নাম পাল্টে ৩০ বছর পালিয়ে থেকেও শেষ রক্ষা হয়নি

নাটোর অফিস ॥
২৪ বছর বয়সে প্রতিবেশীকে খুন করে নাম পাল্টে ৩০ বছর পালিয়ে থাকার পরও শেষ রক্ষা হয়নি নাটোরের নলডাঙ্গার চাঞ্চল্যকর শাহাদত আলী হত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামী শাজাহান আলীর। ৫৪ বছর বয়সে পা দিয়ে ধরা খেতে হলো শাজাহান আলীকে। শনিবার সকালে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল এলাকা থেকে র‌্যাব-৫ এর একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করেছে। ১৯৯২ সালে নলডাঙ্গার বারনই নদীতে গোসল করার সময় শাহাদতকে ছুরিকাঘাতে প্রকাশ্যে হত্যা মামলার আসামী শাজাহান আলীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয় আদালত। এর পর থেকে শাজাহান আলী নিজের নাম পাল্টে ৩০ বছর পলাতক জীবন কাটাতে থাকে। শনিবার সকালে নাটোর সিপিসি ক্যাম্পে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যেমে র‌্যাব-৫ এর উপ-অধিনায়ক মেজর হাসান মাহমুদ এসব তথ্য জানান। গ্রেপ্তারকৃত শাজাহান আলী নলডাঙ্গা উপজেলার সোনাপাতিল এলাকার মৃত হোসেন আলীর ছেলে।
র‌্যাব কর্মকর্তা আরো জানান, ১৯৯২ সালের ১৭মে নলডাঙ্গার বারনই নদীতে শাহাদতকে ছুরিকাঘাতে প্রকাশ্যে হত্যা করে পালিয়ে যায় শাজাহান আলী। এঘটনায় শাহাদতের ভাই সেকেন্দার বাদি হয়ে নাটোর সদর থানায় শাজাহানকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলার শুনানী শেষে ১৯৯৫ সালে ২৯ মে শাজাহানকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন জেলা সেশেন আদালত। এরপর থেকে নাম পাল্টে সোহরাব হোসেন স্বপন (৫৪) নামে দিনাজপুরে আত্বগোপন করে শাজাহান। দীর্ঘ ৩০ বছর পলাতক আসামী শাজাহানকে ধরতে র‌্যাব ২০২১ সালের নভেম্বর মাস থেকে গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করে। এর ধারাবাহিকতায় শনিবার ২৩ জুলাই ভোরে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। র‌্যাব আরো জানায়, নলডাঙ্গা উপজেলার পশ্চিম সোনাপাতিল গ্রামের শাজাহান আলী এলাকার জনৈক্য ফিরোজা বেগমকে বিয়ে করার পর থেকে মৃত শাহাদত ও শাজাহান আলীর মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। ওই বিরোধের জেরে প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাত করে শাহাদতকে হত্যা করে বলে স্বীকার করেছে শাজাহান। মৃত শাহাদত আলী নলডাঙ্গা বাজারে মাইক ও ব্যাটারি সার্ভিসিং করার পাশাপাশি মাছের ব্যবসা করতেন। এই হত্যাকান্ড সংঘঠিত হওয়ার সময় মৃত শাহাদতের নাবালক তিন সন্তানের মধ্যে ছোট ছেলের বয়স ছিল ৭ মাস এবং সবার বড় মেয়ের বয়স ছিল ৫ বছর। মেজো ছেলের বয়স ছিল ৩ বছর। পরে গ্রেপ্তারকৃত শাজাহান আলীকে সদর থানার মাধ্যেমে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *