নাটোরে মেধাবী তানিয়াকে সততা ক্লিনিকের আর্থিক সহায়তা

নাটোর অফিস॥
নাটোর শহরের সততা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগণষ্টিকের স্বত্বাধিকারী আব্দুল আওয়াল রাজা মঙ্গলবার সকালে মেধাবী তানিয়াকে মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন। একই সাথে তিনি ভর্তির পর বই খাতা সহ অন্যান্য সহায়তার প্রতিশুতি দিয়েছেন। তানিয়ার মেডিকেল কলেজে ভর্তি না হতে পারার অনিশ্চয়তা বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন দেখে তিনি এই সহায়তা দেন। তানিয়ার বাবার সাথে ফোনে কথা বলে বিকাশের মাধ্যমে ওই টাকা দিয়েছেন। এছাড়া ঢাকাস্থ নর্দান ইন্সুরেন্স কোম্পাণীর ডেপুটি ম্যানেজার চৌধুরী গোলাম ফারুক ১৫ হাজার টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
তানিয়ার বাবা আবু তালেব জানান, তার মেয়ের বিষয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর অনেকেই তার সাথে যোগাযোগ করেছেন। সকলেই তার মেয়ের ভর্তির বিষয়ে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। প্রতিবেশীদের কাছে থেকে ও জমি বন্ধক রেখে প্রয়োজনীয় টাকা সংগ্রহ করে মেয়ে তানিয়াকে ভর্তি করানোর জন্য পটুয়াখালীর পথে থাকায় অনেকেই সাক্ষাত করতে পারেননি বলে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তাদের অনেকেই সহায়তা করার প্রতিশ্রতি দিয়েছেন। মেয়েকে পটুয়াখালি সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি করানোর পর শান্তি পাব। আবু তালেব তার মেয়ের জন্য সকলের কাছে সহায়তার পাশাপাশি দোয়া চেয়েছেন।
মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে তানিয়ার বাবা জানান, তার মেয়ে তানিয়ার ভর্তি সম্পুন্ন হয়েছে। শেষ পর্যন্ত হয়ত মেয়েকে ভর্তি করতে পারবেননা এমন আশংকায় ছিলেন দিনভর। হৃদয়বান ও প্রতিবেশীসহ স্বজনরা এগিয়ে আসায় মেয়েকে ভর্তি করতে পেরেছেন। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করে তিনি বলেন,সকলের কাছে তার পরিবার কৃতজ্ঞ।
তানিয়া খাতুন জানান, ভর্তি হতে পেরে তিনি খুব খুশী ও আনন্দিত হয়েছেন। চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পুরনে এক ধাপ এগিয়ে যেতে পেরে কিছুটা আনন্দ পাচ্ছি। যারা তাকে সহায়তা করেছেন তাদের সকলের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তাদের কাছে দোয়া চাইছি আমি যেন চিকিৎসক হয়ে স্বপ্ন পুরন করতে পারি।
এদিকে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার সংবাদ পেয়ে তানিয়ার পরিবারে আবারও আনন্দের বন্যা। প্রতিবেশীরাও তানিয়ার ভর্তি হওয়ার সংবাদে আনন্দিত হয়েছেন। সবাই আশা করছেন তানিয়া একদিন নামকরা ডাক্তার হয়ে এলাকার সুনাম ছড়াবে।
বাগাতিপাড়া উপজেলার কোয়ালীপাড়া গ্রামের দরিদ্র কৃষক আবু তালেবের দুই মেয়ে তানিয়া , তিশা এবং দুই ছেলে ৮ বছরের তামিম ও ৪ বছরের তরিকুল। যে এক বিঘা জমি চাষ করে তাদের সংসার চলতো। সেই জমি বন্ধক রেখে তানিয়াকে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে হয়েছে। অন্যদের সহায়তাও নিতে হয়েছে তানিয়াকে। আর্থিক দৈন্যতার মধ্যে তানিয়া তার ডাক্তার হওয়ার লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নে দারিদ্রকে জয় করতে চান।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *