সিংড়া শহর রক্ষা বাঁধ উদ্বোধনের ২৬ দিনের মাথায় ধস!

নাটোর অফিস ॥
নাটোরের সিংড়া শহর রক্ষা বাঁধে উদ্বোধনের ২৬ দিনেই ধসের সৃষ্টি হয়েছে। সিংড়া ব্রীজের দক্ষিণে এ ধস দেখা গেছে। স্থানীয়দের দাবি নদী থেকে বালু আনলোডের ড্রেজার কম্পনের কারণে এই ধসের সৃষ্টি হয়েছে। বালু আনলোডের ড্রেজার শহর রক্ষা বাঁধের সাথে বেধে রেখে বালু আনলোড করা হয়। এসময় ড্রেজারে ব্যাপক কম্পন হয়। এছাড়া বাঁধের নিচে ড্রেজারের পাইপ থাকায় এমনটা হয়েছে বলে অনেকের ধারনা। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দাবি শহরের পানি নিস্কাশনের স্থায়ী ব্যবস্থা না থাকায় নির্গত পানি চুয়ানোর কারনে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন বলছে সংস্কার করা হবে এবং নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে।
জানা যায়, আত্রাই নদীর তীরবর্তী সিংড়া শহর এলাকার মানুষের স্বপ্ন বাস্তবায়নের রুপকার স্থানীয় সাংসদ ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে প্রায় ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৭’শ ৮ মিটার শহর রক্ষা বাঁধের প্রকল্প অনুমোদন হয়। ২০১৯ সালের এপ্রিলে নাটোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় শহর রক্ষা বাঁধের কাজ শুরু করেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। চলতে বছরের ৩০ জুলাই সিংড়া শহর রক্ষা বাঁধের উদ্বোধন করেন পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম। উদ্বোধনের ২৭ দিনের মাথায় এই ধস সৃষ্টি হওয়ায় কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সিংড়া ব্রিজ সংলগ্ন শহর রক্ষা বাঁধের পাশে প্রভাবশালী ব্যক্তি নদীর মধ্যে বালু আনলোড করার ড্রেজার বেঁধে রেখেছে বাঁধের সাথে। উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ইঞ্জিন চালু করে বালু আনলোড করার সময় ব্যাপক কম্পনের সৃষ্টি হয়, এতে করে বাঁধে গর্ত হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে।
হাফিজুর রহমান বলেন, নদীর তীরবর্তী বাসিন্দাদের স্বপ্নের বাঁধ এটা। বালু আনলোড করার ড্রেজার বেঁধে রাখার কারণে বাঁধে ধসের সৃষ্টি হয়েছে। ইমরান নামে অপর একজন জানান, যেখানে গর্ত দেখা গেছে তার নিচে পাইপ আছে। কাজ চলার সময় পাইপ সরানোর জন্য বলা হলেও গুরুত্ব দেয়নি কেউ। স্থানীয়রা বাঁধটি সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
বাধেঁ বেড়াতে আসা অনেকেই বলেন, সিংড়াবাসীর জন্য একটা স্বপ্নের বাঁধ এটি। হঠাৎ ধস দেখে খারাপ লাগছে। সংস্কার করে রাষ্ট্রীয় এ সম্পদ রক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহায়তা চান তারা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এম এম সামিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, পৌর মেয়র মহোদয়ের সাথে কথা বলে বাঁেধর এই অংশ সংস্কার করা হবে। পরবর্তীতে যেন এমন কোনো ঘটনা না ঘটে সেজন্যও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নাটোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন,তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এই ধস বালু আনলোডের ড্রেজার কম্পনের কারণে নয়। পৌর শহরের পানি নিস্কাসনের পথ নেই। শহরের পানি চুইয়ে চুইয়ে নদীতে প্রবেশের কারনে এই ধসের সৃষ্টি হয়েছে। আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর ডিও লেটার নিয়ে এই অংশ সংস্কার সহ পৌর শহরের পানি নিস্কাশনের স্থায়ী ব্যবস্থার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বরাদ্দ চাওয়া হবে। আসছে শুস্ক মৌসুমে নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ার পর প্রকৃত অবস্থা দেখে কাজ করা হবে। এই ধসের জন্য বাঁধের কোন ক্ষতির আশংকা বা ভয় নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *