প্রভাবশালীদের দখলে নেয়া স্বামীর ভিটায় মরতে চান বিধবা আবেদা বেওয়া

নাটোর অফিস॥
স্বামীর দেওয়া ১৬ শতক জমিতে ঘর করে মেয়েকে নিয়ে বাস করছিলেন বিধবা আবেদা বেওয়া। বয়সের ভারে নেতিয়ে পড়া আবেদা সুস্থভাবে চলাচল করতে পারছিলেন না। তাই ভিক্ষাবৃত্তি করে চলছিল তার সংসার। ১৯৫৭ সালে স্বামী তার নামে বড়াইগ্রাম উপজেলার বউবাজার এলাকায় ওই ১৬ শতক জমি রেজিষ্ট্রি করে দেন। এরই মাঝে স্বামীর মৃত্যু হলে স্বামীর দেওয়া জমির ওপর নজর পড়ে স্বামীর ভাগিনা প্রভাবশালী সাধু প্রামানিকের। স্বাধীনতার পর ভুয়া দলিল করে ওই জমি দখল করে নেয় প্রভাবশালী সাধু প্রামানিক তার ভাই ও ভাতিজারা।
বিধবা আবেদা বেওয়া জানান, স্বামীর শেষ সম্বল হারিয়ে প্রথমে বাবার বাড়ি পাবনা ও পরে ভাসুর মফিজউদ্দিনের বাড়িতে কন্যাসহ আশ্রয় নিই। স্বামীর দেয়া শেষ সম্বল ফিরে পেতে স্থানীয় কয়েকজনের পরামর্শে থানা পুলিশের শরণাপন্ন হই। থানার পুলিশ কর্মকর্তারা স্থানীয়দের উপস্থিতিতে দলিল ও অন্যান্য কাগজপত্র পর্যালোচনা করার পর গত ১৫ জুন ওই জমি তাকে বুঝিয়ে দিলে তিনি তার স্বামীর দেয়া জমিতে ছাপড়া ঘর করে বসবাস করতে শুরু করেন। এদিকে জমির লোভ সামলাতে না পেরে সাধু প্রামাণিকের বড় ভাই বদু প্রামাণিক নাটোর আদালতে একটি মামলা করেন। মামলা দায়ের করার দুইদিন পরেই সাধু প্রামাণিক গং শনিবার তার জরাজীর্ণ ঘরটি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়। এমনকি তারা তার ছাপড়া ঘরের মালামাল সরিয়ে ফেলে। ঘর উচ্ছেদের সময় তিনি তার মেয়ের বাড়িতে ছিলেন। লোকমুখে শুনে মেয়েকে সাথে নিয়ে স্বামীর ভিটাতে এসে তার ছাপড়া ঘরের কোন চিহ্ন দেখতে পাননা। এমন কি তাদের রোপন করা ১০টি সুপারি গাছের চারাও উঠিয়ে ফেলে দিয়েছে তারা। কোন কিছুর অস্তিত্ব রাখেনি প্রভাবশালীরা। পরে স্থানীয়দের পরামর্শে তিনি তার মেয়ে আসমা বেগমকে দিয়ে সাধু প্রামাণিক (৭০), বদু প্রামাণিক (৭৫), ফেরদৌসী বেগম (৪৫), হাসেনা বেগম (৩০), খালেদা বেগম (২৫), শফিকুল ইসলাম (৫৫), মতিন (৩৫) সহ ৭ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করিয়েছেন। আবেদা বেওয়া তার স্বামীর ভিটা থেকে মরতে চান।
এব্যাপারে সাধু প্রামাণিকের সাথে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা না যাওয়ায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তার পরিবারের এক সদস্য জানান,এই সম্পত্তি ওয়ারিশ সুত্রে পাওয়া।
বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু সিদ্দিক জানান, এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *