সমুদ্রের পানি থেকে পাঁচ শিক্ষার্থীর বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবন

নাটোর অফিস ॥
নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার কাদিরাবাদ ক্যান্টনম্যান্ট স্যাপার কলেজের ৫ শিক্ষার্থী সমুদ্রের পানি থেকে সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন। তাদের উদ্ভাবিত প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ মাত্র এক টাকা মূল্যে গ্রাহক পর্যায়ে পৌঁছানো সম্ভব হবে বলে তারা দাবি করেছেন। বুধবার দুই দিন ব্যাপি ৪৪ তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহের বিজ্ঞান মেলায় তাদের এই প্রযুক্তি প্রদর্শণ করেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল ওই মেলার উদ্বোধন করেন।
প্রদর্শিত প্রযুক্তির উদ্ভাবক শিক্ষার্থী আসিফ অভি জানান, তারা একই কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ৫ শিক্ষার্থী ইশরাত জাহান মিতু, নূরে জান্নাত নূরি, আনিস হোসেন নিরব, আসিফ প্রামানিক বিদ্যূতের বর্তমান পরিস্থিতির কারনে এই প্রযুক্তি উদ্ভাবনে নেমে পড়েন। তারা কয়েক মাসের প্রচেষ্টার ফলে এই প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন।
অভি জানান, তাদের প্রযুক্তির মাধ্যমে সমুদ্র জলকে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে সোডিয়াম হাইড্রোক্লোরাইড উৎপন্ন করা হবে। তা থেকে হাইড্রোজেনকে পৃথক করা হলে ২৭০০ ডিগ্রী সেন্ট্রিগেড তাপমাত্রা উৎপন্ন হবে। যা বাষ্পীভূত করে চাপের সৃষ্টি করে ওই চাপে টারবাইন ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। যা উৎপাদনে সবচেয়ে কম খরচ হবে। তারা তাদের এই প্রযুক্তির নাম দিয়েছেন ‘টেকসই সমুদ্র জল শক্তি’ প্রযুক্তি।
উদ্ভাবক ওই পাঁচ শিক্ষার্থী বলেন, এই সাশ্রয়ী প্রকল্প মূলত সমূদ্রের জল অর্থাৎ লবনাক্ত ব্রাইন এবং অ্যালুমিনিয়াম বর্জ্যরে উপর নির্ভরশীল। যা সহজেই সমূদ্র থেকে সংগ্রহ করা যাবে। সমূদ্রে প্রচুর নোনা জল রয়েছে এবং এ প্ল্যান্টে দহন বিক্রিয়ার সময়ে ব্যবহৃত জল সুপেয় পানি হিসেবে বের হয়ে আসবে। যার ফলে এই প্রকল্পের দ্বারা জল সংকটের কোনো সম্ভাবনা থাকে না। যে অ্যালুমিনিয়াম বিশ্বের একটি তুলনামূলক মূল্যবান ধাতু কিন্তু প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় ১৩ দশমিক ৩ মিলিয়ন টন বর্জ্য উৎপন্ন হয় এবং বর্জ্য থেকে বিশুদ্ধ অ্যালুমিনিয়াম পাওয়া রীতিমতো কঠিন একটি প্রক্রিয়া। কিন্তু তাদের প্ল্যান্টে উৎপন্ন বর্জ্য সহজেই পুনরায় ব্যবহার করা যায়। এতে উৎপাদিত হাইড্রোজেন গ্যাস যেমন বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়, তেমনি উৎপাদিত বাই প্রোডাক্ট ফার্মাসিটিক্যাল শিল্পেও ব্যবহার করা যায়। এছাড়া নেলসন সেল থেকে উৎপাদিত হাইড্রোক্লোরিক এসিড কেমিক্যাল শিল্পেও ব্যবহার করা যাবে।
এই প্রযুক্তিতে কলেজের রসায়ন বিভাগের শিক্ষক তারেক ইকবাল, পদার্থ শিক্ষক গোলাম রব্বানী এবং আইসিটি শিক্ষক অসীম কুমার পাল সহযোগিতা করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *