নাটোরের সিংড়ায় ডিলারকে বাঁচাতে খাদ্য নিয়ন্ত্রকের চিঠি

নাটোর অফিস॥
নাটোরের সিংড়া উপজেলার ইটালি ইউনিয়নের সাতপুকুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ছাত্রাবাস থেকে খোলা বাজারে বিক্রির ১৭১ বস্তা চাল উদ্ধারের পর আটক ডিলারকে বাঁচাতে উপজেলা খাদ্য বিভাগ সিংড়া পুলিশকে চিঠি দিয়েছে। চিঠিতে পরিত্যক্ত ওই ছাত্রাবাসকে ডিলার আসাদুজ্জামানের চাল রাখার অনুমোদিত গুদাম হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ডিলার আসাদুজ্জামান স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলামের মামা।

বুধবার(১৫ই এপ্রিল) দুপুরে ডিলার আসাদুজ্জামানকে আটকের কয়েক ঘন্টার মধ্যে সিংড়া থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর চিঠি দেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুস সালাম বিশ্বাস।

আব্দুস সালাম বিশ্বাস চিঠিতে লেখেন, ইটালী ইউনিয়নের সাতপুকুরিয়া বাজার ডিলার আসাদুজ্জামানের চাল বিক্রয় কেন্দ্র। ডিলার আসাদুজ্জামান সাতপুকুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অনুমতি নিয়ে ছাত্রাবাসের একটি পরিত্যক্ত কক্ষ গুদাম হিসেবে ব্যবহার করতেন। সেখানে এখন পর্যন্ত ৫.১৩০ মেট্রিক টন খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর চাল মজুদ রয়েছে।

এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক(ভারপ্রাপ্ত) শফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সিংড়ার খাদ্য নিয়ন্ত্রকের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন।

স্বাক্ষরিত চিঠির ব্যাপারে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাড়া দেননি সিংড়া উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুস সালাম বিশ্বাস। তবে সাংবাদিকদের তিনি পুলিশ বরাবর চিঠি প্রেরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, তিনি গত ৩ মাস হলো সিংড়ায় দায়িত্ব নিয়েছেন। ওই ডিলারের বিস্তারিত জানতে নথিপত্র পর্যালোচনা করা হবে।

সিংড়া থানার অফিসার ইনচার্জ নুরে আলম বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে আমি ডিলারের গুদামের অবস্থান সংক্রান্ত কোনো চিঠি পাইনি। তবে আমার বরাবর লেখা চিঠিটি আমি দেখেছি। আমরা আটক ডিলারকে জিজ্ঞাসাবাদ করবো। আইন অনুযায়ী পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।

এদিকে, পরিত্যাক্ত ছাত্রবাস ওএমএস চালের গুদাম হতে পারে কি না সে ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা। তাদের দাবী, শর্তানুযায়ী ডিলারশিপ গ্রহণের সময় আবেদনকারী ডিলারকে নিজস্ব গুদামের অবস্থান জানানোর বিধান আছে। পরিত্যক্ত ছাত্রবাস গুদামে পরিণত করার বিষয়টি অস্বাভাবিক। এক্ষেত্রে চালসহ আটকের সময় ডিলার পুলিশকে উপযুক্ত কোনো প্রমাণাদি দেখাতে পারেননি। এই প্রেক্ষিতে আটকের পর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্তৃক গুদামের অবস্থান জানিয়ে প্রেরিত চিঠি আটক ডিলারকে বাঁচাতেই দেয়া হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাসরিন আক্তার বলেন, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দেয়া চিঠি সম্পর্কে সিংড়া থানার অফিসার ইনচার্জ আমাকে জানিয়েছেন। তবে খাদ্য নিয়ন্ত্রক থানা বরাবর চিঠি লেখার ব্যাপারে আমাকে জানননি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চালের ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন। তাই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশনা দিয়েছি।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *