লালপুরে আ’লীগ নেতার কান্ড!

নাটোর অফিস॥
নাটোরের লালপুরে ১০ টাকা কেজির চাউল নিতে গিয়ে লিখন নামে এক ক্রেতাকে ডিলার ও আওয়ামীলীগ নেতা মাহমুদুল হক মুকুল মারপিট করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিগত মার্চ মাস সহ দুই মাসের স্বাক্ষর নিয়ে শুধু চলতি মাসের বরাদ্দকৃত চাল দেয়ার প্রতিবাদ করায় লিখনকে মারপিট করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এব্যাপারে ই-মেইল এর মাধ্যমে লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে । এছাড়া অভিযোগের অনুলিপি নাটোরের জেলা প্রশাসক, লালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ , দুড়দুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সহ গণমাধ্যম কর্মীদের অবগতির জন্য পাঠানো হয়েছে । তবে ডিলার ও উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মাহমুদুল হক মুকুল এই অভিযোগকে বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে দাবি করেছেন।
এলাকাবাসী সহ ভুক্তভোগি সুত্রে জানা যায় , লালপুর উপজেলার দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নের জয়রামপুর গ্রামের প্রয়াত সাবেক ইউপি সদস্য লিয়াকতের ছেলে লিখন আলী বৃহস্পতিবার দুপুরে ১১৫৮ নং কার্ড নিয়ে ১০ টাকা কেজির চাউল নিতে ইউনিয়নের বিদিরপুর এলাকায় লালপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ডিলার মাহমুদুল হক মুকুলের বাড়িতে যান। এসময় লিখনের ওই কার্ডে মার্চ ও এপ্রিল মাসের স্বাক্ষর নেন ডিলার মাহমুদুল হক মুকুল। কিন্তু মার্চ মাসের বরাদ্দ না দিয়ে শুধু চলতি এপ্রিল মাসের বরাদ্দের চাউল দেয়া হলে লিখন মাচ মাসের চাউল না দেয়ার কারন জানতে চান। এতে ডিলার মাহমুদুল হক মুকুল ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং লিখনের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে আশালীন ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। এক পর্যায়ে লিখনের ওপর চড়াও হয়ে চর থাপ্পর ও কিল ঘুষি মেরে তাড়িয়ে দেন। পরে লিখন বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সহ তাদের সজনদের অবহিত করেন এবং এবিষয়ে প্রতিকার চেয়ে ই-মেইলের মাধ্যমে লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ পত্র প্রেরন করেন।
সুবিধাভোগীদের অনেকেই একই অভিযোগ করেছেন স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীসহ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে। জয়রামপুর গ্রামের ১১৬২ নং কার্ডধারী মিনু বেগম ও আত্বিকা গ্রামের ১২২৪ নং কার্ডধারী হাবিবুর জানান , তাদেরকেও মার্চ মাসের চাউল দেওয়া হয়নি। অথচ বিতরণ ঘরে দুই মাসের স্বাক্ষর করে নিয়েছেন ডিলার মুকুল ।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান অভিযোগ করার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান , ডিলার মাহমুদুল হক মুকুল দলীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে সাধারন মানুষের সাথে প্রায় সময়ই দুর্ব্যবহার করে থাকেন।
এবিষয়ে জানতে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানতে চাইলে ডিলার ও উপজেলা আওয়ামীলীগ যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মাহমুদুল হক মুকুল বলেন, তাকে রাজনৈতিকবাবে সম্মান ক্ষুন্ন সহ হেয় করার উদ্দেশ্যে প্রতিপক্ষরা এমন মিথ্যা কাহিনী প্রচার করছে। প্রকৃত সত্য হলো লিখন তার বাবা মরহুম ইউপি সদস্য লিয়াকত আলীর রিপ্লেসমেন্ট হিসেবে কার্ড পেয়েছেন। তার ডিলারশিপের অনুকলে এমন ৯ জন রয়েছেন। খাদ্য অফিস থেকে তাদের তালিকা দেয়ার পর চলতি মাসের চাউল বিতরন করা হয়। উপজেলা খাদ্য বিভাগের নির্দেশ ও পরামর্শ অনুযায়ী ওই ৯ জনের জন্য বরাদ্দকৃত চাউল মজুদ রাখা হয়েছে। তাদের কারো কাছে থেকে দুই মাসের কোন স্বাক্ষর নেয়া হয়নি বা কোন ধরনের মারপিটের ঘটনা ঘটেনি। তিনি স্থানীয় এমপি শহিদুল ইসলাম বকুলের একজন সমর্থক হওয়ায় তাকে হেনস্থা করতেই প্রতিপক্ষদের নির্দেশেই এমন মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।
এবিষয়ে জানতে উপজেলা খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা ডাবলুর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *