নাটোরে খেজুর রসে বিষ ছিটিয়ে পাখি নিধন

গাছের গায়ে লেগে থাকা বিষের দানা অপসারণ করছেন একজন পরিবেশকর্মী

নাটোর অফিস॥
খেজুর রসে বিষ ছিটিয়ে দেশীয় প্রজাতির পাখি শিকার চলছে শস্য ও মৎস্য ভান্ডার খ্যাত চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের সিংড়া উপজেলায়। একদল লোভী শিকারী খেজুর গাছ থেকে হাঁড়িতে রস চুইয়ে পড়া নলের মুখে দানাদার বিষ ছিটিয়ে দিচ্ছে। এত রাত-ভোরে ওই রস খেতে পাখিরা চুমুক দিতেই কিছুক্ষণের মধ্যে মরে পড়ে থাকছে গাছের নীচে। দামে কম হওয়ায় বিষ দ্বারা নিধনকৃত পাখিগুলো কিনছে অসাধূ হোটেল মালিকরা। এছাড়া জবাই করা পাখিও প্রতিপিস ৩০ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে চলনবিলের হাটবাজারে।

আজ সোমবার(২০শে জানুয়ারী) সকালে সিংড়ার কৃষ্ণপুর আত্রাই নদীর বাঁধে প্রায় ২০টি খেজুর গাছের রসের হাড়ির নলে দানাদার বিষের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। বিষক্রিয়ায় মৃত পাখিগুলো গাছের নীচে পড়ে ছিলো। পরে খবর পেয়ে স্থানীয় পরিবেশ কর্মীরা পাখিগুলো উদ্ধার করেন এবং দানাদার বিষ মিশ্রিত খেজুর রসের হাড়ি ও গাছ পানি দিয়ে ধুয়ে এলাকাবাসীকে সচেতন করেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলাম, কলম প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির সভাপতি প্রভাষক হারুন অর রশিদ, সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক আব্দুল্লাহ আল মামুন, পরিবেশ কর্মী মনির হোসেন, মিজানুর রহমান প্রমূখ।

জানা যায়, বর্ষার শেষ ভাগে বিলে পানি কমতে শুরু করলে মাছ খাওয়ার লোভে অতিথিসহ দেশীয় প্রজাতির পাখিরা বিলে ভিড় জমায় চলনবিলে। আবার শীতে খেজুর গাছের রসের হাড়িতে পাখিদের আনাগোনা দেখা যায়। আর এই সুযোগেই কিছু লোভী শিকারীরা দানাদার বিষ, কারেন্ট জালসহ বিভিন্ন ফাঁদ পেতে পাখি শিকার করে।

চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, পাখি শিকার বন্ধে আইন থাকলেও চলনবিল এলাকায় তার কোনরকম প্রয়োগ নেই। বিলের পাখি শিকার বন্ধে সকলের সমন্বিত পরিকল্পনা ও প্রতিটি আইন শৃংখলা সভায় বিষয়টি গুরুত্বের সাথে উপস্থাপন দরকার।

সিংড়া উপজেলা বন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, বৃহৎ এলাকা হওয়ায় চলনিবেলে পাখি শিকার বন্ধ হচ্ছে না। তবে এ বিষয়ে চলনবিলের বিভিন্ন এলাকায় সচেতনতা সভার মাধ্যমে সকলকে অতিথি পাখি নিধন বন্ধে সচেতন করা হচ্ছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *