নাটোরে সঙ্গরোধে থাকা পরিবারের খাবার নিয়ে ইউএনও-মেয়র সমন্বয়হীনতা

নাটোর অফিসঃ ‘আমরা কি অপরাধ করেছি? আমরা কি খেতে না পেয়ে মারা যাবো? সরকার কি আমাদের দিকে তাকাবেন না?’

নাটোরের বাগাতিপাড়া পৌর এলাকাস্থ পেড়াবাড়িয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিন মাসের শিশুসহ প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে(সঙ্গরোধ) থাকা পাঁচ নারী-পুরুষ স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে এমন অভিযোগ জানিয়েছেন।

প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে খাবার না থাকার ঘটনার জন্য তারা দায়ী করেছেন স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বয়হীনতা।

জেলার প্রতিটি উপজেলাতে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের ন্যায় বাগাতিপাড়াতেও ৬টি প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারান্টাইন প্রস্তুত রাখা হয়েছে যার একটি পেড়াবাড়িয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সেখানে ৬ দিন আগে ঢাকা থেকে আসা তিন মাসের শিশু সহ একই পরিবারের ৫ জন সদস্য ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারান্টাইনে আছেন।

তাদের অভিযোগ, তাদের খাবারের ব্যাবস্থা নেই, এমনকি কেউ কোন খোজ খবর রাখে না। তাদের কর্মহীন পরিবারের পক্ষেও বাড়িতে থেকে খাবারের ব্যবস্থা করা সম্ভব না।

‘আমরা এখন কষ্টে জীবন যাপন করছি। বাড়িতে যারা আছেন, তারা নিজেরাই খাবার পাচ্ছেন না। আমাদের খাওয়াবেন কিভাবে?’ অনুযোগ তাদের।

এই অভিযোগের ব্যাপারে পৌর প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের বক্তব্য জানতে চাওয়া হয়।

বাগাতিপাড়া পৌর মেয়র মোশাররফ হোসেন জানলেন  কোয়ারেন্টাইনে খাদ্য সামগ্রী প্রদানের বরাদ্দ নেই তাদের।

‘এটা উপজেলা প্রশাসন থেকে দেওয়ার কথা। পৌর এলাকায় যে কোয়ারান্টাইন সেন্টার আছে এবং সেইখানে যে মানুষ আছে তা জানি না।  এ ব্যাপারে আমার কিছু করার নেই। ইউএনও কে জানান।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াংকা দেবী পাল কোয়ারেন্টিন সেন্টারের অবস্থানজনিত যৌক্তিকতা তুলে ধরে বলেন, ‘পরিবারটির দ্বায়িত্ব পৌর মেয়রের। পৌর এলাকায় উপজেলা প্রশাসনের কোন বরাদ্দ নেই।’

ইউএনও দাবী করেন, বরাদ্দ না থাকলেও বিষয়টি জানার পরে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই পরিবারটির বাড়িতে কিছু খাদ্য পৌছে দিয়েছেন।

পৌরসভা এবং উপজেলা প্রশাসনের এমন সমন্বয়হীনতার মধ্যেই কোয়ারান্টাইনে থাকা ওই সদস্যদের বিষয়ে জানতে পেরে বাগাতিপাড়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল মতিন কিছু খাদ্য সামগ্রী তাদের পরিবারের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন।

আব্দুল মতিন জানিয়েছেন, এই মহামারীর সময় কারো অবস্থান নিয়ে বিতর্কের সুযোগ নেই। আগে খাদ্য দেয়া দরকার। ওই পরিবারের কাছে সাধ্যমতো কিছু খাদ্য সামগ্রী পাঠিয়েছি যা আমার নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে করছি।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *