নাটোর অফিস।।
নাটোরের লালপুরে তামাক চাষ করতে গিয়ে অনেক টাকা ঋণগ্রস্থ স্বামী। ঋণের বোঝা সইতে না পেরে স্বামী-স্ত্রী একই সময় আত্মহত্যা করেছে। পুলিশ, নিহতের পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তারা হলেন- রইজুল ইসলাম (৪০) এবং তার স্ত্রী ফাতেমা খাতুন (৩০)। রইজুল একই গ্রামের মৃত আজিজুল হকের ছেলে। আজ সোমবার (২ জুন) ভোরে উপজেলার আড়বাব ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রইজুল ইসলাম এবছর তামাক চাষ শুরু করেন। এই তামাক চাষ করতে গিয়ে সে অনেক টাকা ঋণগ্রস্থ হয়। প্রতিদিনের মতো রোববার রাতে রইজুল ইসলামও তার স্ত্রী ফাতেমা ঘরে ঘুমাতে যান। সোমবার ভোরে রইজুল ইসলামকে তামাকের ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলতে দেখা যায়। পরে তার স্ত্রী ফাতেমা খাতুনকে কয়েকবার ডাকার পরেও ঘরের দরজা না খুলায় সন্দেহ হয় পরিবারের। পরে জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে স্ত্রী ফাতেমা খাতুনকে ঘরের বিছানায় পরে আছেন। পরে এলাকাবাসী পুলিশে খবর দেন। এরপর পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে।
স্থানীয় আড়বাব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান সমকালকে বলেন, রইজুল ইসলাম খুবই দরিদ্র মানুষ। রইজুল ইসলাম ও ফাতেমা খাতুনের পরিবারে তাদের একটি সন্তান আছে। তাদের দুজনের মধ্যে কোন ঝামেলা হয়নি। রইজুল ইসলাম পেশায় কৃষক ছিলেন। এবার তারা তামাক কোম্পপানির প্ররচনায় পরে অনেক টাকা ঋণ নিয়ে অন্যের জমি উচ্চ টাকায় লিজ নিয়ে তামাক চাষ করেছিলেন। শিলাবৃষ্টিতে তামাকের ক্ষতি হয়েছে। তামাক বিক্রয় করে তেমন লাভবান হতে পারেন নি। আমরা শুনেছি তিনি প্রায় ৭ লক্ষধিক টাকা ঋণ গ্রস্তছিলেন। ঋনের এই টাকার সুদসহ তিনি কোনোভাবেই পরিশোধ করতে পারছিলেন না। এজন্যই তিনি ভোররাতে তিনি ও তার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন।
লালপুর থানার ওসির দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক মোমিনুজ্জামান নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে সমকালকে বলেন, খবার পেয়ে পুলিশ স্বমী-স্ত্রীর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছে। তবে অতিরিক্ত ঋণের বোঝা সইতে না পেরে স্বামী-স্ত্রী দুজনে আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়েছে। প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।