সড়ক নয় যেন পুকুর!

নাটোর অফিস ॥
নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের আলোচিত সিধুলী গ্রামের পাকা সড়ক ধীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় খানা খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া এই সড়কের দুপার সড়ক থেকে উঁচু। একারনে সামান্য বৃষ্টি হলে সড়কে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করে। বিশেষ করে সড়কের প্রায় ৬শ ফুট এলাকায় ন প্রচুর পানি জমে যায়। এসময় সড়কটি দেখতে একটি মিনি পুকুরের মত হয়। এই জলাবদ্ধার কারনে এই সড়ক দিয়ে সিধুরী গ্রামের কয়েকশ মানুষকে অসহনীয় দুভোর্গ পোহাতে হয়। অথচ ২০১৪ সালের ২০ অক্টোবর এই সিধুলী গ্রামের এক পরিবারের ৬ ভাইসহ ১৪ জন সড়ক দুর্ঘটার শিকার হয়ে নিহত হওয়ার ঘটনা ছিল সে সময়ে ভয়াবহ ও হৃদয়বিদারক ঘটনা। এই ঘটনার পর থেকে সিধুলী আলোচিত গ্রাম হিসেবে পরিচিত পায়। এবার নতুন করে আলোচনায় এসেছে বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার পর পরই ওই সিধুলী গ্রামে যেতে হলে পানি-কাদা মাড়িয়ে যেতে হচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলার শিধুলী বাজার হতে বাস্তুলতোলা যেতে সড়কের মাঝ বরাবর পানিতে পরিপুর্ন হয়ে গেছে। হঠাৎ কেউ দেখলে মনে হবে সড়ক নয় যেন মিনি পুকুর। ইউনিয়ন পরিষদ সহ বিভিন্ন দপ্তর ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে ধর্না দিয়েও কোন কাজ হয়নি। বর্তমানে এই সড়কে চলাচলরত যানবাহন চালক, যাত্রী, পথচারী ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদেরও দুর্ভোগের শেষ নেই। সড়কে বড়বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় প্রায়ই ঘটছে ছোট বড় দূর্ঘটনা।
জালাল উদ্দিন নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান,বর্ষা মৌসুমের প্রায় তিনমাস এই রাস্তায় পানি জমে থাকে। মানবসৃষ্টি এই জলাবদ্ধতায় নিরসনের জন্য এলাকাবাসি স্থানীয় প্রশাসনের কাছেও আবেদন জানিয়েছেন। এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি তাদের জমিতে মাটি ভরাট করলেও সড়কের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না রাখায় সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কে হাঁটু পানি জমে যায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের মাঝামাঝি অংশের আবু সামার বাড়ি থেকে মান্নান মহুরীর বাড়ি পর্যন্ত সড়কের প্রায় ৬০০ ফুট বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। সড়কে এখন খানাখন্দে ভরা। বৃষ্টির পানিতে মিনি পুকুরে পরিণত হওয়ায় এ সড়ক দিয়ে পথচারীদের চলাচল করতে নানা দুর্ভোগ সহ সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
শিধুলী বাজারের ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম, স্কুল শিক্ষক মকলেছুর রহমানসহ কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, ধারাবারিষা ইউনিয়নের শিধুলী-সোনাবাজু সড়কটি এই এলাকার সেতু বন্ধন।যে কারনে এ সড়কটি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষসহ যানবাহন চলাচল করে।
সড়কে চলাচলকারী যানবাহনের একাধিক চালক যাত্রীরা জানান, প্রতিদিন গাড়িতে যাতায়াত করতে ও গাড়ি চালাতে গিয়ে ঝাঁকুনিতে কোমর ব্যাথা হয়ে যায়। ঝাঁকুনিতে মাঝে মধ্যেই শিশু সহ সব বয়সীর অনেকেই পানিতে পরে যান। তারা জরুরি ভিত্তিতে পানি নিষ্কাশনের দাবি জানান।
ভ্যান চালক আব্দুর রহিম বলেন, দুর্ঘটনার ঝুঁকি মাথায় নিয়েই মিনি পুকুরে পরিণত হওয়া এ সড়ক দিয়ে আমাদের চলাচল করতে হয়। অনেক সময় সড়কের ভাঙা স্থানে গাড়ি উল্টে যায়।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন মাষ্টার বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করে। খানাখন্দে ভরা এ সড়কটি পানি নিষ্কাশনসহ সংস্কার করার জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী বিভাগের কাছে মৌখিকভাবে আবেদন জানিয়েছি। এছাড়া আমি আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ৮০ ফুট পাইপ দিয়েছিলাম পানি নিষ্কাশনের জন্য। কিন্ত এলাকার কেউ পানি বেরোনোর জায়গা দেয়নি।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *