নাটোরে দিনব্যাপী কর্মশালায় ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গিকার

নাটোর অফিস ॥
নাটোরে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার প্রতিনিধিরা ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে কাজ করার অঙ্গিকার করেছেন। মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে জেলা টাস্কফোর্স কমিটির সদস্য ও কর্তৃত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদেরতামাক নিয়ন্ত্রন আইন বিষয়ক দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালায় শপথ গ্রহণ সহ এই অঙ্গিকার করা হয়। সকালে প্রশিক্ষণ কর্মশালার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন জেলা টাস্কফোর্স কমিটির সভাপতি মোঃ শাহরিয়াজ। অনুষ্ঠানে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়কারী মোঃ জিল্লুর রহমান চৌধুরী।
কর্মশালায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে করণীয় বিষয়ে সেশন উপস্থাপন করেন পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা, ধূমপান প্রতিরোধে জনসচেতনতা ও প্রচারণার গুরুত্ব বিষয়ে রিসোর্স পার্সন হিসেবে সেশন পরিচালনা করেন স্থানীয সরকার বিভাগের উপ পরিচালক মোঃ গোলাম রাব্বী, তামাকের কারনে সৃস্ট রোগ ও রোগের প্রভাব নিয়ে সেশন উপস্থাপনা করেন সিভিল সার্জন ডাঃ কাজী মিজানুর রহমান, ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইন ও বিধিমালা এবং ধূমপান প্রতিরোধে ভ্রাম্যমান আদালতের ভূমিকা বিষয়ে সেশন উপস্থাপন করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রহিমা খাতুন।
তারা বলেন, জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইন ও বিধিমালার কার্যকর প্রয়োগের ফলে দেশে তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার কমছে। স্বাস্থ্যের জন্যে ক্ষতিকর এসব দ্রব্যের ক্রম হ্রাসমান পর্যায়কে আরো বেগবান করে ২০৪০ সালের মধ্যে দেশকে তামাকমুক্ত করা হবে। তামাকে সারা দেশে ১২ লাখ মানুষ তামাকের কারনে আটটি প্রাণঘাতী, ব্যয়বহুল ও দীর্ঘমেয়াদী রোগে আক্রান্ত হয়। এরমধ্যে তিন লাখ ৮২ হাজার মানুষ পঙ্গুত্বের শিকার হয়। বছরে আমাদের দেশে এক লাখ ৬১ হাজার ২৫০ জন ব্যক্তি ধূপমান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের ফলে মারা যান। সারা বিশ্বে মৃত্যুর সংখ্যা ৭১ লাখ এবং পরোক্ষ মৃত্যুর সংখ্যা নয় লাখ। পারিবারিক ক্ষতি ছাড়াও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারে চিকিৎসা ব্যয় বেড়ে যায় বহুগুণে। দেশে তামাক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বছরে সরকারকে রাজস্ব দেয় পাঁচ হাজার কোটি টাকা। পক্ষান্তরে তামাক সেবনজনিত জটিলতার চিকিৎসায় সরকার ব্যয় করে সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা।
কর্মশালায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাজেদুর রহমান খান, পৌরমেয়র উমা চৌধুরী জলি প্রমুখ। বক্তারা বলেন,তামাক মাদক সেবনের প্রবেশ পথ হিসেবে প্রমাণিত। তামাক জীবন থেকে জীবন কেড়ে নেয়। তাই তামাকের ব্যবহার রোধ করতেই হবে। কর্মশালায় অংশ নেওয়া অর্ধশত প্রতিনিধি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করা সহ তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে কাজ করে যাওয়ার অঙ্গিকার করেন।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *