নাটোরে কোটি টাকার ভবনে নির্মাণে নিম্নমানের ইট-সুরকি!

নাটোর অফিস॥ নাটোরের সিংড়া উপজেলার ইটালী ইউনিয়নের সাতপুকুরিয়া দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বি-তল ভবন নির্মাণ কাজে নিম্নমানের উপকরণ ব্যাবহারের অভিযোগ উঠেছে। নিম্নমানের ইট ও সুরকি ব্যবহারের বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেছেন স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি ও স্থানীয় এলাকাবাসী।

জানা যায়, সাতপুকুরিয়া দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা উর্ধ্বমূখী ভবন নির্মাণ কাজ করছেন রাজশাহীর মেসার্স মুমু এন্টার প্রাইজের ঠিকাদার আমিরুল কবির বাবু। কাজের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ২লক্ষ ৫৬ হাজার টাকা।

সম্প্রতি সরেজমিনের গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়টিতে নিম্নমানের ও ধুলো মিশ্রিত সুরকি দিয়ে ঢালাই কাজ চলছে। ইতোপূর্বে দ্বিতীয় তলার কয়েকটি পিলার নির্মাণের পর প্লাস্টার করা হলেও পিলারগুলো থেকে নিম্নমানের খোয়া খসে পড়তে দেখা গেছে। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাওয়া হলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে তদারকিতে নিয়োজিত রুবেল হোসেন বলেন, ‘এক গাড়ী ইটে একশ থেকে দেড়শটি ইট খারাপ আসবেই। এ কারণে কিছু খোয়া ভেঙ্গে বিবর্ণ হতে পারে। এটা কোন ব্যাপার নয়।’

অভিযোগ রয়েছে, বিষয়টি সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীকে অবগত করা হলেও তারা সরোজমিনে এসে কাজ পরিদর্শন করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে নিম্নমানের মালামাল ফেরত নিতে বলেছেন। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সেদিকে কর্ণপাত না করে ইচ্ছে মতো সুরকি দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। স্কুলের একাধিক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আশংকা নিম্নমানের সুরকি ব্যবহারের ফলে যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

স্থানীয় ওয়ার্ড আ’লীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বাজারে লোকজন আলোচনা করছে বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণে নিম্নমানের উপকরণের ব্যবহার নিয়ে। প্রতিষ্ঠানটি বিলের ধারে অবস্থিত হওয়ায় যুতসই উপকরণে নির্মিত না হলে ভবিষ্যতে দূর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়ে যাচ্ছে। নির্মাণকাজ অব্যাহত থাকায় প্রতিষ্ঠানে চার শতাধিক শিক্ষার্থীসহ ভবিষ্যত প্রজন্ম ঝুঁকিতে রয়েছে।’

প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ভবনের নির্মানকাজ নিয়ে আমরা আপত্তি তুলেছি। বাধাও দিয়েছি। সেই সাথে ম্যানেজিং কমিটির মিটিংয়ের মাধ্যমে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।
তবে ঠিকাদার কাজ অব্যাহত রয়েছে।’

এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সত্বাধিকারী আমিরুল কবির বাবুর সেল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাড়া পাওয়া যায় নি। তবে তার কাজের অংশীদার সোহেল হোসেন জানান, নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারের বিষয়টি তাদের জানা নেই।

নাটোর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী বকুল হোসেন বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর সরেজমিন পরিদর্শন করে কাজ বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেই সাথে ঠিকাদারকে উপকরণ পরিবর্তন করতে বলা হয়েছে। এসবের ব্যত্যয় ঘটলে তাকে আর কাজ করতে দেওয়া হবে না।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *