বাগাতিপাড়ায় স্বামীর রহস্যজনক মৃত্যু ॥ স্ত্রী-মেয়ে-জামাতাকে জিজ্ঞাসাবাদ

নাটোর অফিস॥
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় নিজাম উদ্দিন (৫৫) নামের এক ব্যক্তির রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় মৃতের স্ত্রী-মেয়ে ও জামাতাকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার বাজিতপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওই দিন রাতে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নাটোর মর্গে প্রেরন করেছে। তবে নিহতের ভাতিজার অভিযোগ তার চাচা নিজাম উদ্দিনকে তার স্ত্রী-মেয়েরা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। মৃত নিজাম উদ্দিন উপজেলার বাজিতপুর গ্রামের মৃত ফকির উদ্দিনের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শনিবার সন্ধ্যায় নিজাম উদ্দিনের মারা যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে নিজ শয়ন ঘর থেকে নিজাম উদ্দিনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। খবর পেয়ে নাটোরের সহকারি পুলিশ সুপার মীর আসাদুজ্জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ঘটনায় সন্ধ্যা থেকে রাত প্রায় ৯টা পর্যন্ত নিজামের স্ত্রী পিয়ারা বেগম, বড় মেয়ে লিজা বেগম, ছোট মেয়ে লিপি বেগম এবং জামাতা রয়েল উদ্দিনকে ঘটনাস্থলে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
নিজাম উদ্দিনের স্ত্রী পিয়ারা বেগম জানান, তার স্বামী নিজাম উদ্দিন ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ছিলেন। ঘটনার দিন বিকালে নিজ শয়নকক্ষে ঘুমিয়ে ছিলেন তার স্বামী। সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজে সাড়া না দেওয়ায় তার সন্দেহ হয়। সেই সময় তিনি ও তার জামাতা রয়েল শয়নকক্ষে গিয়ে নিজাম উদ্দিনের মৃতদেহ দেখতে পান।
মৃতের ভাতিজা মিঠুন আলী জানান, তার চাচার দুই মেয়ে। বড় মেয়ে লিজাকে বিয়ে দিয়ে বাড়ির পাশে এবং ছোট মেয়ে লিপিকে একই উপজেলার লোকমানপুরে বিয়ে দিয়েছেন। ছেলে সন্তান না থাকায় চাচার মৃত্যুর পর সম্পত্তির ভাগ ভাই-ভাতিজারা পাবে এমন দাবী করে চাচা নিজাম উদ্দিনকে চাপ প্রয়োগ করে দুই ্বছর আগে সমস্ত জমি-জমা রেজিস্ট্রি করে নিয়েছেন তার চাচী পিয়ারা বেগম এবং তার দুই মেয়েকে। জমি লিখে নেয়ার পর থেকেই তার চাচী ও তার মেয়েরা চাচার ওপর অমানসিক নির্যাতন করতো। শনিবারও দুই মেয়েসহ পেয়ারা বেগম নিজামকে মারপিট করার এক পর্যায়ে সে মারা গেলে তারা স্বাভাবিক মৃত্যু বলে চালানোর চেষ্টা করছে। তিনি আরও জানান, প্রত্যক্ষদর্শীরা তার চাচা নিজামের গলা ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন দেখেছে। তার চাচা নিজামকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মিঠুন। এব্যাপারে তারা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
বাগাতিপাড়া থানার ওসি নাজমুল হক বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নাটোর আধুনিক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য জানা যাবে।
নাটোরে পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা সাংবাদিকদের জানান, ঘটনাটি আমি শুনেছি এবং স্পটে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। বিষয়টি এখনো কিছু বলা যাচ্ছে না। ময়না তদন্ত রিপোর্ট পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *