বড়লোক হওয়ার অভিপ্রায়ে চাচাতো বোনের ছেলেকে অপহরণ!

নাটোর অফিস॥
৪০ লাখ টাকা মুক্তিপনের টাকা নিয়ে বড়লোক হওয়ার অভিপ্রায়ে নিজের চাচাতো বোনের শিশু সন্তান আলহাজ প্রামানিককে (৮) অপহরণ করে নাটোরের বড়াইগ্রামের বাগডোব এলাকার যুবক কামরুল হাসান (২৫)। শেষতক পুলিশের হাতে ধরা খেতে হয় তাকে। অপহরণের একদিন পর পুলিশের হাতে অপরহরণকাজে ব্যবহৃত প্রাইভেট কার সহ ধরা খায় কামরুল। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে পুলিশ অভিযান চালিয়ে সোমবার রাতে ঢাকার বাড্ড-রামপুরা ওভার ব্রিজের নিচে ওই প্রাইভেট কার থেকে অসুস্থ্য অবস্থায় শিশু আলহাজকে। এর আগে সোমবার সকালে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার লক্ষ্মীকোল বাজার থেকে কামরুল ইসলামকে আটক করে পুলিশ। পরে তার দেয়া তথ্য মোতাবেক রাতে বগুড়া জেলার দুপচাঁচিয়া এলাকার জনৈক রুবেল হোসেন এর বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। সেখানে না পেয়ে রাতেই তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে অবস্থান জেনে অভিযান চালিয়ে ঢাকার বাড্ড-রামপুরা ওভার ব্রিজের নিচে ওই প্রাইভেট কার থেকে অসুস্থ্য অবস্থায় শিশু আলহাজকে উদ্ধার করে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে নাটোরের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা। এই প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় বাবা-মা সহ অপহৃত শিশু আলহাজ ও অপহরণকারী কামরুল ইসলামকে গণমাধ্যম কর্মীদের সামনে হাজির করা হয়।
পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, গত ২১ আগস্ট বেলা ১১ টার দিকে বাড়ীর পাশের রাস্তায় শিশু আলহাজ প্রামানিককে খেলা করতে রেখে বাজারে ভ্যান মেরামত করতে যায় তার বাবা। প্রায় ৩০ মিনিট পর বাজার থেকে ফিরে এসে সেখানে তার শিশু সন্তানকে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুজি শুরু করেন। অনেক খোঁজাকুজির পরও শিশু সন্তানকে না পেয়ে বড়াইগ্রাম থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেন শিশুটির বাবা। এরপর দিন একটি মোবাইল ফোন থেকে শিশুটির বাবার কাছে ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবী করেন অপহরণকারী। সেই মোবাইল ফোনের সুত্র ধরেই তথ্য প্রযুক্তির সহযোগীতায় পুলিশের একটি টিম অভিযানে নামে। শিশুটিকে কামরুল হাসান অপহরণ করে একটি প্রাইভেট কারে করে প্রথমে সিরাজগঞ্জ জেলার হাটিকুমরুল এলাকায় নিয়ে যায়। সেখান থেকে কারাগারে পরিচয় হওয়া বগুড়াার দুপচাচিয়ায় রুবেলের কাছে তাকে তুলে দেয়া হয়। কামরুলকে াাটকের পর তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে দুপচাচিয়ায় রুবেলের বাড়িতে অভিযান চালিয়েও শিশুটিকে পাওয়া যায়না। এসময় রুবেলের স্ত্রী আকলিমার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকায় অবস্থানরত রুবেলের শ্বাশুরির অবস্থান জেনে সেখানে অভিযান চালিয়ে অসুস্থ অবস্থায় অপহৃত আলহাজকে উদ্ধার করা হয়। এসময় পুলিশের অভিযানের বিষয়টি আগেই জানতে পেরে রুবেল আগেই কৌশলে পারিয়ে যায়। উদ্ধারের পর ঢাকা রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে আলহাজকে তার বাবা মায়ের হাতে তুলে দেয়া হয়।
পুলিশ সুপার লিটন সাহা আরো বলেন, রুবেলকে অচিরেই আটক করা হবে। রুবেল একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্য। পরিচয়ের সুত্র ধরে কামরুলও তাদের সাথে যুক্ত হয়েছে। কামরুল বড়লোক হওয়ার অভিপ্রায়ে তার চাচাতো বোনের শিশু সন্তানকে অপহরণ করে। সেই বোন ও তার স্বামীর প্রায় ১০ বিঘা জমি রয়েছে। ওই জমি দেখেই তাদের শিশু সন্তানকে অপহরণ করে ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করা হয়। কামরুল হাসান নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার লক্ষীকোল এলাকার মৃত জসিম উদ্দিনের ছেলে। অপহৃত আলহাজ প্রামানিক একউ উপজেলার বাকডোব গ্রামের অক্তার প্রামানিকের ছেলে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কামরুল হাসানকে আদালতে প্রেরন করা হবে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *