মামুনকে কারাগারে প্রেরণ

নাটোর অফিস॥
নাটোরে আলোচিত শিক্ষিকা খায়রুনন নাহারের মৃত্যুর ঘটনায় আটক স্বামী মামুন হোসেনকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় আটক দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়। সোমবার দুপুর দুই টার দিকে তাকে আদালতে নেয়া হয়। বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে তাকে মামুনকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ মোসলেম উদ্দীনের আদালতে তোলা হয়। এসময় আইনজীবি গোলাম সারোয়ার স্বপন তার জামিন চেয়ে আবেদন করেন। বিচারক শুনানী শেষে জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে প্রেরনের নির্দেশ দিয়েছেন । রোববার সকালে শহরের বলারিপাড়া এলাকার ভাড়া বাসা থেকে মামুনের কলেজ শিক্ষক স্ত্রী খাইরুন নাহারের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্বামী মামুন হোসেনকে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে রোববার দুপুরে সিআইডির সুরতহালের পর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে নেওয়া হয়। তিন সদস্যের মেডিকেল টিম ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পুলিশের হেফাজতে দেয়। পুলিশ রোববার সন্ধ্যার দিকে মৃতের পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করে। পরে রাত ৮টার দিকে গুরুদাসপুর উপজেলার খামার নাচকৈড় আবু বকর সিদ্দিকী কওমী মাদ্রাসা মাঠে জানাযা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়। এঘটনায় খাইরুন নাহারের চাচাতো ভাই সাবের হোসেন রোববার রাতে নাটোর সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু করেন।
এদিকে পুলিশের হাতে আটক মামুনের মা রাবেয়া বেগম তার ছেলেকে নিদোর্ষ ও পবিত্র বলে দাবি করেছেন। রাবেয়া বেগম বলেন, একটি মোটর সাইকেল কেনার কথা বললে তাকে বাড়িতে আসতে বলি। রোববার তার ছেলে বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল। ছেলেকে তার বুকে ফিরে চেয়েছেন। মামুন কোন দোষ করেনি।
নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, নাটোরের আলোচিত কলেজ শিক্ষিকা খাইরুন নাহার মৃত্যু ঘটনা নিয়ে অধিকতর তদন্তের জন্য মামুনকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এই মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে জেলা পুলিশ দিন রাত কাজ করে যাচ্ছে। সাথে সংযুক্ত হয়েছে সিআইডি,র‌্যাব,পিবিআই ও সিআইডি ক্রাইম সেল। আমরা সকল ডিজিটাল ও সিসিটিভি এ্যানালাইসিস করেছি। খাইরুনের চাচাতো ভাই একটি ইউডি মামলা দিয়েছেন। মামলাটি নিয়ে ময়না তদন্তের জন্য মরদেহ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। পরে ময়না তদন্ত শেষে মৃতের সজনদের কাছে মৃতদেহ হস্তান্তার করা হয় এবং পরবতীর্তে গত রাত ৮টার দিকে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। গুরুদাসপুরে বাপের গ্রামের বাড়ি খামার নাচকৈড় গ্রামে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। খাইরুন নাহারের পোষ্ট মর্টেম রিপোর্ট ও অধিকতর তদন্তের জন্য মামুনকে সোমবার দুপুরে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় আদালতে প্রেরণ করা হয়।
উল্লেখ্য, ভালবেসে অসম বয়সে নাটোরের গুরুদাসপুরের খুবজীপুর এম হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক খাইরুন নাহার (৪০) শহরের নবাব সিরাজ উদ দৌলা সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মামুন হোসেনকে(২২) বিয়ে করেন। তাদের এই বিয়ের খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। শিক্ষক খাইরুন নাহারের অসম বয়সি বিয়ে করার বিষয়টি বন্ধু -বান্ধব,সহকর্মীসহ সজনরা ভাল ভাবে নেননি। তাদের কুরুচিপুর্ন মন্তব্য থেকে রেহায় পাওয়ার জন্য তারা দুজন শহরের বলারিপাড়ায় একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন। এরই এক পর্যায়ে গতকাল রোববার সকালে সেই ভাড়া বাসা থেকে খাইরুন নাহারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *