বাগাতিপাড়ায় সরকারি আট দপ্তর ভারপ্রাপ্তের ভারে ভারাক্রান্ত

 


নাটোর অফিস॥
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ভারে ভারাক্রান্ত হয়ে পড়েছে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা প্রশাসন। এ উপজেলার গুরুত্বপুর্ণ সরকারি আট দফতরের কার্যক্রম চলছে ভারপ্রাপ্তদের দিয়ে। ফলে ওইসব দপ্তরে সেবা নিতে আসা লোকজন চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। উপজেলা প্রশাসনের অধীনে যেসব দপ্তর রয়েছে তার মধ্যে উপজেলা ভূমি অফিসসহ গুরুত্বপুর্ণ আটটি দপ্তরসমুহে কর্মকর্তা না থাকায় ভারপ্রাপ্ত ও অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে চলছে ওই সব দপ্তরের সরকারি কার্যক্রম। এরমধ্যে কয়েকটি দপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে ভারপ্রাপ্ত দিয়ে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ফলে সেবাপ্রত্যাশী লোকজন দিনের দিনের পর দিন ধর্ণা দিয়েও কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছেন না। দ্রুত এসব দপ্তরে দপ্তর প্রধানের পদায়ন চান সেবা প্রত্যাশীরা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় ও সংশ্লিষ্ট দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত বছর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার মেরিনা সুলতানা বদলী হন। এরপর থেকে ইউএনও ওই পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। সম্প্রতি ওই পদে পদায়নের আদেশ জারি হলেও সহকারী কমিশনার (ভূমি) এখনও যোগদান করেননি। তবে তিনি করোনা আক্রান্তের কারনে যোগদান করতে পারেননি বলে জানা গেছে। অপরদিকে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের পদে ২০১৪ সালের পর থেকে ভারপ্রাপ্ত দিয়ে চলছে। ওই বছরের ৮ জুলাই পদটি শুন্য হয়। এরপর ২০১৫ সালের জুলাই মাসে নতুনভাবে ড. সাবরিনা আনমকে পদায়ন করা হয়। কিন্তু সেসময় থেকেই তিনি প্রেষণে (ডেপুটেশন) রাজশাহী উপপরিচালকের কার্যালয়ে কর্মরত রয়েছেন। ফলে পদায়ন থাকলেও ডেপুটেশনের কারনে দীর্ঘ সময় ধরে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। অন্যদিকে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার বদলীর পর ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারী থেকে পাশ্ববর্তী উপজেলার যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আবু হানিফ মিয়া ওই পদে অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছেন। একসাথে দুই উপজেলার দায়িত্বে তিনি হিমশিম খান। এছাড়াও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ পদও চলছে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে। প্রায় ২ বছর ধরে পার্শ্ববর্তা সিংড়া উপজেলার কর্মকর্তা আল আামিন অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। তাছাড়া মৎস্য কর্মকর্তা, আনসার ভিডিপি কর্মকর্তার পদও চলছে ভারপ্রাপ্ত দিয়ে। আর সাবরেজিষ্ট্রারের পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন বড়াইগ্রাম উপজেলার কর্মকর্তা। সম্প্রতি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রতন কুমার সাহা ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ থাকায় তাঁর পদে দায়িত্ব পালন করছেন আবাসিক মেডিক্যাল অফিসারের দায়িত্বে থাকা ডাঃ ফরিদুজ্জামান। এদিকে এর মধ্যেই মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হাবিবা খাতুনকে বদলীর আদেশ জারি করা হয়েছে, তবে কাউকে নতুন পদায়ন করা হয়নি। এর ফলে নতুন করে আরও একটি দপ্তর ভারপ্রাপ্তের ভারে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
উপজেলা চেয়ারম্যান অহিদুল ইসলাম গকুল বলেন, দপ্তরের প্রধান না থাকায় সাধারন জনগণ কাঙ্খিত সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াংকা দেবী পাল বলেন, কর্মকর্তাদের পদায়ন না থাকলেও ভারপ্রাপ্ত বা অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে ওই দপ্তরগুলোর কাজ চলমান রয়েছে। তবে একই সাথে দুই দায়িত্বে থাকা এসব কর্মকর্তাদের কাজের ক্ষেত্রে বাড়তি চাপের সৃষ্টি হচ্ছে। দপ্তর প্রধান পদায়ন থাকলে কাজে গতিশীলতা বৃদ্ধি পায় বলে তিনি মন্তব্য করেন। শিগগিরিই এসব পদে পদায়নের জন্য তিনি স্থানীয় সাংসদ শহিদুল ইসলাম বকুলসহ উর্দ্ধতন বরাবর যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *