্যকিছু ভাবার সুযোগ নেই।’
তবে সদর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা শামীম ভুঁইয়া ঢেউটিন কম থাকার বিষয়টি সত্য নয় জানিয়ে বলেন, “রাতের মধ্যেই সমস্ত টিন বিতরণ করা হবে।’
সরকারী হেফাজতে না নিয়ে ব্যক্তিগত জিম্মায় টিনগুলি কেন রাখা হলো জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা কোন সদুত্তর দিতে পানেননি।





