নাটোরে ৭৫’র থমথমে ১৫ই আগস্ট এবং তারপর…….

দিনটি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট। কাকডাকা ভোরে ঘুম ভেঙে যায় চমকে ওঠার মত একটি খবর শুনে। প্রতিবেশীর দেওয়া খবরটি প্রথমে বিশ্বাস করতে পারিনি। মনে হচ্ছিল স্বপ্ন-টপ্ন দেখছিনাতো!
নাটোর শহরের আলাইপুর মহল্লার বাড়িতে রাস্তা সংলগ্ন ঘরে ঘুমিয়ে ছিলাম। প্রতিদিনের মত ঘরের এক পাশের জানালা খোলা ছিল। রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্টতার কারনে অনেক রাতে ঘুমাতে যেতাম। ঘরের পাশে রাস্তায় দাঁড়ানো প্রতিবেশীদের নানা গুঞ্জনে ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ার পর খবরটি কানে আসে। বিশ্বাস করতে পারছিলাম না বলেই জানালা দিয়ে এক প্রতিবেশীর কাছে খবরটি জানার চেষ্টা করি। এসময় আমার মা ঘরে ঢুরে খবরটি নিশ্চিত করে বললেন রেডিওতে প্রচার হচ্ছে। বিছানা ছেড়ে উঠে রেডিও চালু করতেই মেজর ডালিমের কন্ঠে ভেসে আসে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার কথা। মেজর ডালিমের কন্ঠে শেখ মুজিবকে হত্যা করার সেই বাক্যটি শুনে শরীরের রক্ত চলাচল যেন থমকে যায়। বেশ কিছু সময় পর স্বাভাবিক হয়ে প্রকৃতির কাজ সারতে যাই। প্রকৃতির কাজ শেষে বাড়ির কুয়ার পানিতে গোসল সারতেই মা নাস্তার জন্য ডাকলেন। আলু ভাজি দিয়ে রুটি খেতে বসে রুচি হচ্ছিলনা। এসময় বঙ্গবন্ধুকে হত্যার কথা বলতে বলতে আমার প্রিয় বন্ধু মীরপাড়া মহল্লার মরহুম তাজুল ইসলাম তাজু বাড়িতে ঢোকে। এক লোকমা রুটি ছিড়ে মুখে পুড়ে তাজুর কথায় শহরে বের হলাম। চারিদিকে থমথমে ভাব। বিভিন্নস্থানে মানুষের জটলা। অনেকেই নিচু স্বরে কথা বলছেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই পাল্টে যায় নাটোর শহরের পরিবেশ। চারিদিক থেকে ভেসে আসতে থাকে রেডিওর শব্দ। এদিন দিনমজুর শ্রেনীর মানুষগুলো ছুটে যান রেডিওতে খবর শুনতে। ইতোমধ্যে আমাদের সাথে যোগ দেন আমার শিশুকালের বন্ধু ও রাজনৈতিক সহকর্মী মরহুম রুহুল আবেদীন হীরা, মরহুম খাইরুল ইসলাম, খালেদ চৌধুরী, মরহুম দেলোয়ার হোসেন বাচ্চু (যিনি কাঁচা গোল্লা বাচ্চু নামে বেশী পরিচিত ছিলেন) এবং নাটোরে বেড়াতে আসা বন্ধু কুষ্টিয়ার জজ।
আমারা সবাই পরিস্থিতি দেখতে শহরের প্রাণকেন্দ্র ট্রাফিক মোড় ( ছায়াবানী সিনেমা হলের মোড়) এলাকায় গিয়ে অবস্থান নেই। এক সময় কাঁচাগোল্লা বাচ্চুর ইচ্ছায় নিমতলার দুলাল পালের মিষ্টির দোকানে গিয়ে বসি এবং কাঁচাগোল্লার অর্ডার দেওয়া হয়। খাওয়া শেষে বিল দেওয়া নিয়ে শুরু হয় আমাদের মধ্যে ঠেলাঠেলি। একপর্যায়ে রসিকতার ছলে বাচ্চু বলে আজ বঙ্গবন্ধুকে মেরে ফেলা হয়েছে তাই বিল দিতে হবেনা। দায়িত্ব নিয়ে বাচ্চুই দোকান মালিককে মানিয়ে নেয়। ফিরে আসি নাটোর পৌরসভা এলাকায়। তখন খোঁজ নেওয়া শুরু হয়েছে রাজনৈতিক নেতাদের কে কোথায় অবস্থান করছেন। থমথমে ভাব বিরাজ করায় বাজারে জিনিসপত্রের দামও পড়তে শুরু করে। ওই সময় ৪ থেকে ৬ টাকার এক সের চালের দাম কমে দেড় থেকে ২ টাকায় গিয়ে দাঁড়ায়।
আমরা সবাই গিয়ে বসি নাটোরের নবনির্বাচিত গভর্নর সাবেক সংসদ সদস্য ও পৌর চেয়ারম্যান শংকর গোবিন্দ চৌধুরী বাড়ি সংলগ্ন সেসময়ের তথ্য অফিসের বারান্দায় যা বর্তমানের সোনালী ব্যাংকের প্রধান শাখা। উৎসুক মানুষকে শংকর কাকার বাড়ির দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে আমরাও এগিয়ে যাই। বাড়ির সকল সদস্য অজানা আশংকায় ডুকরে ডুকরে কেঁদে চলেছেন। শ্রদ্ধেয় কাকীমা অনিমা চৌধুরী আমাকে কাছে ডেকে জানতে চাইলেন তোর কাকার খোঁজ খবর পেয়েছিস কি-না? আমি শুধু তাকে সান্তনা দিয়ে সটকে পড়লাম।
নাটোর পৌরসভার বর্তমান মেয়র প্রয়াত শংকর চৌধুরীর তৃতীয় মেয়ে উমা চৌধুরী সেদিন ছিলেন স্কুল ছাত্রী। ১৫ আগষ্টের স্মৃতিচারণ করে বললেন,৭৫ এর ১৫ আগষ্টে তার বাবা ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। সকালে স্কুলে গেলে স্কুল ছুটি দিয়ে সবাইকে বাড়ি চলে যেতে বলা হয়। ক’জন সহপার্টির সঙ্গে ফৌজদারীপাড়ার রাস্তা দিয়ে তিনি বাড়ি চলে আসেন। পথেই জানতে পারেন বঙ্গবন্ধুকে হত্যার খবর। বাড়িতে এসে বাবার কথা ভেবে অন্যদের মত তিনিও কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। অনেকের কাছেই বাবার খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। সেদিনের সেই ভয়াবহ সংবাদে তাদের পরিবারের সদস্যদের অজানা আশংকায় দিন কাটাতে হয়েছে। অস্থিতিশীল ও থমথমে পরিবেশের মধ্যেও অনেকেই সেদিন তাদের সান্তনা দিতে এসেছিলেন। বহু চেষ্টার পর বাবার অবস্থান তারা জানতে পারেন বলে জানান উমা চৌধুরী জলি।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ক’মাস আগে বাকশাল গঠন সহ বিভিন্ন জেলায় গভর্নর নিয়োগ হওয়ায় নাটোরের অধিকাংশ নেতা-নেত্রী ১৫ আগষ্টের এই দিনে ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। নাটোরের গভর্নর হিসেবে নির্বাচিত হন প্রয়াত নেতা আমাদের শ্রদ্ধাভাজন শংকর গোবিন্দ চৌধুরী। গভর্নর প্রশিক্ষণের জন্য তিনি ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। প্রশিক্ষণের সময় তিনি বর্তমান সংসদ ভবনের এমপি হোস্টেরের ৬ নং ব্লকে ছিলেন।
গভর্নর শংকর গোবিন্দ চৌধুরীর এপিএস (রাজনৈতিক) সিংড়া উপজেলার চৌগ্রামের মঞ্জুর আলম হাসুর দেওয়া তথ্যমতে ৭৫ এর ১৫ আগষ্ট গর্ভনর প্রশিক্ষণের শেষ দিন ছিল। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার বিষয়টি জানতে পারেন। সান্ধ্য আইন জারি থাকায় তারা বের হতে পারেননি। একঘন্টার জন্য সান্ধ্যআইন শিথিল করা হলে গভর্নর শংকর চৌধুরীকে নিয়ে হাসু তার বড় ভাই জাহিদুল আলমের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন। শংকর চৌধুরী পরবর্তীতে গিয়ে ওঠেন তার এক বন্ধুর বাড়িতে। প্রায় তিন মাস আত্মগোপনে থাকার পর তিনি গোপনে নাটোরে আসেন।
১৫ আগষ্ট নাটোর জেলা বাকশাল সেক্রেটারি সিংড়া আসনের এমপি বর্ষিয়ান আশরাফুল ইসলাম ঢাকায় নাখালপাড়া পুরাতন সংসদ ভবন এলাকায় এমপি হোষ্টেলে অবস্থান করছিলেন। কারফিউ শিথিল হওয়ার সুযোগে ঘটনার দু’দিন পর তিনি গোপনে নাটোরে আসেন। কিন্ত তিনি নিজেকে গোপন রাখতে পারেননি। নাটোরে আসার ক’দিন পর তাকে পুলিশ গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়। তিনি দির্ঘদিন কারাভোগ করেন।
জেলা বাকশাল যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মাজেদুর রহমান চাঁদ অবস্থান করছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিদেশে যাওয়ার এনওসিসহ ব্যবস্থা করতে বঙ্গবন্ধুর পরামর্শে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করার সময় ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়। সকালে ঘুম থেকে ওঠার অনেক পর জানতে পারেন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার খবর। পরিস্থিতি জানতে রাজশাহী শহরের দলীয় নেতা কর্মীদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন তিনি। পরে নাটোরে প্রবেশের চেষ্টা করেন। কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এবং নাটোরের অন্যান্য নেতাদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে না পেরে পাবনার পাকশী এলাকায় গিয়ে দলীয় নেতা কর্মীদের সংঘঠিত করার চেষ্টা করেন বলে জানান মাজেদুর রহমান চান। পরে রংপুর দিনাজপুর হয়ে ঢাকায় গিয়েও সফল হতে পারেননি। এক সময় তিনি প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে চলে যান।
৭৫ এ নাটোরের চার সংসদীয় আসনের মধ্যে সে সময়ে নাটোর ও বাগাতিপাড়া থানা নিয়ে গঠিত সদর আসনের এমপি ছিলেন সাইফুল ইসলাম, লালপুর ও বাঘা থানা নিয়ে গঠিত আসনের এমপি ছিলেন জিল্লুর রহমান, বড়াইগ্রাম ও গুরুদাসপুর আসনের এমপি ছিলেন রফিক উদ্দিন সরকার এবং পিপরুল ইউনিয়ন সহ সিংড়া আসনের এমপি ছিলেন আশরাফুল ইসলাম। ১৫ আগষ্টের সময় নাটোরের চার এমপির মধ্যে সদরের এমপি সাইফুল ইসলাম ব্যাতিত অন্য তিন এমপি ও নবনির্বাচিত গভর্নর শংকর গোবিন্দ সহ দলের অধিকাংশ নেতা ঢাকায় ছিলেন।
যে রাতে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয় সেই দিন এমপি সাইফুল ইসলাম সহ জেলার অনেক নেতা কর্মী রাজশাহীতে ছিলেন। মর্মস্পর্শি ওই রাতে সাইফুল ইসলাম বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। রাজশাহীতে এমপি সাইফুল ইসলামের বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে সেসময়ে জেলা যুবলীগ সভাপতি ও পরবর্তীকালের জাতীয় পার্টির দু’বারের সংসদ সদস্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মজিবর রহমান সেন্টু সহ অনেকেই রাতেই নাটোরে ফিরে আসেন। সেদিন যারা এমপি সাইফুল ইসলামের বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে নাটোরে ফিরে আসেন তাদের মধ্যে ছিলেন যুবলীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা শেখ আলাউদ্দিন, মরহুম জবান আলী, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মরহুম আব্দুস সাত্তার,মরহুম রুহুল আবেদীন হীরা, আব্দুল মান্নান, মোহম্মদ সেলিম সহ অনেকে। তারা মধ্য রাতে রাজশাহী থেকে নাটোরে আসলেও বঙ্গবন্ধু হত্যার খবর জেনেছেন সকালে। এদিকে রাজশাহীতে শ্বশুরালয়ে অবস্থান করার সময় ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার খবর পাওয়ার পর এমপি সাইফুল ইসলাম ঢাকায় চলে যান। সাইফুল ইসলাম জানান, ঢাকায় কিছুদিন থাকার পর পরিবেশ ও পরিস্থিতি বুঝে তিনি নাটোরে চলে আসেন এবং আদালতে আইন পেশা শুরু করেন। কিন্তু একটি পুরাতন মামলা চাঙ্গা করে তাকে গ্রেফতারের প্রক্রিয়া শুরু হলে তিনি আদালত থেকে জামিন নেন।
১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর একাধিকবার সেনা অভ্যুত্থানের কারনে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করতে থাকে। ইত্যবসরে আইনশৃংখলা বাহিনীর তৎপরতা বেড়ে গেলে নাটোরে অবস্থান করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। নাটোরে অবস্থানরত আওয়ামীলীগের অনেক নেতা কর্মী গা-ঢাকা দিতে শুরু করেন। অবস্থা অনুকলে নয় বিষয়টি আঁচ করতে পেরে বন্ধু মরহুম রুহুল আবেদীন হীরার সাথে কুষ্টিয়ার তার নিকটাত্মীয়ের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হই। কুষ্টিয়ায় অবস্থানের সময় দেখা হয় শেখ আলাউদ্দিনের সাথে। মাসাধিককাল অবস্থানের পর নাটোরে ফিরে আসি। পরিবেশ পরিস্থিতি হলেও আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীদের মধ্যে গ্রেফতার আতংক বিরাজ করতে থাকে। ওই সময় নাটোরে আইন শৃংখলার দায়িত্ব পালনের জন্য মেজর রফিকের নেতৃত্বে একদল সেনা সদস্য নাটোরের দিঘাপতিয়া রাজবাড়ির উত্তরা গণভবনে অবস্থান নেয়। তখন পৌরসভা কার্যালয়ের পূর্ব পার্শ্বে অমুল্যর রেষ্টুরেন্ট ছিল। একদিন সকালে ওই রেষ্টুরেন্টে নাস্তা করার সময় মেজর রফিক সাদা পোশাকে এসে আমাকে ধরে নিয়ে যান গণভবনে। সেখানে কুমার ভবনের সামনে পোঁতা একটি খুঁটির সাথে আমাকে বেধে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। নাটোরের আওয়ামলীগ নেতা-নেত্রীদের অবস্থান জানালে আমাকে ছেড়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন মেজর রফিক। দিনভর এভাবে বেঁধে রেখে আমাকে মানসিক নির্যাতন করা হয়। তবে দুপুরে খাবার সরবরাহ করে আমার বাঁধন খুলে দেওয়া হয়। ঘন্টা দুয়েক আমার চলাফেরায় কোন বাধা দেওয়া হয়নি। বিকেলে আবার আমাকে পিঠমোড়া করে বাঁধা হয়। কিছুক্ষণ পর রাজশাহীর চরে নিয়ে গুলি করার কথা বলে আমাকে সেনা সদস্যদের জিপ গাড়িতে ওঠানো হয়। পরক্ষণেই গাড়ি থেকে নামিয়ে নিয়ে কুমার ভবনের সামনে রাখা বেশ কয়েকটি বেঁতের চাবুকের সামনে বসিয়ে রাখা হয়। দিনভর এভাবে আমাকে মানসিকভাবে নির্যাতনের শিকার হতে হয়। নেতাদের মধ্যে মজিবর রহমান সেন্টুর অবস্থান জানতে আমাকে বেশী বেশী চাপ দেওয়া হয়। পরে আমাকে বলা হয় যারা পালিয়ে রয়েছে তাদের ফিরে আসতে বলেন। নাটোরে আসার পর তার সাথে সাক্ষাত করতে বলেন। সন্ধ্যার আগে আমাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আমাকে ছাড়িয়ে নিতে আমার বাবাও গণভবনের বাহিরে দিনভর না খেয়ে অবস্থান করেন। ছাড়া পাওয়ার পর বাবা আমাকে জড়িয়ে ধরে কিছুক্ষণ ডুকরে কাঁদলেন। পরে ঘোড়া গাড়িতে করে বাড়িতে ফিরে আসি। আমাকে ধরার ক’দিন পর তৎকালীন জেলা যুবলীগ সভাপতি মজিবর রহমান সেন্টু ভাইকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেন্টু ভাইকে শারীরিকভাবেও নির্যাতন করা হয়।
মেজর রফিক ভিন্ন স্টাইলে মোটর সাইকেল চালাতেন। তিনি মাঝে মধ্যে মোটর সাইকেল চালিয়ে শহরে আসতেন। দেখা হলেই জানতে চাইতেন কারো খোঁজ পেয়েছি কি-না। একদিন শেখ আলাউদ্দিনের সাথে দেখা হলে তাকে বুঝিয়ে মেজর রফিকের কাছে নিয়ে যায়। তিনি নাস্তা পানি খাইয়ে বিদায় দিয়ে পালিয়ে থাকা সবাইকে শহরে ফিরে আসার জন্য বললেন। পরে যাদের সাথে দেখা হয়েছে বা যোগাযোগ হয়েছে তাদের শহরে আসতে বলা হয়। মেজর রফিক নাটোরে অবস্থান করার সময়ই পরিবেশ স্বাভাবিক ও শান্ত হতে শুরু করে।
ইত্যবসরে শংকর কাকা সহ অনেকেই নাটোরে আসেন। তবে বর্ষিয়ান নেতা আশরাফুল ইসলাম কারাগার থেকে ছাড়া পান অনেক পরে। তিনি ছাড়া পাওয়ার পর জেনেছি কারাগারে তিনি নানা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এক সময় বঙ্গবন্ধু বিহীন বাংলাদেশে শুরু হয় ঘরোয়া রাজনীতির কর্মকান্ড।

লেখকঃ
নবীউর রহমান পিপলু,
বীর মুক্তিযোদ্ধা,
প্রকাশক, জাগোনাটোর২৪ ডটকম ও
নাটোর প্রতিনিধি, দৈনিক সমকাল ও একুশে টেলিভিশন
০১৭১১-৯৫৫৬৯৮

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *