ফল বেঁচেই ঈদ, ফল বেঁচেই লেখাপড়া!

মাজহারুল ইসলাম, লালপুর॥
ওরা অপেক্ষায় থাকে ফলের মৌসুমের। বছরের এ সময়টি বন্ধ থাকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আয়েশেই ছুটির সময়টি কাটিয়ে না দিয়ে এর সর্বোচ্চ ব্যবহার করে তারা। রমজান ও গ্রীষ্মের লম্বা ছুটিকে কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিকভাবে সাবল¤ী^ হতে আম,জাম,লেবু,বাঙ্গিসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফলের ব্যবসায় নেমেছে নাটোরের লালপুর উপজেলার বিভিন্ন স্কুল-কলেজের কয়েক’শ শিক্ষার্থী।
উপজেলার গোপালপুর, লালপুর, ওয়ালিয়া, বিলমাড়িয়া, সালামপুর, কলসনগর, ধুপইলসহ বিভিন্ন বাজারে এসব শিক্ষার্থীরা মৌসুমি ফল বিক্রি করছে। এখান থেকে যে আয় হয় তা তারা তাদের সংসারে ও লেখা-পড়ার কাজে ব্যায় করে। এ সময় ফল বিক্রির উপরই নির্ভর করছে আসন্ন ঈদুল ফিতরের আনন্দ ও ঈদ পরবর্তী পড়াশোনার খরচ চালানো।
সালামপুরের ৮ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী জামিল জানায়, এক মাসের ছুটিতে বাড়তি কিছু রোজগারের জন্য প্রতিদিন সে ও তার এলাকার কয়েকজন শিক্ষর্থী দিনের একটা সময়ে দাঁড়ি পাল্লা, চট ( ফল রাখার জায়গা) ও কয়েকটি ক্যারেটে বিভিন্ন মৌসুমি ফল নিয়ে আশে পাশের বাজারে বিক্রি করে আসছে। এতে তাদের বেশ ভালো লাভ হয়, এই বাড়তি আয় দিয়ে ঈদের কেনা কাটা সহ লেখা-পড়ার কাজে খরচ করে থাকে।
লালপুর এলাকার এইচএসসি পরীক্ষার্থী সাগর মাহমুদ জানান, সে ছাড়াও আরো অনেক শিক্ষার্থী প্রতি বছর রমজান ও গ্রীষ্মের ছুটিকে কাজে লাগাতে মৌসুমি ফল ব্যবসায় নেমে পড়ে। এই এক মাসের ব্যাবসার যা আয় হয় তা লেখা-পড়ার খরচ চালাতে ব্যায় করে থাকে।
পঞ্চম শ্রেণি পড়–য়া শিক্ষার্থী রিহাব আলী জানায়, পুরা জ্যৈষ্ঠ মাস ছুটি থাকায় স্কুলে যাওয়া নাই, তাই এই সময় লেখা-পড়ার পাশাপাশি গ্রাম থাইকা জাম কিনে আইনা আড়তে বেচি, এখান থেকে যে আয় হয় তা সংসারে ও লেখা-পড়ার কাজে খরচ করি।
কলেজ পড়–য়া অপর শিক্ষার্থী চয়ন জানায়, তারা ক্ষুদে বিক্রেতাদের নিকট হতে মৌসুমি ফল কিনে পার্শবর্তী ঈশ্বরদীর মুলাডুলি বাজারে বড় পাইকারদের কাছে বিক্রি করে, তারা সেগুলো ঢাকাসহ দেশের বিভিন্œ স্থানে সরবরাহ করে।
জেলা শিক্ষা অফিসার রমজান আলী আকন্দ পরিশ্রমী এসব শিক্ষার্থীদের সাধুবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা সময় নষ্ট না করে এখন থেকেই যে আয়বর্ধক কর্মকান্ডে নিজেকে সম্পৃক্ত করেছে, সেটি অন্যদের জন্য দৃষ্টান্ত। এমন চর্চা অব্যাহত থাকলে শিক্ষার পাশাপাশি তারা আতœনির্ভরশীলতায় বলীয়ান হবে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *