বঙ্গবন্ধু ৭২ সালে জনগনের পুষ্টিস্তর উন্নয়নের কথা বলেন

নাটোর অফিস॥
স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী এবং মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে মেধাবী জাতি গঠনে শিশুর জন্যে মাতৃদুগ্ধ খাওয়ানোর মাধ্যমে পুষ্টি নিশ্চিত করতে নাটোরে অবহিতকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকালে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে এই কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদের মহাপরিচালক ডাঃ মোঃ খলিলুর রহমান।
কর্মশালায় ডাঃ মোঃ খলিলুর রহমান বলেন, ১৯৭২ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের জনগনের পুষ্টি স্তর উন্নয়নের কথা বলেন। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে ১৯৭৪ সালে তিনি বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদ প্রতিষ্ঠা করেন। টেকসই উন্নয়নের অভীস্ট লক্ষ্য পূরণ এবং ২০৪১ সালের উন্নত দেশের সুফল পেতে জনগনের পুষ্টির উন্নয়ন সাধনের কোন বিকল্প নেই। এই বাস্তবতা অনুধাবন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘পুষ্টি উন্নয়নের বুনিয়াদ’ মূলমন্ত্রে ২০১৬ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত পুষ্টি দশক ঘোষণা করেছেন। গবেষণায় দেখা গেছে, জনগনের এক শতাংশ পুষ্টির উন্নয়ন করতে পারলে দ্রারিদ্রতা কমে পাঁচ শতাংশ পর্যন্ত। তাই মায়ের অন্তসত্তা সময় থেকে মাতৃদুগ্ধ খাওয়ানোর দুই বছরকে ‘সোনালী হাজার দিন’ বিবেচনা করে মায়ের যথাযথ পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সীদের পুষ্টি নিশ্চিত করে পুষ্টির স্তর উন্নয়ন করা সম্ভব।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে ডাঃ সোয়েব আহমেদ বলেন, শিশুর মানসিক বিকাশ ও শারিরিক বৃদ্ধিতে মায়ের দুধের কোন বিকল্প নেই। শাল দুধ শিশুর জীবনের প্রথম টিকা-যা শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। মায়ের দুধ জন্মের ছয় মাস শিশুর সকল প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগান দেয়। এই দুধ খাওয়ানো হলে মায়েদের ওভারিয়ান এবং ব্রেষ্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। এটি মায়ের জন্য জন্ম নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করে। সর্বোপরি মা ও শিশুর আতিœক বন্ধন দৃঢ় হয়। অন্যদিকে মাতৃদুগ্ধ সবচেয়ে নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য খাবারই শুধু নয় পরিবার ও দেশের অর্থনৈতিক সাশ্রয় ও চিকিৎসা ব্যয় হ্রাসে সাহায্য করে।
উল্লেখিত গুরুত্ব অনুধাবন করে বাংলাদেশ সরকার মাতৃদুগ্ধ বিকল্প আইন ২০১৩ ও বিধি ২০১৭ জারি করেছে। মাতৃদুগ্ধের বিকল্প শিশু খাদ্য বিপননে এই আইনের প্রচারণা এবং কার্যকরে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।
কর্মশালার উদ্বোধন করেন জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ নাসির উদ্দিন মাহমুদ। সিভিল সার্জন ডাঃ কাজী মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ নাদিম সারওয়ার, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ পরিচালক রওশন আরা বেগম, নাটোর সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ পরিতোষ কুমার রায়, প্রেসক্লাবের সভাপতি ফারাজী আহম্মদ রফিক বাবন প্রমুখ।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *