নাটোরে ‘চিমনীহীন’ চানাচুর ফ্যাক্টরি, হুমকিতে জনস্বাস্থ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক, গুরুদাসপুর, নাটোর॥
প্রশাসনের তোয়াক্কা না করে নাটোরের গুরুদাসপুর পৌর সদরের খামারনাচকৈড় টলটলি পাড়া সড়কের দুইপাশে বসতবাড়ি সংলগ্ন আব্দুল মজিদের দুটি চিমনীহীন চানাচুর ফ্যাক্টরিতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যেই চলছে চানাচুর তৈরির সব কার্যক্রম। তার ফ্যাক্টরিতে ময়লাযুক্ত বিভিন্ন সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। বিশেষ করে ফ্যাক্টরির কালো ধোঁয়া নির্গমনের জন্য চিমনী ব্যবহার না করায় হুমকির মুখে পড়েছে জনস্বাস্থ্য।

স্থানীয়দের দেওয়া উক্ত অভিযোগ সত্য কিনা যাচাই করতে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় আব্দুল মজিদের চানাচুর ফ্যাক্টরিতে যান স্থানীয় দুই সাংবাদিক। চিমনীবিহীন ফ্যাক্টরির কালো ধোঁয়া, মেঝেতে পড়ে থাকা পচা তেল ও তেলের ড্রাম, চানাচুরের খোলা বস্তা, নোংরা তেলের কাড়াই, একইস্থানে জেনারেটর এবং ব্যবহৃত অন্যান্য জিনিসে ময়লা আবর্জনার ভিডিও ধারণ করতে গেলে সাংবাদিকদের বাধা দেয়া হয়। এমনকি পেছন থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে ফ্যাক্টরির মালিক আব্দুল মজিদ। তাতেও ব্যর্থ হয়ে ফ্যাক্টরির শাটার বন্ধ করার হুকুম দেয় কর্মচারীদের। তবে ওই সাংবাদিকের সঙ্গে থাকা অপর সংবাদ সংগ্রহকারী শাটারের কাছে দাঁড়িয়ে থাকায় বন্ধ করতে পারেনা। ফ্যাক্টরি থেকে বেড় হওয়ার পর সাংবাদিককে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয় মজিদ।

হুমকি দেওয়ার পরও স্থানীয় হেলিপ্যাডের সামনে তার ছেলেকে দিয়ে সাংবাদিকের মোটরসাইকেল থামিয়ে পথরোধ করানো হয়। এসময় তার জনৈক ছেলে চানাচুর ফ্যাক্টরির অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও সাংবাদিকের সাথে তার পিতার দুর্ব্যবহারের কথা স্বীকার করেন এবং ঘটনাটি মিমাংসার জন্য নিউজটি প্রকাশ করতে নিষেধ করাসহ ঘুষ দেওয়ার প্রলোভন দেখান। এর সব ভিডিও রেকর্ড সংরক্ষিত রয়েছে।

রিপোর্টটি লেখা পর্যন্ত ওই চানাচুর ফ্যাক্টরি ও মালিকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন সংবাদ সংগ্রহকারী। এ ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিকরা ওই অস্বাস্থ্যকর ফ্যাক্টরির বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।

ভূক্তভোগী এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, ওই চানাচুর ফ্যাক্টরি চালু করার সাথে সাথে বর্জ্যের কালো ধোঁয়ার ছাইয়ে ভরে যায় আশপাশের সব ঘরবাড়ি। চানাচুর ভাজার সময় ওই সড়ক দিয়ে চলাচল করলে হাঁচি কাশির মত শারীরিক সমস্যায় ভুগতে হয়। স্থানীয়রা ফ্যাক্টরির মালিক আব্দুল মজিদকে বিষয়টি অবগত করলে তিনি এড়িয়ে যায় এবং প্রশাসনকে তোয়াক্কা করেন না বলে জানায়। এদিকে আবাসিক এলাকায় জনস্বাস্থ্যর জন্য হুমকিস্বরূপ এ ধরনের চানাচুর ফ্যাক্টরির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

এ ব্যাপারে ইউএনও মো. তমাল হোসেন বিষয়টি দেখবেন বলে জানিয়েছেন। তবে গুরুদাসপুর থানার ওসি মো. মোজাহারুল ইসলাম বলেন, সাংবাদিকদের তথ্য সংগ্রহের কাজে বাধা প্রদান করা অনিয়মতান্ত্রিক। তাদের ধারণ করা ভিডিওতে ফ্যাক্টরির অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ লক্ষ্য করেছি। নিউজ না করতে ঘুষ দেওয়ার প্রলোভন দেওয়ার বিষয়টিও সত্য। অভিযোগ দায়ের হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *