নাটোর অফিস।।
নাটোরের লালপুরে গত কয়েকদিনে ঘন কুয়াশা আর হাড় কাঁপানো শীতে সবচেয়ে বেশী দুর্ভোগে পড়েছেন ছিন্নমূল মানুষ। শীতের হাত থেকে লালপুর উপজেলার ছিন্নমূল ও অসহায় মানুষদের রক্ষা করতে রাতের আঁধারে ঘুরে ঘুরে শীতবস্ত্র কম্বল বিতরণ করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মেহেদী হাসান।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে ১১টার দিকে কম্বল নিয়ে উপজেলার ওয়ালিয়া বাসস্টেশনসহ বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে অসহায় শীতার্ত মানুষের শরীরে কম্বল জড়িয়ে দেন। ইউএনওকে কাছে পেয়ে অনেক ছিন্নমূল শীতার্ত মানুষ তাদের কষ্টের কথা তুলে ধরেন। এ সময় ইউএনও তাদের খোঁজখবর নেন এবং তাদের গায়ে গরমের উষ্ণতা দিতে কম্বল জড়িয়ে দেন।
কম্বল পেয়ে সত্তরউর্ধ্ব মমেজান বেগম বলেন, ‘বিধবা মানুষ শীতের রাতে ঘুমাতে পারি না, খুব কষ্টে আছিনু বাবা। কেউ কোন খোঁজখবর রাখেনা, একটা কম্বলও কেউ দেয় না। আজ এই মধ্যরাতে ইউএনও একটা কম্বল দিছে। এখন গায়ে একটু গরমধরবি একটু ঘুমাতে পারবো।’
পঞ্চাশ উর্ধ্ব জামাল আলী বলেন, রাতে ভাঙ্গা ঘরে হুহু করে বাতাস লাগে। একখান গরম কাপড় নেই। আজ রাতে ইউএনও এসে একটা কম্বল দিছে। কম্বল পেয়ে আমার অনেক উপকার হলো। কম্বল খান গায়ে জরিয়ে আরামে এখন একটু ঘরে সুতে পারবো।’
ইউএনও মো. মেহেদী হাসান জানান, ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতে অসহায় মানুষ যাতে কষ্ট না করে সেজন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিনি নিজেই মধ্য রাতে গাড়ি বহরে কম্বল নিয়ে গরমের উষ্ণতা দিতে ঘুরে ঘুরে রেলষ্টেশন, রাস্তার পাশে শুয়ে থাকা ছিন্নমূল শীতার্ত মানুষের মাঝে ৩৫০টি কম্বল বিতরণ করেছেন। এ ধরনের মানবিক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’
ইউএনও আরো বলেন, এছাড়াও ইতোমধ্যেই উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে ৫০০টি কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। আগামীতে আরো কম্বল বিতরণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
মধ্য রাতে কম্বল বিতরণকালে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা জনস্বাস্থ প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী নাইম মোহাম্মদ হাসান, উপজেলা নির্বাচন কর্মকতা ফাহমিদা বিনতে হাফিজ, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম নাজিমুদ্দিন, একাডেমিক সুপারভাইজার সাদ আহমেদ শিবলী প্রমুখ।