নাটোরে ৩৫০ মাছের ঘের পানিতে বিলীন, ক্ষতি সাড়ে ৩ কোটি টাকা

নাটোর অফিস॥ মৎস্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের সিংড়া উপজেলায় বন্যার পানিতে প্রায় তিন শতাধিক মাছের ঘের ভেসে গেছে। এতে আড়াই শতাধিক মাছ চাষী ও তাদের উপর নির্ভারশীল কয়েকশত পরিবার আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। আংকিক মূল্যে শুধু মাছের ক্ষতিই সাড়ে ৩ কোটি টাকা।

সিংড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ পর্যন্ত সিংড়ার প্রায় ২৫০ জন মাছ চাষীর ৩৫০টি পুকুরের ঘের পানিতে বিলীন হয়েছে। এসব পুকুরে চাষকৃত ১২০ টন মাছ ও এক মেট্রিক টন পোনামাছ পানিতে ভেসে গেছে।

জানা যায়, গত এক সপ্তাহ ধরে সিংড়ায় বন্যার পানি বৃদ্ধি শুরু হলেও ১৫ই জুলাই বুধবার শেরকোল তেমুখ নওগাঁ সড়ক বাঁধে ভাঙ্গনের ফলে শেরকোল ও তাজপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়। লোকালয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করায় এই দুই ইউনিয়নের বিভিন্ন পুকুরে তৈরী দুই শতাধিক করা ঘেরের কার্প জাতীয় মাছগুলো ভেসে যায়। এছাড়া চামারী ইউনিয়নের আনন্দনগর গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় ঐতিহ্যবাহী বিলদহর বাজার ও আশেপাশের এলাকার শতাধিক মাছের ঘের বন্যার পানিতে ভেসে যায়।

এদিকে মাছ চাষীরা মনে করছেন, কৃষি খাতের মতো মৎস্য খাতে প্রয়োজনীয় প্রণোদনার ব্যবস্থা না থাকায় বিপুল পরিমাণ এই ক্ষতির বিপরীতে কোনোরুপ আর্থিক প্রণোদনার সম্ভাবনাও নেই।

শেরকোল ইউনিয়নের শিববাড়ি গ্রামের মাছচাষী মিলন হোসেন জানান, হঠাৎ বন্যায় তার মাছের ঘেরটি পানিতে বিলীণ হয়ে গেছে। মাছ বড় হওয়ায় জাল টেনে টেনে কিছু মাছ রক্ষা করা গেছে।

চামারী ইউনিয়নের আনন্দনগর গ্রামের মাছচাষী আব্দুল গফুর জানান, বন্যার পানিতে তার ৪ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তিনি মাছের চাষ শুরু করেছিলেন। আর কিছুদিন পর মাছগুলো বাজারে তোলা যেত।

সিংড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা ওয়ালী উল্লাহ বলেন, আমরা চাষীদের ক্ষয়-ক্ষতির ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করছি। তবে আপতত মাছচাষীদের জন্য কোনো ভালো খবর নেই। কৃষির মতো মৎস্য খাতে সরকারের ক্ষতিজনিত প্রণোদনা না থাকায় এ খাতে ক্ষতিপূরণের কোন পরিকল্পনা নেই। তবে ভবিষ্যতে সরকার কোনো সিদ্ধান্ত নিলে ক্ষতিগ্রস্ত চাষীরা অবশ্যই তা জানতে পারবেন।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *