নাটোরে রাস্তায় মৃতদেহ, ভয়ে এগিয়ে এলোনা কেউ!

নাটোর অফিস॥
নাটোর রেল স্টেশনের প্রবেশ পথে পড়ে ছিলো অজ্ঞাত অপ্রকৃতিস্থ এক ব্যক্তির মৃতদেহ। তবে করোনা ভাইরাসের ভয়ে সৎকার তো দূরের কথা, কেউ দেখতেও এগিয়ে আসেনি। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করার পর তারাও করোনা আক্রান্ত হওয়ার আশংকায় দায়িত্ব এড়িয়ে যায়। সবশেষ বিষয়টি জানতে পেরে এগিয়ে আসেন নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী। তার নির্দেশে ওই মৃতদেহ উদ্ধার করে দাফনের ব্যবস্থা করছে পৌর কর্তৃপক্ষ।

নাটোর রেল স্টেশনের স্টেশন মাস্টার অশোক কুমার চক্রবর্তী জানান, সকাল ১১টার দিকে স্টেশনের প্রবেশ পথে অজ্ঞাত ওই ব্যক্তির লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। তিনি বিষয়টি জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করেন। কিন্তু করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হতে পারে এ আশংকায় সবাই দায়িত্ব এড়িয়ে যায়।

এদিকে, নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী জলি বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে খবর পাওয়ামাত্র নাটোর জেলা পৌর সার্ভিস এসোসিয়শনের সভাপতি জুলফিকুল হায়দার ও নাটোর পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত সচিব মীর্জা সালাউদ্দীনকে নাটোর রেল স্টেশনের প্রবেশ পথ থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে দাফনের ব্যবস্থা করার জন্য বলেন। মৃত ব্যক্তি মুসলিম হলেও পৌর মেয়র নিজে লাশটি গাড়ীখানা গোরস্থানে নিয়ে যায় এবংদাফন কাফনের ব্যবস্থা করেন। ২নং ওয়ার্ডের পৌর কাউন্সিলর ফরহাদ হোসেন করোনার ভয় না করে নিজে লাশ ধোয়া, জানাযা এবং দাফনের ব্যবস্থা করেন।

পৌর মেয়র উমা চৌধুরী বলেন, দরিদ্র বা ভাসমান কোন মানুষ মারা গেলে একজন মানুষ হিসেবে তাকে দাফন কাফন করা হচ্ছে সামাজিক দায়বদ্ধতা। যে ব্যক্তিটি মারা গেছে সেও তো মানুষ। কোন বাবা মায়ের সন্তান।মানুষটার দাফনের ব্যাপারে রাষ্ট্রযন্ত্র বা প্রজাতন্ত্রের কর্মীদের অনীহা সত্যিই পীড়াদায়ক।

নাটোর কর্মরত বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাংবাদিক নাসিম উদ্দীন জানান, মৃত ব্যক্তিটিকে সকলে করোনা আক্রান্ত ভেবেছিল। কয়েকজন স্বেচ্ছসেবক নিয়ে আমি ওই ব্যক্তিটিকে গতরাতে খাবার ও লুঙ্গি দিয়েছিলাম। তবে আমার কাছে মনে হয়েছে লোকটি করোনায় আক্রান্ত নয়, অপ্রকৃতিস্থ ও দীর্ঘদিন ধরে খাবার না পেয়ে অসুস্থ ছিলেন।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *